অর্থ আত্মসাতের মামলায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ট্রাস্টি রেহানা রহমানের জামিন বহাল রাখলেও এম এ কাশেমকে দেওয়া হাইকোর্টের জামিন স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
আজ রবিবার এ দুজনের জামিন স্থগিত চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের আবেদনের শুনানির পর এ আদেশ দেন চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম।
এ মামলায় গত ২২ মে আগাম জামিন আবেদন খারিজ করে তাদের পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিলেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। এর পরদিন তাদের নিম্ন আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সেই থেকে তারা কারাবন্দি।
পরে বিচারিক আদালতে জামিন চেয়ে ব্যর্থ হলে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন তারা। সে আবেদনের শুনানির পর আদালত তাদের জামিন প্রশ্নে রুল জারি করেন। কেন তাদের জামিন দেওয়া হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে। সে রুলটি নিষ্পত্তি করে গত ১০ নভেম্বর হাইকোর্ট তাদের জামিন দেন। দেশের বাইরে এবং অনুমতি ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারবেন না, এমন শর্তে তাদের জামিন দেওয়া হয়।
আজ সকালে তাদের সে জামিন স্থগিত চেয়ে দুদক আবেদন করলে দুপুরে রেহানা রহমানের জামিন বহাল রেখে এম এ কাশেমের জামিন স্থগিত করেন চেম্বার আদালত।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। সাবেক দুই ট্রাস্টির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মুরাদ রেজা, শাহ মঞ্জুরুল হক ও সাঈদ আহমেদ রাজা।
তবে রেহানা রহমানের জামিন স্থগিত না করায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করার কথা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা বলেন, “রেহানা রহমানের জামিন স্থগিতের আবেদনে ‘নো অর্ডার’ দিয়েছেন চেম্বার আদালত। আর এম এ কাশেমের জামিন স্থগিত করে দুদকের আবেদনটি আগামী ২১ নভেম্বর আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন। জামিন বহাল থাকায় রেহানা রহমানের মুক্তিতে বাধা নেই। ”
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের জমি কেনা বাবদ অতিরিক্ত ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয় দেখিয়ে তা আত্মসাতের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে গত ৫ মে মামলা করেন দুদকের উপপরিচালক মো. ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী।
আসামিরা হলেন তৎকালীন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদ, বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য এম এ কাশেম, বেনজীর আহমেদ, রেহানা রহমান, মোহাম্মদ শাহজাহান এবং আশালয় হাউজিং ডেভেলপারস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিন মো. হিলালী।
মামলায় বলা হয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে পাশ কাটিয়ে ট্রাস্টি বোর্ডের কয়েকজন সদস্যের অনুমোদন/সম্মতির মাধ্যমে ক্যাম্পাস উন্নয়নের নামে ৯০৯৬ দশমিক ৮৮ ডেসিমেল জমির দাম ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ ১৩ হাজার ৪৯৭ টাকা বেশি দেখিয়ে তা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের টাকা আত্মসাতের জন্য কম দামে জমি কিনলেও বেশি দাম দেখিয়ে প্রথমে বিক্রেতাকে টাকা দেন। পরে বিক্রেতার কাছ থেকে নিজেদের লোক দিয়ে নগদ চেকের মাধ্যমে টাকা তুলে আবার নিজেদের নামে এফডিআর করেন। পরে এফডিআর ভেঙে টাকা আত্মসাৎ করেন। এই প্রক্রিয়ায় টাকা আত্মসাৎ করে তারা অর্থপাচারের অপরাধ করেছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ