বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের বিধান রেখে মন্ত্রিসভা যে আইনের অনুমোদন দিয়েছে তাতে দুর্নীতিবাজদের গ্রেপ্তারে কোনো সমস্যা হবে না বলে মনে করছে দুদক।
সংস্থাটির চেয়ারম্যান বলেছেন, ‘দুদক কারও অনুমতি নিয়ে কাজ করবে না।’
‘সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮’ এর খসড়া প্রসঙ্গে সোমবার সকালে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘এই আইন পাস হলে দুদক ঠুঁটো জগন্নাথ হবে না, গ্রেপ্তারও থেমে থাকবে না। প্রয়োজনের সময় গ্রেপ্তার করা হবে এবং দুর্নীতিবাজদের গ্রেপ্তারে কোনো সমস্যা হবে না।’
গত ২০ আগস্ট মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। সেই আইনের একটি অংশে বলা হয়, ‘সব ধরনের ফৌজদারি অপরাধের জন্য ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক অভিযোগপত্র গৃহীত হওয়ার আগে গ্রেপ্তার করতে হলে সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিতে হবে। চার্জশিট হওয়ার পরে অ্যারেস্ট করার জন্য অনুমতি লাগবে না।’
এই আইন পাস হলে দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে দুদকের কোনো অসুবিধা হবে কি না এমন প্রশ্নে সংস্থাটির চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, স্বাধীন কমিশন যতদিন আছে ততদিন দুর্নীতি করে পার পাওয়া এত সহজ না।‘
‘কেউ বলে দুদক নখ-দন্তহীন বাঘ, ওই জমানায় আর ফিয়ে আসবে না। দুদক একটি স্বাধীন সংস্থা, দুদকের আইন আছে। যতক্ষণ পযন্ত দুদককে পরাধীন সংস্থা করা হচ্ছে ততদিন কিন্তু স্বাধীন থাকবে। দুদক কারো অনুমতি নিয়ে কাজ করবে না, এটা আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই।’
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘পত্রিকায় দেখেছি, আইনটা পাস হতে এখনো সময় লাগবে। পার্লামেন্টে যাবে, বিতর্ক হবে। তবে আমার প্রতিক্রিয়া হলো-কোনো আইনই দুর্নীতিবাজদের রক্ষা করার জন্য হয় না।‘
‘আইনটা যেভাবেই পাস হোক না কেন যেসব অসৎ এবং দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা রয়েছে তাদের কিন্তু উচ্ছ্বসিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। তাদেরকে আইনের আওতায় আনা দুর্নীতি দমন কমিশনের কোনো অসুবিধা হবে না।’
তবে সৎ কর্মচারীদের সুরক্ষা দেওয়ায় আইনের প্রয়োজন আছে বলেও মনে কনে দুদক প্রধান। বলেন, ‘সৎ কর্মকর্তা-কর্মচারী আছে তাদের সুরক্ষার প্রয়োজন। যে আইনই হোক না কেন, জনগণের ইচ্ছা ও কল্যাণেই আইন হয়, জনকল্যাণেই আইন হবে আমি এটা প্রত্যাশা করি।’
ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘প্রস্তাবিত আইনটা দুর্নীতিবাজদের সুরক্ষার জন্য আইন না, বরং এটাকে আমি দেখি সৎ কর্মচারীদের সুরক্ষার আইন। তবে গ্রেপ্তারের বিষয়টি সম্পর্কে এই আইনের কী আছে আমি জানি না। পত্রিকায় একেক রকম দেখেছি।’
আইন চূড়ান্তভাবে পাসের আগে এ ব্যাপারে দুদক সরকারের সঙ্গে কথা বলবে কি না এ ব্যাপারে জানতে চাইলে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা এ ব্যাপারে সরকারের সঙ্গে কোনো কথা বলতে রাজি নই। কথা বলার প্রয়োজনও নেই। আমরা মনে করি সরকার দুর্নীতিবাজদের সুরক্ষার জন্য কোনো আইন তৈরি করবে না।’ সূত্র: ঢাকাটাইমস।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস