বাংলা৭১নিউজ, ডেস্ক: ভারতের সর্বশেষ চারটি প্রদেশের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেল মাত্র দুদিন আগেই। চারটি প্রদেশের নির্বাচনে একটি প্রদেশে অঘটনের বাইরে তেমন কোনো ঘটনা ছাড়াই নির্বাচন সম্পূর্ণ হয়েছে। আসামের ইতিহাসকে অগ্রাহ্য করে শেষমেষ এই প্রথম প্রদেশটির ক্ষমতায় আসছে প্রধানমন্ত্রী মোদির দল ভারতীয় জনতা পার্টি।
এই পার্টির পক্ষে সর্বানন্দ সোনোয়াল আগামী পাঁচ বছরের জন্য আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। দায়িত্ব গ্রহনের আগেই গত শনিবার এক বক্তব্যে তিনি জানান যে, আসামের জনগণকে দেয়া প্রতিশ্রুতি রাখতেই খুব জলদি দুই বছরের জন্য পার্শ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে আসামের সীমান্ত যোগাযোগ বন্ধ থাকবে।
বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলেও তিনি জানান। আসামের স্থানীয় মিডিয়া পিটিআই’কে দেয়া সাক্ষাতকারে তিনি আরও জানান, ‘আমরা আসামের জনগণের কাছে যে প্রতিশ্রুতি করেছি তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো দুটো ব্যাপার। আমাদের সরকার অনতিবিলম্বেই অনুপ্রবেশ ঠেকাতে এবং সঠিক ও নিখুত এনআরসি’র(ন্যাশনাল রেজিস্টার অভ সিটিজেনস) কাজ শুরু হবে।
ওই কাজ চলাকালীন সময়ে যাতে কোনো অনুপ্রবেশ না হয় তাই বাংলাদেশ-আসাম সীমান্ত দুই বছরের জন্য বন্ধ করে দেয়া হবে। জনগণের প্রতি প্রতিশ্রুতি পালনে আমরা কতটা একনিষ্ঠ সেটা দেখানোর দরকার আছে।’
আশির দশকে আসামে বিদেশিদের বিরুদ্ধে যে ছাত্র আন্দোলনটি রচিত হয়েছিল সেই আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী ছিলেন সোনোয়াল। সর্বশেষ কেন্দ্রিয় সরকারের নির্বাচনের পর থেকেই আসাম এবং পশ্চিমবঙ্গের উপর বিশেষ নজর ছিল বিজেপি’র। সেই বিশেষ নজরের অংশ হিসেবেই বিজেপির পক্ষ থেকে নির্বাচনে দাড় করানো হয়েছিল সর্বানন্দ সোনোয়ালকে।
নির্বাচনে নাম লেখানোর আগে থেকেই বাংলাদেশ বিরোধীতা এবং অবৈধ অনুপ্রবেশ ইস্যুতে আসামে বেশকিছু সামাজিক আন্দোলন গড়ার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। ধারণা করা হচ্ছে, ওই আন্দোলনের ধারাবাহিকতাতেই সর্বানন্দ হয়তো নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ৫৩ বছর বয়সী সোনোয়াল আরও বলেন, ‘ইন্দো-বাংলাদেশ সীমান্ত পুরোপুরি বন্ধ করা হয়নি। বিশেষত নদী বিধৌত অঞ্চলগুলোতে অনুপ্রবেশের ঘটনা বেশি ঘটে।
আমরা চাই এই অনুপ্রবেশ একেবারে বন্ধ হোক যাতে এই সীমান্ত দিয়ে কেউ আর প্রবেশ করতে না পারে। এনআরসি’র প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে ইতোমধ্যেই। আমরা চাই যতটা দ্রুত সম্ভব এই পরিসংখ্যান করে ফেলা।’
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের রয়েছে মোট ৪ হাজার ৯৬ কিলোমিটার সীমান্ত। যার মধ্যে ২৬৩ কিলোমিটার আছে আসামের সঙ্গে। আসামের সঙ্গে থাকা সীমান্তের ২২৪ কিলোমিটার জায়গা ইতোমধ্যেই কাঁটাতাড়ের বেড়া দেয়া হয়েছে। বাকী ৪০ কিলোমিটার নদী বিধৌত হওয়ায় সেখানে কোনো বাধা দেয়া যাচ্ছে না।
বাংলা৭১নিউজ/এসএস