বাংলা৭১নিউজ, জাহাঙ্গীর ভূইয়া, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : িপাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-পথে ঈদে ঘুরমুখো মানুষ ও যানবাহনের ব্যাপক চাপ পড়েছে। গতকাল শুক্রবার দুপুর থেকে ফেরি পারাপারের জন্য ছোট-বড় বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের বাড়তি চাপ পড়ায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে মালিকদের দ্বন্দ্বের কারণে আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ২ঘন্টা স্পিডবোট চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হয়। দুপুরের পর থেকে আরিচা ও পাটুরিয়া লঞ্চ ঘাটে যাত্রীদের চাপ ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে থাকে। ফলে এ দু’টি ঘাটে যাত্রী জটেরও সৃষ্টি হয়। যানবাহনে ও ঘাটে আটকা পড়ে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করে যাত্রীরা সীমাহীন দুর্ভোগ পোহায়।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, গতকাল শুক্রবার দুপুরের যানবাহনের দীর্ঘ সারি ক্রমেই বেড়ে পাটুরিয়া টার্মিনাল ছাড়িয়ে মহাসড়কের ২ থেকে ৩কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করে। পর্যায় ক্রমে গাড়ি পারাপার হলেও পেছনের দিকে নতুন নতুন গাড়ি লাইনে যুক্ত হয়ে যানজট বাড়তে থাকে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে এসব যানবাহন ফেরি পার হচ্ছে। এতে ভুগান্তিতে পড়েছেন ঈদে ঘরমুখো হাজারো যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকরা।
এদিকে আরিচা ও পাটুরিয়া লঞ্চ ঘাটে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। ভিড় ঠেলে যাত্রীরা লঞ্চ,ফেরি, স্পিডবোট ও ইঞ্চিন চালিত নৌকায় নদী পার হচ্ছেন। স্পিডবোট মালিকদের দ্বন্দ্বের কারণে বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা থেকে আরিচা-কাজিরহাট নৌ-রুটে যাত্রী পারাপার বন্ধ থাকে। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে পুণ:রায় চালু হলে দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত আবার স্পিডবোট বন্ধ হয়। এতে যাত্রীদের দুর্ভোগ আরো বেড়ে যায়। শুক্রবার দুপুরে নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বদরুল হাসান লিটন কর্তৃক পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত আরিচা ও পাটুরিয়া ঘাটে অভিযান চালায়। এসময় জীবন রক্ষাকারি বয়া না থাকায় , অতিরিক্ত যাত্রী বহণ ও বেশী ভাড়া আদায়ের অভিযোগে কয়েকটি লঞ্চ ও স্পিডবোটের বিরুদ্ধে এবং ফেরিতে খাবারের দাম বেশী নেওয়ায় ৭টি মামলা ও নগদ ৩৭হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে রতন নামের স্পিডবোট টিকিট কাউন্টার স্টাফকে ৫হাজার টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
পাটুরিয়া ফেরি ঘাটের আগে চৌরাস্তা থেকে প্রায় ২কিলোমিটার সড়কে দীর্ঘ সারিতে যানবাহন পারের অপেক্ষায় রয়েছে। চৌরাস্তা থেকে বাইপাস সড়কে ছোট যানবাহন ৫ নম্বর ফেরি ঘাটে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের টেপড়া থেকে বাইবাস সড়ক হয়ে ৫নং ঘাট পর্যন্ত ছোট যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। এ সড়কের কয়ড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় ২কিলোমিটার ছোট যানবাহনের দীর্ঘ সাড়ি পড়ে। আর মূল সড়কে অস্থায়ী ডিভাইডার দিয়ে ফেরি পারের জন্য যানবাহন এবং পৃথক লেনে লঞ্চ পারের যাত্রীবাহী যানবাহন পাটুরিয়া ঘাটে প্রবেশ করছে। লঞ্চ ঘাটে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় পড়ায় অনেক যাত্রীরা ফেরিতে পার হচ্ছেন। লঞ্চগুলোতে দ্বিগুনেরও বেশী যাত্রী বহন করতে দেখা যায়।
বিআইডব্লিউটিএ’র ট্রাফিক ইন্সপেক্টর ফরিদুল ইসলাম জানান, শুক্রবার দুপুর থেকে আরিচা-কাজির হাট এবং পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ রুটে যাত্রীদের চাপ বাড়তে শুরু করে। এ নৌ-রুটে মোট ৩৫টি লঞ্চ চলাচল করছে।
বিআইডব্লিউটিসি’র ডিজিএম আজমল হোসেন জানান, ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের সেবা দিতে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-রুটে ৯টি রো রো, ৬টি ইউটিলিটি (মাঝারি) ও ৩টি কে-টাইপ (ছোট) ফেরি যানবাহন পারাপার করছে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস