বাংলা৭১নিউজ, চট্টগ্রাম: বাংলাদেশের দিকে খেয়ে আসছে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’। ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূল থেকে কিছুটা উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে সরে এই ঘূর্ণিঝড় ক্রমেই বাংলাদেশ উপকূলের দিকে অগ্রসর হওয়ায় উপকূলীয় এলাকার মানুষের মাঝে আতঙ্হক বাড়ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কতা কেন্দ্রের বিশেষ বুলেটিনে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে। চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শেখ হাসানুর রশিদ বাংলা৭১নিউজকে বিয়ষটি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর ও মংলা এবং পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৫ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাগর উত্তাল রয়েছে। আবহাওয়া অধিদফত রজানিয়েছে, অতি ভারি বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের পাহাড়ী এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে।
সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে বলেও আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।
গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি অব্যাহত আছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে সিলেটে ১১৪ মিলিমিটার। আজ শুক্রবার সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালক (প্রশাসন) জাফর আলম বলেন, ‘বন্দরের জরুরী সভায় ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’ মোকাবেলা কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
কর্ণফূলী নদীতে অবস্থানরত সকল লাইটারেজ জাহাজকে কর্ণফূলি নদীর মোহনায় এবং বন্দরে অবন্থানরত সকল জাহাজকে বর্হিনোঙ্গরে নোঙ্গর করতে বলা হয়েছে।
এছাড়া বন্দরের সকল ধরনের যন্ত্রপাতি সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
‘রোয়ানু’ মোকাবিলায় প্রস্তুতি, ছুটি বাতিল
বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’ মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশের পূর্বাঞ্চলে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও দক্ষিণাঞ্চলে মংলা উপজেলা প্রশাসন। দুর্যোগ মোকাবিলায় চট্টগ্রাম ও মংলা উভয় প্রশাসন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করেছে এবং যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।
পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম ছাড়াও উপজেলা পর্যায়ে একাধিক কন্টোল রুম খোলা রাখা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
বাগেরহাটে ১৬ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর মোকাবিলায় বাগেরহাটে ১৬টি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. সফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে রাতে সাংবাদিকদের জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে জেলায় ১৬টি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।
এ ছাড়া সরকারি, আধা-সরকারি সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত কর্মস্থল ত্যাগ না করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/কেএস