বুধবার, ০৫ মার্চ ২০২৫, ১২:০৫ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
পানিবণ্টন চুক্তি বাস্তবায়ন হচ্ছে, ফারাক্কা পরিদর্শন শেষে আবুল হোসেন জামায়াত নেতাদের মারধর, ৪ নেতাকে শোকজ করল বিএনপি পুলিশের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে বড় রদ বদল পুতুলের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধের তথ্য লুকানোর চেষ্টা! চট্টগ্রাম বন্দরে দুই বিদেশি জাহাজের সংঘর্ষ অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ফাইনালে ভারত ট্রাম্পের নতুন শুল্কে আরও তীব্র চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ ৭ মাস পর শহীদ আসিফের মরদেহ পেলো পরিবার ৮৬ লাখ টাকা পাচার করেছেন সাদিক অ্যাগ্রোর ইমরান: সিআইডি বাংলাদেশ সম্পর্কে জাতিসংঘের প্রতিবেদন জেনেভায় উপস্থাপন করবেন তুর্ক তিন দফা কমানোর পর ফের বাড়লো সোনার দাম সার্বিয়ার সংসদে গ্রেনেড নিক্ষেপ, এমপির স্ট্রোক ‘এনআইডি সেবা অবশ্যই ইসির অধীনে থাকা উচিত’ ফেনীতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটের ওপর হামলার চেষ্টা এক ন্যাশনাল সিস্টেমেই হবে ভ্যাটের যাবতীয় কাজ : এনবিআর চেয়ারম্যান ভারতীয় ভিসা নিয়ে কোনো সুখবর নেই চার বছর চেষ্টার পর আকাশে উড়লো জুলহাসের বিমান ঢাকায় সাঁড়াশি অভিযানে ২৪ ঘণ্টায় গ্রেফতার ১৫৫ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক শান্তি পদক নীতিমালা বাতিল শিক্ষায় নতুন উপদেষ্টা নিয়োগের কারণ ওয়াহিদউদ্দিনের ‘অপারগতা’

ধীরগতিতে চলছে হাওর ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ, দুশ্চিন্তায় কৃষক

নেত্রকোণা প্রতিনিধি:
  • আপলোড সময় মঙ্গলবার, ৪ মার্চ, ২০২৫
  • ১০ বার পড়া হয়েছে

নেত্রকোণার হাওরাঞ্চলের বোরো ফসলের ওপর জেলার ১ লাখ ৮০ হাজার কৃষক নির্ভরশীল। হাওরাঞ্চলে এক ফসলি বোরো ফসলকে আগাম বন্যা থেকে রক্ষায় বাঁধের কাজ বাস্তবায়ন করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ‘কাবিটা’ প্রকল্পের আওতায় এই কাজের অনিয়ম ও ধীর গতির কারণে এ বছর নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ। ফলে ফসলহানির শঙ্কায় দিন কাটছে হাওর পারের কৃষকদের। রয়েছে নিম্নমানের কাজের অভিযোগ।

নেত্রকোণার মদন, মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুরীসহ ৭টি উপজেলার হাওরাঞ্চলের ৪২ হাজার হেক্টর জমির ফসল আগাম বন্যা থেকে রক্ষায় ডুবন্ত বাঁধ রয়েছে ৩৬৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে ২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর ১৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয় বরাদ্দে ১৯১টি পিআইসি (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) প্রকল্পের মাধ্যমে ১৪৬ দশমিক ১২ কিলোমিটার বাঁধের সংস্কার কাজে হাত দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড।

সরেজমিনে মদন ও খালিয়াজুরী উপজেলার বেশ কিছু বেড়িবাঁধ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রকল্পের কাজ এখনো শেষ হয়নি। পাশাপাশি প্রকল্পে ধীরগতি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন কৃষকেরা। তারা বলছেন, বাঁধ সংস্কারের বেশিরভাগ স্থানেই কাজ চলছে ধীর গতিতে।

এতে করে তারা আগাম বন্যায় একমাত্র বোরো ফসল হানির দুঃশ্চিন্তায় ভুগছেন। অনেকগুলো প্রকল্প এলাকার বাঁধগুলোতে কিছু স্থান রেখে রেখে মাটি ফেলা হয়েছে। অনেক জায়গায় গত বছরের তুলনায় এ বছর মাটিও কম ফেলা হচ্ছে।

খালিয়াজুরী উপজেলার আসাদপুর গ্রামের কৃষক মো. নুর মোহাম্মদ তালুকদার বলেন, আমাদের বেড়িবাঁধে এখন কাজ করার সময় চলে যাচ্ছে কিন্তু এখানে এক টুকরো মাটিও ফেলা হয়নি। আর বিভিন্ন এলাকায় যে মাটি ফেলা হয়েছে, সেখানে কিছু কিছু জায়গায় মাটি ফেলেছে, কিছু কিছু জায়গায় মাটি ফেলেনি।

এতে করে আমাদের চলাচলেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। আমরা এই বেড়িবাঁধ দিয়েই চলাফেরা করি। সময় মতো কাজ হলে আমাদের চলাচলের সুবিধা হয়, ফসল নিরাপদে থাকে। আমরা সাধারণ কৃষক মানুষ, আমরা এই কৃষি কাজের ওপর নির্ভরশীল। বেড়িবাঁধ কাজটা সময় মতো হলে আমরা নিরাপদে থাকতে পারব। না হলে একটা দুর্গতির মধ্যে পড়তে হবে।

ক্ষোভ নিয়ে আব্দুল জব্বার বলেন, এবার বেড়িবাঁধের কাজ নিয়ে খুব ঢিলেমি করছে। কদিন পর দেখা যাবে তাড়াহুড়া করে একটু মাটি দিয়ে কোনোরকম কাজ শেষ করে ফেলবে। পানি হলে দেখা যাবে অল্প চাপেই বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে। বাঁধ যদি ভেঙে যায় তাহলে তো আমাদের ফসল সব শেষ। পানি সব জমি খেয়ে ফেলবে, তখন আমরা ওই পানিতে হাত ধুয়ে বাড়িতে এসে বসে থাকব।

তবে বাঁধের সংস্কার কাজের মাঠ পর্যায়ের পিআইসি কমিটির সদস্যরা বলছেন, সঠিক নিয়মেই কাজ চলছে এবং তা সময়মতো শেষ হবে। কিন্তু কাজের অগ্রগতি নিয়ে বেশিরভাগ কমিটি সঠিক তথ্য দিতে পারছেন না।

শুধু মুখেই বলছেন সিংহভাগ কাজ শেষ হয়েছে। ক্যামেরার সামনে তারা কথা বলতে রাজি না। তবে তাদের সঙ্গে কথা বলে এতটুকু নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, অনেকেই কোনো রকমে কাজ শেষ করে দায় সারতে চাইছেন। 

বাঁধে কাজ করা জগন্নাথপুর গ্রামের এক শ্রমিকের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, আমাদের কাজ শেষ করতে আরো এক সপ্তাহের ওপর সময় লাগতে পারে। মাত্র মাটি কাটার কাজ শেষ হয়েছে, এখন মাটি সমান করার কাজ বাকি আছে।

মাটি সমান হবে, তারপর ঘাস লাগাতে হবে। শ্রমিক সংকটের কারণে কাজ শুরু করতে দেরি হয়েছে, তাই কাজের অগ্রগতি কম। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারলেও খুব দ্রুত আমাদের কাজ শেষ করে ফেলব।

নেত্রকোণা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারওয়ার জাহান জানিয়েছেন, এরই মধ্যে ৯২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ সরকার নির্ধারিত সময়ে শেষ না হলেও, মার্চের ১০ তারিখের মধ্যে শেষ করা হবে। 

কাজের অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাবিটা প্রকল্পের যে ডিজাইন রয়েছে আমরা সে অনুযায়ী কাজ বাস্তবায়ন করে থাকি। এখানে কেউ যদি তার ব্যক্তিগত মতামত হিসেবে কাজের মান নিয়ে বলে থাকেন সেটি গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা মাঠ পর্যায়ে এ বিষয়গুলো যাচাই বাছাই করে থাকি।

প্রকল্প বা কাজ বাস্তবায়নের দুটি বিষয় থাকে। একটি হচ্ছে আর্থিক অনিয়ম এবং কাজের ক্ষেত্রে অনিয়ম। আমরা এরকম অনিয়মের বিষয়ে যদি জানতে পারি, তাহলে জেলা কমিটিতে বিষয়টি উপস্থাপন করি। পাশাপাশি আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আছেন তাদেরকে জানাই এবং আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি।

আমাদের কাজ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যদি কোনো ধরনের অনিয়ম থাকে তাহলে ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি। সে ক্ষেত্রে আমি বলব এই ধরনের অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে, আমাদেরকে জানালে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

পাশাপাশি বাঁধের উচ্চতার যে বিষয়টি আছে সেটি আসলে ডিজাইনের ওপর নির্ভর করে। এখনও কাজ চলমান রয়েছে তাই উচ্চতার বিষয়টি এখনই কিছু বলা যাবে না। কাজ শেষ হওয়ার পর এই বিষয়টি আমরা যাচাই বাছাই করব।

বাংলা৭১নিউজ/এসএকে

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৫ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com