সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার (২৪ মে) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় শেয়ারবাজারে বড় ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে মূল্যসূচক। তবে লেনদেনে কিছুটা ধীরগতি দেখা যাচ্ছে।
প্রথম ঘণ্টার লেনদেনে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ১৩০ পয়েন্টের ওপরে বেড়ে গেছে। আর লেনদেনে হয়েছে প্রায় একশো কোটি টাকা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পাশাপাশি অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। সেইসঙ্গে বড় উত্থান হয়েছে মূল্যসূচকের।
এর আগে আট কার্যদিবসের টানা দরপতনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমে ৫৫৫ পয়েন্ট পড়ে গেলে মার্জিন ঋণের হার বাড়িয়ে নতুন নির্দেশনা জারি করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
বিএসইসি থেকে মার্জিন ঋণের হার বাড়ানোর পাশাপাশি রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, সিনিয়র অর্থসচিব আব্দুর রউফ তালুকদার এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহকে নিয়ে বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বৈঠকে শেয়ারবাজার ভালো করতে দিকনির্দেশনা দেন অর্থমন্ত্রী। করোনাভাইরাসের অভিঘাত থেকে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া চলমান থাকা অবস্থায় নতুন করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধাবস্থা চলায় সারা বিশ্বে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ অর্থনৈতিক মন্দা দেখা হচ্ছে। এর বিরূপ প্রভাব দেশের শেয়ারবাজারসহ অর্থনীতির কোনো খাতে না পড়ে সেই বিষয়ও খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেন অর্থমন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রী ও বিএসইসির এমন পদক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ১১৮ পয়েন্ট বাড়ে। আর সোমবার লেনদেন শেষ হওয়ার পর যোগ্য নিয়োগকারীদের আইপিও আবেদনের ক্ষেত্রে নতুন সিদ্ধান্ত নেয় পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
আইপিও আবেদনের ক্ষেত্রে পেনশন ফান্ড এবং স্বীকৃত প্রভিডেন্ট ফান্ড ও গ্র্যাচুইটি ফান্ড বাদে অন্যান্য যোগ্য বিনিয়োগকারীদের আগে কাট অব ডেটে পুঁজিবাজারে কমপক্ষে এক কোটি টাকা বিনিয়োগ থাকার বাধ্যবাধকতা ছিল। এখন সেটাকে বাড়িয়ে ৩ কোটি টাকা করা হয়েছে।
একইভাবে পেনশন ফান্ড এবং স্বীকৃত প্রভিডেন্ট ফান্ড ও গ্র্যাচুইটি ফান্ডের ক্ষেত্রে আগে কমপক্ষে ৫০ লাখ টাকা বিনিয়োগ থাকার বাধ্যবাধকতা ছিল। সেটাকে বাড়িয়ে এখন এক কোটি ৫০ লাখ টাকা করা হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে শেয়ারবাজার খুলতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ১০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে লেনদেনের ১০ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে।
অবশ্য এরপর সূচকের ঊর্ধ্বমুখী হতে খুব বেশি সময় নেয়নি এবং লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বাড়তে থাকে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সকাল ১১টা ৬ মিনিটে ডিএসইর প্রধান সূচক ৩৬ পয়েন্ট বেড়ে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক বেড়েছে ৯ পয়েন্ট। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে।
এ সময় পর্যন্ত ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৮১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৫টির। আর ৪১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৭৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৭১ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হয়েছে ৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ১৩৪ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৯টির, কমেছে ২৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২০টির।
বাংলা৭১নিউজ/এমকে