করোনার কারণে প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর আগামীকাল (১২ সেপ্টেম্বর) থেকে খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। করোনাকালীন দর্জিদের কাজ প্রায় বন্ধ থাকলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণায় তাদের ব্যস্ততা বাড়তে শুরু করেছে। শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন করে তৈরি করতে হচ্ছে পোশাক। ফলে শেষ সময়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন নারায়ণগঞ্জের দর্জিরা।
জেলা শিক্ষা অফিস সূত্র জানিয়েছে, নারায়ণগঞ্জে হাইস্কুল, কলেজ ও মাদরাসা মিলে ৩০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কমপক্ষে পৌনে দুই লাখ শিক্ষার্থী এবং ৫৪৭ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় চার লাখ শিক্ষার্থী রয়েছে।
এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রায় সবারই নতুন করে পোশাক তৈরি করতে হচ্ছে। পোশাক তৈরিকে কেন্দ্র নারায়ণগঞ্জের প্রায় সব এলাকায় দর্জিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। স্কুল খোলার আগের দিনই তাদের পোশাক তৈরির কাজ শেষ করতে হবে।
আসমা আক্তার নামে এক অভিভাবক বলেন, ছেলে তাসলিমকে দুই বছর আগে আদর্শ স্কুলে তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তি করেছিলাম। সে যখন পঞ্চম শ্রেণিতে উঠেছে। তখন সে এক পোশাকে ক্লাস করেছে। করোনাকালীন সময় প্রায় দেড় বছর ধরে স্কুল বন্ধ ছিল। আর এ সময়ে তাসলিম আগের চেয়ে অনেক বড় হয়েছে। ফলে আগের পোশাক এখন তার শরীরে লাগছে না। তাই নতুন করে ছেলের পোশাক তৈরি করতে হচ্ছে।
ইসদাইর রাবেয়া হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, নতুন করে পোশাক তৈরির জন্য অভিভাবকরা প্রতিদিনই স্কুলের নামে তৈরি মনোগ্রাম নিতে ভিড় করছেন। প্রতিদিনই স্কুলের অফিস খোলা রেখে মনোগ্রাম দিতে হচ্ছে। তবে দীর্ঘদিন পর স্কুল খোলায় শিক্ষার্থীসহ সবার মধ্যে উৎসাহ কারজ করছে।
ইয়ং টেইলার্সের দর্জি শাওন বলেন, স্কুল ড্রেস তৈরির অনেক কাজ এসেছে। প্রতিদিনই কাজ করতে হচ্ছে। সময়মতো দিতে না পারলে আবার অন্য সময় কাজ পাবো না। তাই পোশাক তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটছে।
স্টুডেন্ট টেইলার্সের মালিক রতন বলেন, করোনায় তেমন কাজকর্ম ছিল না। তবে স্কুলগুলো খোলার ঘোষণার পর কাজকর্মে গতি ফিরেছে। একের পর এক পোশাক তৈরির অর্ডার আসছে। ফলে চরম ব্যস্ত সময় পার করছি। আশা করি স্কুল খোলার পর আরও বেশি অর্ডার আসবে।
ফতুল্লা এলাকার দর্জি নুরু মিয়া বলেন, কয়েকদিনে প্রায় শতাধিক স্কুল ড্রেস তৈরির অর্ডার পেয়েছি। এজন্য অতিরিক্ত দর্জি নিয়ে দিন রাত কাজ করতে হচ্ছে। এলাকার প্রতিটি টেইলার্সে স্কুল ড্রেস তৈরির পর্যাপ্ত অর্ডার রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিসার মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু হলে শিক্ষার্থীদের যেন কোনো অসুবিধা না হয় সেজন্য প্রতিনিয়ত মনিটরিং করছি।’
বাংলা৭১নিউজ/পিকে