সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৩০ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
এবার আত্মসমর্পণ করলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান মুশফিকের বিদায়ের পর মুমিনুলের ফিফটি ডা. জোবাইদা রহমানের সাজা এক বছর স্থগিত কন্যাশিশুদের চোখে দেখতে হবে আগামীর নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন আজকের কন্যাশিশুর মধ্যেই সুপ্তভাবে বিরাজ করছে আগামী দিনের আদর্শ মা ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মনসুর ডিবি হেফাজতে দ্রুত সংস্কার ও নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি ড. ইউনূসের দুই নারী কর্মকর্তাকে কুপিয়ে সোনালী ব্যাংকের ৭ লাখ টাকা ছিনতাই বাংলাদেশ সফরে আসছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আইনের শাসনের বিকল্প নেই ময়মনসিংহ মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতি ঢাকায় গ্রেফতার প্রাণী রক্ষায় আরও মানবিক হতে হবে: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা রূপালী ব্যাংকে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস পালন শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক পর্ষদের ৩৮৪তম সভা অনুষ্ঠিত সাবেক মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার মারা গেছেন রেললাইনে উঠে গেছে তিস্তার পানি, দুর্ভোগ চরমে: লালমনিরহাট ধর্ষণ মামলায় আসামি হলেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ টি-টোয়েন্টিতে নতুন মুখ ২টি, ফিরলেন মিরাজ চট্টগ্রাম বন্দরে বিনিয়োগে আগ্রহী সংযুক্ত আরব আমিরাত সমবায় ব্যাংকের লকার থেকে ১২ হাজার ভরি সোনা গায়েব

দুশ্চিন্তায় বরেন্দ্রের কৃষক

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় বৃহস্পতিবার, ৩ মে, ২০১৮
  • ৩৩২ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ, মোঃ হায়দার আলী, গোদাগাড়ী (রাজশাহী) প্রতিনিধি: এ বছর টানা বৃষ্টি, ঝড়সহ  বৈরি আবহাওয়ার কারণে বোরো ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকরা। পাঁকা ধান ঘরে তোলার সময় দফায় দফায় শিলা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষক।  বিভিন্ন স্থানের  ধান বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যেতে শুরু করেছে। আবার অনেকেই ধান কাটার পরেও মাড়াইয়ের কাজ করতে পারছেন না, ফলে ওই সব ধানে চারা গাছ গজিয়ে ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে কৃষক পথে বসা ছাড়া উপায় থাকবে না।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, জেলায় এ বছর ৬৬ হাজার ২১২ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে চাষ হয়েছে আরও ৩ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে। বিপুল পরিমাণ এই জমি থেকে চার লাখ ১১ হাজার ৭৭ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। চালের হিসাবে তা ২ লাখ ৭৪ হাজার ৫১ মেট্রিক টন। তবে কৃষকরা বলছেন, অতিরিক্ত জমিতে ধান চাষ হলেও উৎপাদনে ভাটা পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর কারণ বৈরি আবহাওয়া।

গত ৫ ও ১২ এপ্রিল ধানের শিষ ফোটার সময় পর পর দুই দফা শিলা বৃষ্টির কারণে এমনিতেই কাঙ্খিত ফলন না হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। তার ওপর গত সোমবার ভোরের কালবৈশাখী ঝরিয়ে দিয়েছে শীষের পাঁকা ধান। বুধবার দুপুরে এবং বৃহস্পতিবার সকালে তুমুল ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছিল রাজশাহীতে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃষ্টি এবং ভাটি থেকে আসা পানিতে জেলার তানোর উপজেলার শিবনদী ও বিলকুমারী বিলের পানি বেড়ে তলিয়ে গেছে কয়েকশো হেক্টর বোরো ধানের জমি। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন বিলের কৃষকরা।

তানোরের শিবনদী সংলগ্ন চৌবাড়িয়া, কামারগাঁ, তালন্দ, গোকুল, শিতলীপাড়া, কুঠিপাড়া, আমশো, বুরুজ, কালীগঞ্জ ও চাঁন্দুড়িয়া এলাকার অনেক ধান ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শিবনদী বিলেরধানের জমি পানির নিচে। শ্রমিক সংকটের কারণে বিলের উঁচু এলাকার জমির ধানও কাটতে পারছেন না কৃষকরা। আর পানিতে তলিয়ে যাওয়া পাকা ধান কচুরিপানায় ঘিরে ফেলেছে।

কোনো কোনো কৃষককে কোমর পানিতে নেমে ধান কাটতে দেখা গেছে। আবার কেউ কেউ নৌকাযোগে ধান কেটে বাঁধে নিয়ে এসে মাড়াই করছেন। আবার যেসব কৃষকের ধান পুরোপুরি তলিয়ে গেছে তারা ফসলের আশা ছেড়ে দিয়েছেন। সোনার ফসল হারিয়ে তারা এখন দিশেহারা। স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ডিএফএম এমদাদুল ইসলাম বলেন, পানিতে বোরো ধান তলিয়ে যাচ্ছে। তারপরও কৃষকরা সেসব ধান কাটার চেষ্টা করছেন।

বিঘাপ্রতি ১৫ থেকে ১৮ মণ ফলন হচ্ছে। তবে পানি না থাকলে ২০ থেকে ২২ মণ ফলন হতো। তানোরের কুঠিপাড়া গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ইদ্রিস আলী জানান, চার বিঘা জমিতে তিনি জিরাশাইল ধান চাষ করেছিলেন। দুই বিঘা জমির ধান কাটতে পেরেছেন। বাকি ক্ষেত তলিয়ে গেছে। সেসব জমির ধান পাওয়ার আশা নেই।

জেলার গোদাগাড়ী উপজেলা টানা ঝড় বৃষ্টিতে রোরা ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রবল বৃষ্টির কারণে বিল, কান্দর ও নচিু স্থানের ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। কাটা ধান গুলি বৃষ্টির করণে মাড়াই করতে না পারায় ধান থেকে চারা গাছ বেরিয়ে পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কসাইপাড়া বিল, বিল পাতিকলা, দূর্গদাহ, বিলচরাই সব চেয়ে বেশী ক্ষতি গ্রস্থ হয়েছে। ভাজনপুর এলাকার কৃষক দুলু দেব বলেন,  ধান কাটার কামলার দারুন সংকট দেখা দিয়েছে। ৪শ থেকে সাড়ে ৪শ টাকা দিয়েও কামলা পাওয়া যাচ্ছে না। কৃষক ৪ আড়ির জীনের পরিবর্তে ৬/৭ আড়ি জীন দিয়ে ধান কাটতে বাধ্য হচ্ছে।

এ দিকে  বাগমারা ও দুর্গাপুরসহ অন্য উপজেলার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত দুই বছর ধরে তারা অসময়ের বন্যা আর বৃষ্টির কারণে ফসল ঘরে তুলতে পারছেন না।

টানা ফসলহারা নিঃস্ব কৃষক বুক ভরা আশা নিয়েই এবার অগ্রহায়ণ মাসের শুরু থেকে বোরো ধানের বীজ বপন শুরু করেছিলেন। শীষেও ধান এসেছিল ভালো। তা দেখে হাসি ফুটেছিল কৃষকের মুখে। কিন্তু এখন বৈরি আবহাওয়া কেড়ে নিয়েছে তাদের মুখের হাসি।তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, গত সোমবার শিলাবৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকার ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শিবনদীতে বোরো ধানের জমি তলিয়ে গেছে।

সেসব জমির ধান ভিজে যাওয়ায় ভালো দাম পাচ্ছেন না চাষিরা। ফলে তারা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। আমরা আগামীতে স্বল্পমেয়াদী জাতের ধান আবাদে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করবো। কৃষকরা এতে সাড়া দিলে তারা আগাম ধান কেটে ঘরে তুলতে পারবেন। তবে বৈরি আবহাওয়ায় ফলনে খুব একটা ঘাটতি হবে না বলে দাবি করেছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দেব দুলাল ঢালি।

তিনি বলেন, শুধু রাজশাহী জেলা নয়, বরেন্দ্র অঞ্চলের নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জেও বৃষ্টি হয়েছে। এতে ফলন পাঁচ থেকে ১০ ভাগ কমতে পারে। তবে এতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কোনো ঘাটতি থাকবে না। আমরা কৃষকদের খড়ের আশা ছেড়ে দিয়ে দ্রুত ধান কেটে নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।

বাংলা৭১নিউজ/জেএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com