বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: শিক্ষানীতি ও শিক্ষা আইন ২০১৬ বাতিল না করলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার হুমকি দিয়েছে কওমী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাকের নেতৃবৃন্দ।
মঙ্গলবার রাজধানীতে বেফাক মিলনায়তনে এক উলামা মাশায়েখ সম্মেলনে তারা এ হুমকি দেন।
সম্মেলনে বেফাক নেতৃবৃন্দ বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশ বাংলাদেশের জাতীয় শিক্ষানীতি ও খসড়া শিক্ষা আইন ইসলামী ভাবধারামুক্ত করে তৈরী করা হয়েছে। এই শিক্ষানীতিমালা ও আইন প্রনয়নে এ দেশের কওমী মাদরাসাসমূহের প্রতিনিধিত্বকারী সর্ববৃহৎ জাতীয় শিক্ষা বোর্ড বেফাকের কোন প্রতিনিধি বা কোন বিজ্ঞ আলেমকে রাখা হয়নি।
শিক্ষানীতির ১ ও ২ নং পৃষ্ঠায় শিক্ষার ৩০টি উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য উল্লেখ করা হলেও এর মধ্যে শতকরা বিরানব্বই জন নাগরিকের এ দেশে ইসলামী ভাবাদর্শ সম্পন্ন প্রজন্ম গড়ে তোলার কোন উল্লেখ নেই। খসড়া শিক্ষা আইনে এমন কিছু ধারা রাখা হয়েছে যা দ্বারা এদেশে নতুন নতুন দ্বীনি মাদরাসা-মক্তব কায়েমের পথ প্রসারিত হওয়ার পরিবর্তে সংকুচিত হেেব। এটা ওহীর শিক্ষাব্যবস্থার উপর কুঠারাঘাত।
তারা বলেন, প্রণীত জাতীয় শিক্ষানীতি ও খসড়া শিক্ষা আইন ২০১৬ অবিলম্বে বাতিল করে পরিবর্তিত পাঠ্যপুস্তক পুনর্বিন্যাস করতে হবে। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
বেফাকের সহ-সভাপতি মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমীর সভাপতিত্বে এবং মাওলানা মাহফূযুল হক ও মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলামের পরিচালনায় সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বেফাক মহাসচিব মাওলানা আবদুল জব্বার জাহানাবাদী, মাওলানা আশরাফ আলী, সহ-সভাপতি মুফতী মুহাম্মাদ ওয়াক্কাস, সহ-সভাপতি মাওলানা মোস্তফা আজাদ, হাটহাজারীর বিশিষ্ট মুহাদ্দিস মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী, মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী, মাওলানা আব্দুল হামিদ, মাওলানা জোবায়ের আহমাদ চৌধুরী, মুফতী আবূ ইউসুফ, মাওলানা নূরুল ইসলাম, মুফতী মীযানুর রহমান, মাওলনা সাজেদুর রহমান প্রমুখ।
উলামা সম্মেলনে ৯ দফা দাবি পেশ করা হয়। দাবি সমূহ হল:
১। জাতীয় শিক্ষানীতি ’২০১০ এবং তদালোকে প্রণীত শিক্ষা আইন’ ২০১৬ এর খসড়া অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
২। নূরাণী মক্তব, হাফেজিয়া মাদরাসা ও কওমী মাদরাসার স্থাপন ও পরিচালনাকে নিবন্ধনের বাধ্যবাধকতার আওতামুক্ত রাখতে হবে এবং বেফাকের নিবন্ধনই যথেষ্ট মর্মে ঘোষণা দিতে হবে।
৩। প্রাথমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠ্যপুস্তকে চক্রান্তমূলকভাবে বাদ দেয়া ইসলামী ভাবধারার গল্প, রচনা ও কবিতাসমূহ পুনঃ অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।
৪। পরিকল্পিতভাবে যুক্ত করে দেওয়া হিন্দুত্ববাদী ও ইসলাম বিদ্বেষী কবিতা, গল্প ও রচনাবলী শিক্ষা সিলেবাস থেকে বাদ দিতে হবে।
৫। শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তকে ৯২ভাগ জনগণের চিন্তা, বিশ্বাস, ভাবনা, জীবনবোধ ও সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে হবে।
৬। সর্বস্তরের শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচিতে ইসলামী প্রাধান্য এবং অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ইসলামের বুনিয়াদী শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে।
৭। এ বছর অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষায় ঢাকা ও চট্টগ্রাম বোর্ডের প্রশ্নপত্রে ইসলাম ধর্ম অবমাননাকর প্রশ্ন দেওয়ার সাথে জড়িতদেরকে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
৮। যুযোপযোগী করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার নামে কওমী মাদরাসার স্বকীয়তা ও স্বাতন্ত্রতা বিলুপ্ত হয় এমন যে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে।
৯। পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন কার্যক্রমে দক্ষ ও বিজ্ঞ আলেমগণের পরামর্শ নিতে হবে।
বাংলা৭১নিউজ/আরএ