বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:২০ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জামায়াত আমিরের সাক্ষাৎ ঢাকায় দিনভর তাপমাত্রা থাকবে কম, অনুভূত হবে শীত গাজায় ৫ শিশুসহ আরও ৪৯ জনকে হত্যা করলো ইসরায়েল ‘পরিবেশ সুরক্ষায় বাংলাদেশকে সহায়তা দেবে ইইউ : রিজওয়ানা হাসান সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নিয়ে বিজিবি-বিএসএফ উত্তেজনা রাজধানীতে পঙ্গু হাসপাতালে আগুন পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে ইইউর সহায়তা চাইলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা রমজান শেষ না হওয়া পর্যন্ত পণ্যের শুল্কে পরিবর্তন আনবে না সরকার অংশীজনরা কী চান তার ওপর নির্ভর করবে নির্বাচন কবে হবে ঢাকা ছাড়লেন খালেদা জিয়া ২ লাখ ৩৮ হাজার বেকারের কর্মসংস্থান করবে বেজা খালেদা জিয়াকে বার্তা পাঠিয়ে যা বললেন জিএম কাদের ইসলামী ব্যাংকের ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম উদ্বোধন এলএনজি ও চাল আমদানি, ব্যয় ১০২৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা নাঈমুল ইসলাম খান ও তার পরিবারের দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদক বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে বিমসটেক সেক্রেটারি জেনারেলের সাক্ষাৎ প্রথমবারের মতো দেশব্যাপী হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতা কবে নাগাদ সব শিক্ষার্থী পাঠ্যবই পাবে জানি না: শিক্ষা উপদেষ্টা ট্রাইব্যুনালের মূল ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধান বিচারপতি পুলিশে চাকরি পাচ্ছেন জুলাই বিপ্লবে আহত ১০০ জন

তুহিনকে তার বাবা হত্যা করতে পারে না, দাবি মায়ের

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় বুধবার, ১৬ অক্টোবর, ২০১৯
  • ৭৭ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ(সুনামগঞ্জ)প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় পাঁচ বছরের শিশু তুহিন হত্যাকাণ্ডে বাবা আব্দুল বাছির জড়িত বিষয়টি বিশ্বাস করতে পারছেন না মা মনিরা বেগম। ১৮ দিনের সন্তান কোলে নিয়ে দ্বিতীয় সন্তান তুহিনের হত্যার বিচার চান তিনি।

বুধবার বিকেলে দিরাই উপজেলার কেজাউরা গ্রামে তুহিনের মা মনিরা বেগমের সঙ্গে কথা হয়। ১৮ দিনের নবজাতক কোলে কথা বলার শুরুতেই কেঁদে ফেলেন মনিরা।

কিছুক্ষণ কান্নার পর মনিরা বেগম বলেন, তুহিন আমাদের আদরের সন্তান। তাকে হত্যায় তার বাবা জড়িত এ কথা আমি বিশ্বাস করতে পারছি না। তুহিন হত্যার ঘটনা কিছুতেই মানতে পারছি না আমি।

তিনি বলেন, আমার তিন ছেলে ও এক মেয়ে। এর মধ্যে তুহিন দ্বিতীয়। ১৮ দিন আগে আমার এক কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। দুই বছর বয়স থেকে তুহিন তার বাবার সঙ্গে ঘুমায়। কোনো দিন তুহিনকে মারধর করেননি তার বাবা। রোববার রাতে খেয়ে সন্তানদের নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি আমরা।

রাত ১০টার দিকে ঘুম থেকে উঠে দেখি বাবার সঙ্গে ঘুমাচ্ছে তুহিন। ওটাই জীবিত তুহিনকে আমার শেষ দেখা। রাত আড়াইটার দিকে ঘরের দরজা খোলা দেখি। এরপর সবাই জেগে দেখি তুহিন নেই। তখন প্রতিবেশীদের ডাকা হয়। সকালে বাড়ির পাশে রাস্তায় একটি কদম গাছের ডালে তুহিনের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পাই আমরা। এরপর তুহিনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সেই সঙ্গে তার বাবা ও চাচাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

মনিরা বেগম আরও বলেন, ‘আমি জানি না কে বা কারা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। মানুষের কাছে শুনছি তুহিনকে তার বাবা হত্যা করেছে। তবে আমি কারও কথা বিশ্বাস করতে পারছি না। যে তুহিন দুই বছর ধরে বাবার কোলে ঘুমাতো সে তুহিনকে ঘরের বাইরে নিয়ে কোলের ওপর হত্যা করতে পারে না বাবা, এটি বিশ্বাস হয় না আমার।’

হত্যার দায় স্বীকার করে তুহিনের চাচা নাছির উদ্দিন ও চাচাতো ভাই শাহরিয়ারের আদালতে দেয়া জবানবন্দির বিষয়ে মনিরা বেগম বলেন, নাছির আমার দেবর। তার সঙ্গে তুহিনের বাবার কোনো শত্রুতা নেই, কোনো ঝগড়া বিবাদ নেই। তার সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্ক। হাসিখুশি ছিলাম আমরা। তাদের ভাইয়ে ভাইয়ে কোনো সমস্যা ছিল না। ভাতিজা শাহরিয়ারের সঙ্গে আমার কিংবা তার পরিবারের কারও কোনো দ্বন্দ্ব নেই।

মনিরা বেগম বলেন, তুহিনকে যারাই হত্যা করুক আমি তাদের বিচার চাই। সবাই বলছে তুহিনকে তার বাবা হত্যা করেছে, কিন্তু কেন তুহিনকে তার বাবা হত্যা করেছে তার উত্তর দিচ্ছে না কেউ। আমি জানতে চাই কেন তুহিনকে তার বাবা হত্যা করল? আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। পুরো ঘটনা জানতে চাই।

কেঁদে কেঁদে মনিরা বেগম বলেন, ‘আমি আমার ছেলেকে শেষবারের মতো দেখতে পারিনি। যদি আগে জানতাম আমার ছেলের ওপর এমন অত্যাচার হবে বাড়িতেই রাখতাম না। সরকারের কাছে আমার আবেদন যারা আমার ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে তাদের ফাঁসি দেয়া হোক।’

এর আগে সোমবার রাতে এ ঘটনায় তুহিনের মা মনিরা বেগম অজ্ঞাত ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে দিরাই থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় এখন পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতাররা হলেন- তুহিনের বাবা আব্দুল বাছির, তুহিনের চাচা আব্দুল মোছাব্বির, জমশেদ আলী, নাছির উদ্দিন এবং তুহিনের চাচাতো ভাই শাহরিয়ার।

মঙ্গলবার বিকেলে তুহিনের বাবা আব্দুল বাছির, চাচা আব্দুর মুছাব্বির এবং জমশেদ আলীকে তিনদিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। একই সময় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তুহিনের আরেক চাচা নাছির উদ্দিন ও চাচাতো ভাই শাহরিয়ার।

জবানবন্দিতে তারা জানিয়েছেন, ঘটনার দিন শিশু তুহিনকে ঘুমন্ত অবস্থায় তার বাবা আব্দুল বাছির ঘর থেকে বের করে বাইরে নিয়ে যান। এরপর ঘুমন্ত তুহিনকে গলা কেটে হত্যা করেন চাচা ও চাচাতো ভাই। পরে তুহিনের পেটে দুটি ছুরি বিদ্ধ করে গাছে ঝুলিয়ে দেন তারা। তুহিনকে হত্যায় বাবার সঙ্গে অংশ নেন চাচা নাছির উদ্দিন ও চাচাতো ভাই শাহরিয়ার।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান আরও বলেন, পৃথিবীতে শিশুর জন্য সবচেয়ে নিরাপদ স্থান বাবার কোল। কিন্তু তুহিনকে বাবার কোলেই হত্যা করা হয়। পরে তার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ কেটে ফেলা হয়। এরপর পেটে দুটি ছুরি ঢুকিয়ে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়। তুহিনের বাবা আব্দুল বাছিরের সঙ্গে চাচা নাছির মিয়া ও ভাতিজা শাহরিয়ার ছিলেন।

তিনি আরও বলেন, প্রতিহিংসাবশত হতে পারে তুহিন হত্যা, পূর্বশত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে হতে পারে, আবার মামলা-সংক্রান্ত বিষয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে। তবে তদন্তের স্বার্থে সবকিছু এখনই বলছি না।

বাংলা৭১নিউজ/এমএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com