বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। রোববার রাতভর এ সংঘর্ষে কমপক্ষে ছয়জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
জানা যায়, রোববার রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে প্রথম দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এরপর রাত ৩টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ চলে।
আহতরা হলেন মহিউদ্দিন আহম্মেদ সিফাত, তাহমিদ জামান নাভিদ, রুম্মান হোসেন, আতাউর রাফি, মাহামুদুল হাসান তমাল ও গণিত বিভাগের আবিদ হোসেন।
অন্যদিকে সংঘর্ষকে হামলা দাবি করে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে সোমবার বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের ছাত্র আল সামাদ শান্ত ও আইন বিভাগের মাহামুদুল হাসান তমাল গ্রুপের সাথে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র আতাউর রাফি ও বাংলা বিভাগের তাহমিদ হাসান নাভিদ গ্রুপের দ্বন্দ্ব চলছিল।
এদের মধ্যে শান্ত ও তমাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা মহিউদ্দিন আহম্মেদ সিফাতের অনুসারী এবং রাফি ও নাভিদ ছাত্রলীগ নেতা রিয়াজ মোল্লার অনুসারী। সিফাত ও রিয়াজের মধ্যে কিছু দিন পূর্বে সংঘর্ষ হয়েছিল। এতে গুরুতর আহত হয়ে সিফাত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন দীর্ঘ দিন।
সিফাত ক্যাম্পাসে ফিরে পুনরায় তার সমর্থকদের দিয়ে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করায় সংঘর্ষ বাঁধে রিয়াজ মোল্লার অনুসারী রাফি-নাভিদ গ্রুপের সাথে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা আতাউর রাফি বলেন, দুই থেকে এক দিন আগে রুপাতলীতে বহিরাগতদের সাথে একটু ঝামেলা হয়েছিল আমাদের। রোববার এটা মীমাংসার কথা ছিল। তবে বহিরাগতরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে রাত ১০টার দিকে আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমাদের ওপর দফায় দফায় হামলায় আমাদের তিনজন আহত হয়েছে। এই হামলায় বহিরাগতদের সাথে যোগ দেয় আল সামাদ শান্ত ও মাহামুদুল হাসান তমালের অনুসারীরা।
২০১৮-১৯ বর্ষের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা শরীফুল ইসলাম বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই আল সামাদ শান্তর নেতৃত্বে বহিরাগতরা নাভিদ, রুম্মান ও আতাউরের ওপর হামলা চালায়। এতে তারা তিনজনই আহত হয়েছেন। আমরা শান্তর বিচার দাবিতে ক্যাম্পাসের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছি।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে আল সামাদ শান্তর সাথে কথা বলার চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি। তার মুঠোফোনের নম্বরটিতে কল করে বন্ধ পাওয়া গেছে।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) প্রক্টর খোরশেদ আলম বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সপ্তম ও অষ্টম ব্যাচের দু’গ্রুপ ছাত্রদের মধ্যে মারামারি হয়েছে। তাদেরকে বলে দিয়েছি, ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা করলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের দক্ষিণ বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ফজলুল করিম বলেন, ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের মধ্যে কয়েক দফায় সংঘর্ষের খবর শুনেছি। পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে এবং ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়ন করা হয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ