বাংলা৭১নিউজ, নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ শহরের বাবুরাইলে একই পরিবারের পাঁচজনকে গলা কেটে হত্যার দায়ে আসামি মাহফুজকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। মাহফুজ সম্পর্কে ওই পরিবারের ভাগনে।
আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ হোসনে আরা আকতারের আদালতে এই আদেশ দেওয়া হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওয়াজেদ আলী বলেন, আদালতের রায়ে মামি তাসলিমা বেগমকে হত্যার দায়ে মাহফুজকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। আরেক রায়ে ওই পরিবারের লামিয়া, শান্ত, সুমাইয়া ও মোশারফ হোসেনকে হত্যার দায়ের মাহফুজকে পৃথকভাবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় এবং পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তিনি আরও জানান, এই মামলায় মোট ৩০ জন সাক্ষীর মধ্যে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, বাদীসহ ২৩ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় মামলার বাদী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এই রায়ে খুশি।’ তিনি রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানান।
নিহত তাসলিমা বেগমের মা মোর্শেদা বেগম বলেন, ‘আমাদের পুরো পরিবারকে শেষ করে দিয়েছে মাহফুজ। দ্রুত ওর রায় কার্যকর করা হলে আমরা খুশি হই।’
আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেছেন, ‘রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি হাতে পাওয়ার পর আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব।’
এর আগে গত ৩০ জুলাই এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক শেষে আদালত রায় ঘোষণার তারিখ ধার্য করেন।
২০১৬ সালের ১৫ জানুয়ারি রাতে ‘আশেক আলী ভিলা’ নামের একটি বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে একই পরিবারের পাঁচজনকে নৃশংসভাবে গলা কেটে হত্যা করেন ভাগনে মাহফুজ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাড়ির ফ্ল্যাটের তালা ভেঙে তাঁদের লাশ উদ্ধার করে। নিহত ব্যক্তিরা হলেন মাহফুজের মামার স্ত্রী তাসলিমা আক্তার (৪০), তাঁর ছেলে শান্ত (১০), মেয়ে সুমাইয়া (৫), তাসলিমার ভাই মোরশেদুল (২৫) ও তাঁর জা লামিয়া (২৫)।
এ ঘটনায় তাসলিমার স্বামী ও মাহফুজের মামা শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ভাগনে মাহফুজ, ঢাকার কলাবাগানের ঋণদাতা নাজমা ও শাহজাহানের নাম উল্লেখ করে নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। ওই দিন রাতেই মামলাটি জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরদিন গ্রেপ্তার করা হয় শফিকুল ইসলামের ভাগনে মাহফুজকে। ২১ জানুয়ারি আদালতে মাহফুজ হত্যার দায় স্বীকার করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ২০১৬ সালের ৬ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল খায়ের ভাগনে মাহফুজকে আসামি করে অন্যদের অব্যাহতি দিয়ে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন। এই মামলায় তদন্ত কর্মকর্তাসহ ২৩ আসামি আদালতে সাক্ষ্য দেন।
বাংলা৭১নিউজ/সিএইস