বিশ্বকাপের ড্রেস রিহার্সাল কী বলা যায় এই সিরিজকে? আর মাত্র তিনমাস পর ধর্মশালায় নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ওই ম্যাচের আগে বাংলাদেশের মাটিতে সেই আফগানদের বিপক্ষেই তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। নিঃসন্দেহে দুই দলের জন্যই খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সিরিজ হতে যাচ্ছে এটা।
বাংলাদেশ সময় আজ দুপুর ২টায় চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুরু হবে ম্যাচটি। সরাসরি সম্প্রচার করবে টি-স্পোর্টস এবং গাজী টিভি।
বিশ্বকাপের আগে একে অপরকে টেস্ট করার দারুণ এক সুযোগ এই সিরিজ। যদিও ভারত-পাকিস্তানের দ্বৈরথের মত বাংলাদেশ-আফগানিস্তান দ্বৈরথ এতটা স্বীকৃত নয়। এছাড়া মাঠের লড়াইয়ে দুই দলের মুখোমুখি হওয়ার ইতিহাসও বড়জোর ১৩-১৪ বছরের।
এই সময়ের মধ্যে কিন্তু কেউ কারো চেয়ে এগিয়ে নয় কিংবা পিছিয়েও নয়। ক্রিকেটের তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ২২ বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান। দুই দলেরই জয়-পরাজয়ের পরিসংখ্যান সমান-সমান। অর্থ্যাৎ দুই দলই জিতেছে ১১টি করে ম্যাচ।
ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশ এবং আফহানিস্তান মুখোমুখি হয়েছে ১১বার। এর মধ্যে ৭টি ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ, ৪টি জিতেছে আফগানিস্তান। টেস্টে মুখোমুখি দু’বার। এখানেও ড্র। অর্থ্যাৎ ১টি করে জয় দুই দলেরই। বাকি ৯বার মুখোমুখি হয়েছে টি-টোয়েন্টিতে। যেখানে এগিয়ে আফগানরা। তারা জয় পেয়েছে ৬ ম্যাচে। বাংলাদেশ জয় পেয়েছে কেবল ৩টিতে।
ওয়ানডে র্যাংকিংয়েও যে দুই দলের মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য তাও নয়। বাংলাদেশ সাত নম্বরে এবং আফগানিস্তান রয়েছে ৯ নম্বরে। দুই দলের খেলোয়াড়রাও একে অপরকে চেনেন খুব ভালো করে। শুধু আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নয়, নানা ফ্রাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি টু্র্নামেন্টেও একে অপরের সঙ্গে দেখা হয়। সতীর্থ হিসেবে খেলেন কিংবা প্রতিপক্ষও থাকেন সে সব আসরে।
সুতরাং, চট্টগ্রামে যে আজ বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান মুখোমুখি হতে যাচ্ছে, তাতে কেউ এগিয়ে নেই আবার কেউ পিছিয়েও নেই। শক্তির বিচারে দুই দলই সমান অবস্থানে।
যদিও জুনের ১৭ তারিখ শেষ হওয়া একমাত্র টেস্টে বাংলাদেশ বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছিলো আফগানিস্তানকে। ৫৪৬ রানের সেই বিশাল জয়টি ছিল টেস্ট ইতিহাসেই তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়ের রেকর্ড। বাংলাদেশের হয়ে তো সর্বোচ্চই। মাত্র চারদিনের মাথায় এই জয়ের ফলে যেভাবে ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে বাংলাদেশ দল, সেটাই আফগানিস্তানের জন্য বড় হুমকি।
আবার এতবড় একটি পরাজয়ের পর আফগানদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে ওয়ানডে সিরিজে ফিরে আসার। এটাই তাদের বড় অনুপ্রেরণা। আবার টেস্টে ছিলো তাদের অনভিজ্ঞ একটি দল।
ওয়ানডেতে ফিরে এসেছেন রশিদ খান, মোহাম্মদ নবি, মুজিবুর রহমান, ফজল হক ফারুকিদের মত ক্রিকেটাররা। রয়েছেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ, নজিবুল্লাহ জাদরানদের মত মারকুটে ব্যাটাররা। সুতরাং, টেস্টের চেয়ে ভিন্নতর একটি দল নিয়েই মাঠে নামতে যাচ্ছে আফগানিস্তান।
অন্যদিকে বাংলাদেশ দলেও আছে পরিবর্তন। টেস্ট না খেললেও ওয়ানডে দলে ফিরে এসেছেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। বাঁ-হাতি কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। সাকিবের ব্যাটিংয়ের সঙ্গে বাঁ-হাতি অর্থোডক্স স্পিন খুবই কার্যকরি এবং প্রতিপক্ষের জন্য ভয়ঙ্কর।
যেমনটা প্রতিপক্ষের জন্য ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন আফগান রশিদ খান। যে কারণে মনে করা হচ্ছে, বাংলাদেশ-আফগানিস্তান সিরিজে দুই দলের লড়াইয়ের অভ্যন্তরে দুন্ধুমার লড়াই গড়ে উঠতে পারে সাকিব আল হাসান এবং রশিদ খানের মধ্যে। এই লড়াইয়ে কে জিতবে? আপাতত সে জন্যই অপেক্ষা দর্শকদের।
বাংলা৭১নিউজ/এসএস