‘সরকার নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে, আর এই বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা আড়াল করে জনগণের দৃষ্টি ভিন্নদিকে নেওয়ার কৌশল হিসেবেই সরকারের মন্ত্রীরা নানান বিতর্কিত বক্তব্য দিচ্ছে।’
শনিবার (১৬ মার্চ) এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (বাংলাদেশ ন্যাপ) চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এমন অভিযোগ করেন।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ‘বাজার সিন্ডিকেট ও মজুতদারির সঙ্গে বিএনপির কোনো যোগসাজশ আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে’ বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তারা এমন অভিযোগ করেন।
তারা বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতে বিএনপিসহ বিরোধীদলগুলোর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর অভিযোগ তুলছেন সরকারের মন্ত্রীরা। বাজার সিন্ডিকেট, মজুতদার এবং সরকারের লোকেরা একাকার হয়ে গেছে।
সরকারের একাধিক মন্ত্রী সিন্ডিকেটের অস্তিত্ব স্বীকার করলেও জনগণকে সুরক্ষা দিতে তারা কঠোর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি। বরং তাদের বিভিন্ন সময়ের বক্তব্যে ধারণা করা যায়, এই কারসাজিতে সরকারই অসহায় হয়ে পড়েছে।’
নেতারা বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের পাগলো ঘোড়া’ নিয়ন্ত্রণে সরকারের চরম ব্যর্থতা আড়াল করার অপকৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়। দীর্ঘসময় ক্ষমতায় থাকা সরকারের একজন সিনিয়র মন্ত্রীর এ ধরনের বক্তব্যই প্রমাণ করে বাজার নিয়ন্ত্রণে তারা কতটা ব্যর্থ।
সরকারের মন্ত্রী হয়তো ভুলে গেছেন গত সরকারের শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এর পূর্বে সিন্ডিকেটের বিষয়ে মুখ খুলে নিজ দলের ভেতরে তোপের মুখে পড়েছিলেন। ‘মন্ত্রীদের ভেতরেই সিন্ডিকেট আছে। শেয়ার কেলেঙ্কারিতে জড়িতরা মন্ত্রী’- এমন এই মন্তব্য করেছিলেন সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী।’’
তারা বলেন, ‘সিন্ডিকেটের কাছে সরকারের এই জিম্মি দশা আরও বেশি হতাশায় ফেলেছে জনগণকে। এ নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ে এত আলোচনা হলেও এই চক্র থেকে নাগরিকদের মুক্ত করতে সরকারের কার্যকর তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা দেখতে চায় জনগণ। ব্যর্থতার দায় এড়ানোর অপকৌশল করে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরানো যাবে না। জনগণ কার্যকর পদক্ষেপ দেখতে চায়।’
জেবেল রহমান ও মোস্তফা ভুইয়া বলেন, ‘বাজার নজরদারির নামে খুচরা আর বড়জোর পাইকারি বাজারে লোক দেখানো অভিযান করলেই দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। প্রকৃত অর্থে সিন্ডিকেটের সঙ্গে যে আমদানিকারক, শিল্পপতিরা জড়িত তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তা না হলে সরকারের মন্ত্রীরা যতই বিতর্কিত বক্তব্য দেন না কেন বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না।
এটি দিবালোকের মতো স্পষ্ট যে, উঁচু পর্যায়ের সিন্ডিকেটে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালীরা থাকায় তাদের থামানো যাচ্ছে না। সরকারও এ কারণে, সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য থামাতে অনিয়মগুলো খতিয়ে দেখার প্রয়োজন মনে করছে না।’
তারা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে মন্ত্রিসভা থেকে শুরু করে প্রতিটি স্তরে প্রভাব বিস্তার করছে ব্যবসায়ীরা। তাই বাজার ব্যবস্থাপনার যেকোনো সিদ্ধান্ত ব্যবসা আর মুনাফাই প্রাধান্য পাচ্ছে। যারা এ ধরনের কারসাজির সঙ্গে যুক্ত, তাদের কারও বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত কঠোর আইন প্রয়োগ করা হয়নি, শাস্তির আওতায় আনা হয়নি। সরকারের সদিচ্ছার অভাব থাকার কারণেই এর কোনো সমাধান হচ্ছে না বলেই দেশবাসী মনে করে।’
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ