বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে, এদেশের পরীক্ষিত একটি সংগঠন। দেশের স্বার্থ কারো কাছে বিকিয়ে দিতে কখনো মিটমিট করে নাই, নীরবতা পালন করে নাই, বরং সোচ্চার হয়ে বাঘের গর্জন করেছে। আমরা দেশের স্বাধীনতা, দেশের স্বার্থ কারো কাছে বিক্রি করবো না।
এজন্য আওয়ামী লীগের এতো ক্ষোভ, সেই থেকে দলটির নেতৃবৃন্দকে দুনিয়া থেকে বিদায় করা, তাদের সহকর্মীকে গুম করা, তাদের সবগুলো অফিস সিলগালা করা, তাদের নিবন্ধন বাতিল করা এবং শেষে দিশেহারা হয়ে দলটাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সব করেছে, তারা আমাদের শত হাজার কর্মীকে খুন করেছেন। হাজার হাজার কর্মীকে পঙ্গু বানিয়েছেন। অসংখ্য কর্মীকে গুম করেছেন। তারা নারীদেরকে গুম করেছেন, পুরুষদেরকে গুম করেছেন, শিশুদেরকে গুম করেছন, তারা বৃদ্ধদেরকে গুম করেছেন।’
আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে গাইবান্ধা ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জেলা শাখার কর্মী সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আগামীর বাংলাদেশ হবে সাম্যের, বাংলাদেশ হবে বৈষম্যহীন। সকল ক্ষেত্র থেকে বৈষম্য দূর করতে হবে, যেখানে সংখ্যাগুরু, সংখ্যালঘুর ধর্মীয় ভেদাভেদ থাকবে না। সব মানুষই দেশের নাগরিক হিসেবে পরিচিত হবে।’
জুলাইয়ের আন্দোলনকে ঘিরে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আপনাদেরই পাশের জেলার সন্তান, ডানা মেলে বুক পেতে বলেছিলো, ‘বুকের ভিতরে তুমুল ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর’। আবু সাঈদরা স্লোগান দিয়েছিলো উই ওয়ান্ট জাস্টিজ, আমরা একটি বৈষম্যহীন সমাজ চাই, আমরা একটা মানবিক সমাজ চাই, আমরা গর্বের বাংলাদেশ চাই, আমরা একটা অহংকারের বাংলাদেশ চাই। এই বাংলাদেশ গড়া হবে শহীদের রক্তের প্রতি সম্মান দেখানোর বাস্তব নমুনা ইনশাল্লাহ।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে অসংখ্য মায়ের বুক খালি হয়েছে। আয়না ঘরে বন্দী রেখে জঙ্গিবাদের নাটক করা হয়েছে। অসংখ্য মানুষকে বিনা বিচারে হত্যা করা হয়েছে, গুম করা হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের নামে বিনা ভোটে এমপিদের পাশ করানো হয়েছে, নিশি রাতে ভোট হয়েছে এবং ২০২৪ সালে আমি আর ডামির নির্বাচন হয়েছে। পতিত ফ্যাসিবাদী সরকার আমাদের দেশ প্রেমিক বিডিআর বাহিনীকে ধ্বংস করে সীমান্ত চৌকিদার বিজিবি করেছে।
জেলা জামায়াতের আমির মো. আব্দুল করিমের সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন ও অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, জেলা জামায়াতের সাবেক আমির ডা. আব্দুর রহীম সরকার, সিনিয়র নায়েবে আমির বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়ারেছ সরকার, জেলা সেক্রেটারি জহুরুল হক সরকার, সহকারী সেক্রেটারি সৈয়দ রোকনুজ্জামান, পলাশবাড়ীর পুরোহিত মিলন ভট্টাচার্য।
এর আগে, সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে মিছিল নিয়ে সম্মেলনে যোগ দেয় হাজারো নেতাকর্মী।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ