শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:০৯ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুলসহ ৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র প্রকাশের দাবিতে লিফলেট বিতরণ এবার কারও পক্ষ নিয়ে কাজ করলে অসুবিধা হবে : কর্মকর্তাদের সিইসি অল্প কিছুদিনের মধ্যে দেশে ফিরবেন তারেক রহমান: মির্জা ফখরুল ইসলামী ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে টাকা চুরি শেখ হাসিনার দুর্নীতি খুঁজে বের করতে টাস্ক ফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত ডিএমপির ১২ ডিসিকে বদলি ‘বৃহত্তর ইসরাইলের’ মানচিত্র প্রকাশ, আরব দেশগুলোর কড়া প্রতিবাদ বিমানবন্দরে রক্তাক্ত সেই প্রবাসীকে জরিমানা, হতে পারে জেলও ৩০ জুনের আগেই মহার্ঘভাতা ঘোষণা মানিকগঞ্জে ডিসির রুমের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান দাবি মানার আল্টিমেটাম দিয়ে ‌‌শাহবাগ ছাড়লেন চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা শরীয়তপুরে থানা থেকে ওসির মরদেহ উদ্ধার নিক্সন ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবে ৩ হাজার ১৬২ কোটি টাকা লেনদেন শহীদ মিনারের পর শাহবাগ অবরোধ বিডিআর সদস্যের স্বজনদের জেনেভা ক্যাম্পের আলোচিত সন্ত্রাসী চুয়া সেলিম গ্রেপ্তার মা‌র্কি‌নিদের হয়ে ঢাকায় বিশেষ দা‌য়িত্ব সামলাবেন ট্র্যাসি জ্যাকবসন বিসিএসে বাদ পড়া ২২৭ জনের বেশিরভাগই চাকরিতে যোগ দিতে পারবেন রাশিয়ায় বিমানবাহিনীর তেলের ডিপোয় ইউক্রেনের হামলা হাইভোল্টেজ ম্যাচে টস জিতে বরিশালকে ব্যাটিংয়ে পাঠালো রংপুর

ফিরে দেখা : মজিদ উল হক ও অতিষ্ঠ মাগুরাবাসি

বিশিষ্ট সাংবাদিক শাহীন রহমান
  • আপলোড সময় বৃহস্পতিবার, ২১ অক্টোবর, ২০২১
  • ৩০৬ বার পড়া হয়েছে

দিন তারিখ কোনটাই সুনির্দিষ্ট ভাবে মনে নাই, সম্ভবত ৯৬ সাল। আমি তখন নিউজ এজেন্সি নিউজ মিডিয়াতে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক শ্রদ্ধেয় নইম নিজাম এটার মালিক, সম্পাদক ছিলেন। তখনকার সময়ে ইত্তেফাক, জনকণ্ঠ, আজকের কাগজ, বাংলাবাজার, দৈনিক রুপালি, জনতা, আল আমিনসহ পপুলার মেক্সিমাম দৈনিক কাগজ ছিল আমাদের নিউজের গ্রাহক। প্রতিদিনই আমাদের কোনও না আইটেম হিট। আমরা সবসময়য়েই আলোচনায়।

বাসে করে আরিচা রোড দিয়ে ঢাকা থেকে খুলনায় যাচ্ছি । পাশের সিটে মাগুরার এক ভদ্রলোক বসা । গল্পে গল্পে আমাদের পথ এগুচ্ছে । কথায় কথায় মাগুরার রাজনীতি নিয়ে কথা উঠলো । ভদ্রলোক একজন ব্যাবসায়ি । উনি জানেন না আমি সাংবাদিকতা করি। উনি বললেন, মাগুরার অবস্থা খুব খারাপ । মন্ত্রী জেনারেল (অব) মজিদ উল হক ও তার ভাইদের অত্যাচারে মাগুরাবাসি অতিষ্ঠ । আমি তার কথার গুরুত্ব দিলাম না বাট কথায় কথায় তার দোকানের এড্রেস নিলাম, অন্য আলাপে চলে গেলাম।

খুলনায় পৌঁছে ল্যান্ড ফোন দিয়ে আমার অফিস থেকে নইম ভাইকে ফোন করলাম। চীফ রিপোর্টার আরিফকে ফোন করলাম। কাজ পাগল নইম ভাই উৎসাহ দিলেন। বাট পর্যাপ্ত তথ্য প্রমান নিয়ে নিউজ দিতে বললেন। পরদিনই মাগুরায় চলে গেলাম। সোজা গিয়ে সেই ব্যাবসায়ীর দোকানে হাজির।

আমায় দেখে ভীষণ খুশি হলেন, চা সিঙ্গাড়া খাচ্ছি, খেতে খেতে আমি আমার মাগুরায় যাবার উদ্দেশ্য বললাম । মন্ত্রী মজিদ-উল-হক কে নিয়ে লিখবো শুনেই উনি দোকানের সাটার বন্ধ করে দিলেন। আমায় তার সাথে মটর সাইকেলে উঠতে বললেন, নিয়ে গেলেন শহরের বাইরে। সোজা নিয়ে একটা ফাকা জায়গায় দাঁড়ালেন ।

খুব বিরক্তির সাথে বললেন, ভাই আপনার কি মাথা খারাপ? চলে যান মাগুরা থেকে, এ নিউজ হয়েছে, মজিদ-উল-হকের লোকজন জানতে পারলে আমায় মেরে ফেলবে, আনি অভয় দিলাম, অনেক কাকুতি মিনতি করার পর উনি বিএনপির মজিদ-উল-হক বিরোধী গ্রুপের এক লোকের নাম্বার দিলেন, হাত পা ধরে ওয়াদা করালেন, যেন আমি তার কথা না বলি, যাই হোক, টানা দুদিন থেকে নিউজ নিয়ে ঢাকায় ফিরলাম, নইম ভাই দেখে নিউজ ছাড়লেন। আমায় উৎসাহ দিলেন। নিউজ ছাড়লেন। নিউজ ক্লিক করলো । ৫ কলামে পরদিন আজকের কাগজে ‘ মাগুরা এখন হক পরিবারের নিয়ন্ত্রণে’ এই শিরোনামে রীতিমতো লিড। আজকের কাগজ তখন অসম্ভব জনপ্রিয় একটি পত্রিকা।

নিউজ প্রকাশ হতেই পরদিন আরিচা ঘাট পার হতে না হতেই হকারদের উপর হামলা হল, মজিদ-উল-হকের লোকজন আজকের কাগজ ছিনিয়ে নিলো। তার টার্গেট ছিল, আজকের কাগজ যেনও পদ্মার ওপারে না যেতে পারে? বিমানে করে খুলনাতে আজকের কাগজসহ অন্যান্য সব পত্রিকাই যায়, সেটা বোধ করি ওটা তাদের হিসাবে ছিল না, বিশেস ব্যাবস্থায় মাগুরাতে আজকের কাগজ গেল, সারা জেলাতো বটেই খুলনা বিভাগ তথা সারা দেশেই হৈ চৈ পড়ে গেল। খুলনার সিনিয়র সাংবাদিক, দৈনিক পূর্বাঞ্চল পত্রিকায় কর্মরত গোলাম মোস্তফা সিন্দাইনি সাহেবের বাড়ি মাগুরায়, উনি আমায় রাতে ফোন করে জানালেন, মিনিমাম ১০ হাজার ফটোকপি হয়েছে, পরদিন আবার নিউজ বের হল ইনকিলাব ও জনকণ্ঠে । মন্ত্রীর ভাই মঞ্জুর সিদ্দিকি তখন মাগুরা পৌরসভার চেয়ারম্যান। তারও দুর্নীতির নিউজ ছিল।

আমিই প্রথম, মজিল-উল-হকের বিরুদ্ধে লিখেছিলাম। মাগুরা থেকে অসংখ্য ফোন পেয়েছিলাম, মাগুরার লোকজন আমায় সংবর্ধনা দিতে চেয়েছে অনেকবার, আমিই যাইনি। তাছাড়া সেই মুহূর্তে মাগুরা আমার জন্য নিরাপদ ছিল না।

মাগুরায় আমি এখনও জীবন্ত ইতিহাস। আমার জীবনে সেরা রিপোর্ট ছিল ওটি। কারন ওই সময়ে মজিল-উল-হক ছিলেন প্রচণ্ড প্রভাবশালী মন্ত্রী । বেগম জিয়ার কিচেন কেবিনেটের মেম্বার, মজিল-উল-হক নিজেও নিউজ মিডিয়া অফিসে ফোন করে ধমক ধামকি দিয়েছেন, আমায় দেখে নিবেন বলেছিলেন।

আমার সেই ব্যাবসায়ি বন্ধু আজো আমার সাথে যোগাযোগ রেখেছেন, তার ভাষায় আমার মতো বড় সাংবাদিক উনি জীবনে দেখেননি, তার কাজ কর্ম দেখে আমি হাসি, উনি ঘুরে ফিরে আজও বলেন, ভাই আপনি লিখলেন কেমন করে ? সাহস আছে আপনার।

সুত্র: বিশিষ্ট সাংবাদিক শাহীন রহমান এর ফেইসবুক ওয়াল থেকে নেওয়া

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৫ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com