দমকা হাওয়ার জোর আর আর্দ্রতার পরশে অবশেষে দাবদাহ কোণঠাসা হতে শুরু করেছে। রাজধানী ও বন্দরনগর চট্টগ্রাম থেকে বিদায় নিয়ে গতকাল রোববার তাপপ্রবাহটি দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। তবে তাই বলে রাজধানীতে গরমের উৎপাত যে বেশ কমেছে, তা বলা যাবে না। দিনের বেলা খটখটে রোদে অনেককেই ঘামে ভিজতে হয়েছে। তবে রাতে ময়মনসিংহ থেকে গাজীপুর হয়ে রাজধানীর উত্তরা পর্যন্ত এক পশলা বৃষ্টিও হয়েছে।
তবে সিলেট ও নেত্রকোনা অঞ্চলের হাওর এলাকায় গতকালের বৃষ্টি যেন বর্ষার সময়কে হার মানিয়েছে। এক সিলেটেই গতকাল ৯৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। টাঙ্গাইলে ৪৪ ও নেত্রকোনায় বৃষ্টি হয়েছে ২৯ মিলিমিটার। দেশের হাওর এলাকার এই বৃষ্টি দেখে বিশেষজ্ঞরা ওই এলাকায় হঠাৎ বন্যার আশঙ্কাও করছেন। হাওরজুড়ে পাকা ধান নিয়ে সেখানকার কৃষকেরা বিপদেই পড়েছেন।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্যা ও পানি ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, দেশের হাওর এলাকায় ইতিমধ্যে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আজ সোমবার ও কাল মঙ্গলবার এমন বৃষ্টি হলে সেখানে হঠাৎ বন্যা হতে পারে। ফলে ফসল রক্ষাসহ সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে হবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, আজ সিলেট বিভাগের অনেক স্থানে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে। ঢাকা, বগুড়া ও ময়মনসিংহ জেলার দু-এক স্থানেও হতে পারে বৃষ্টি ও শিলাপাত। এতে তাপের দাপট কমে আবহাওয়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরতে পারে। তবে সাতক্ষীরা, খুলনা, যশোর, কুষ্টিয়া ও পাবনায় মৃদু থেকে মাঝারি দাবদাহ বয়ে যেতে পারে।
গতকাল রাতে রাজধানীর উত্তরা এলাকায় এক পশলা বৃষ্টির সঙ্গে রাজধানীর দিনের আবহাওয়াকে মেলানো যাবে না। এপ্রিলের এই সময়ের স্বাভাবিক তাপমাত্রা সাধারণত ৩৩ থেকে ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে। গতকাল রাজধানীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৩৫ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে, ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান এ ব্যাপারে প্রথম আলোকে বলেন, দেশের পূর্বাঞ্চলে যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে, তাতে হঠাৎ বন্যা হতে পারে।