বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় সন্তানসহ নারীকে অপহরণ মামলার আসামিরা বাদীর পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে সন্তানসহ ওই নারী তাঁর পরিবার নিয়ে ভয়ে এলাকা ছেড়ে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা সূত্র জানায়, ওই নারীকে (১৯) দুই মাসের সন্তানসহ অপহরণের পর মুক্তিপণের দাবি করেন মো. জুয়েল (২৫) নামের এক ব্যক্তি। এ ঘটনায় ওই নারীর বাবা জুয়েলকে প্রধান আসামি করে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। মামলার পর আসামিদের অব্যাহত প্রাণনাশের হুমকির ভয়ে তাঁরা পাশের জেলায় আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। গতকাল রোববার পিরোজপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ওই নারী এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ওই নারী বলেন, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময় জুয়েল পথেঘাটে তাঁকে উত্ত্যক্ত করতেন। দুই বছর আগে তাঁর বিয়ে হয়। এরপর তিনি স্বামীর সঙ্গে ঢাকায় চলে যান। চার মাস আগে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। দুই মাস আগে তাঁর মেয়েসন্তান হয়। ৫ এপ্রিল অসুস্থ শিশুকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। বেলা ১১টার দিকে জুয়েল ১০-১১ জনকে নিয়ে সন্তানসহ তাঁকে অপহরণ করে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান। এরপর অজ্ঞাত স্থানে আটকে রেখে তাঁর বাবার কাছে মুঠোফোনে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। বিষয়টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানকে জানানো হয়। এরপর চেয়ারম্যান ও আত্মীয়স্বজনের চেষ্টায় পরদিন তাঁকে জুয়েল গ্রামের একটি বাড়ির সামনে ফেলে রেখে যায়। এ ঘটনায় ৮ এপ্রিল মামলা করা হয়।
ওই নারী বলেন, ‘অপহরণের ঘটনা শোনার পর থেকে স্বামী যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন। জুয়েল স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এক নেতার লোক। সে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও মাদক ব্যবসায় জড়িত। জুয়েলকে পুলিশ গ্রেপ্তার না করায় আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি।’
মেয়েটির বাবা বলেন, জুয়েল তাঁর মেয়েকে বিয়ে করতে ব্যর্থ হয়ে অপহরণ করেন। এ ঘটনায় মামলা করার পর তিনি তাঁর মেয়ে ও নাতনিকে নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাঁর স্ত্রী একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষক। তিনিও স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য জুয়েলের মুঠোফোনে কয়েকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ধরেননি।
ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ‘জুয়েলের বিরুদ্ধে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। সে বখাটে হিসেবে পরিচিত।’
পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল আহসান বলেন, রাসেল ও অপূর্ব নামের মামলার এজাহারভুক্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।