বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:৩৬ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুলসহ ৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র প্রকাশের দাবিতে লিফলেট বিতরণ এবার কারও পক্ষ নিয়ে কাজ করলে অসুবিধা হবে : কর্মকর্তাদের সিইসি অল্প কিছুদিনের মধ্যে দেশে ফিরবেন তারেক রহমান: মির্জা ফখরুল ইসলামী ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে টাকা চুরি শেখ হাসিনার দুর্নীতি খুঁজে বের করতে টাস্ক ফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত ডিএমপির ১২ ডিসিকে বদলি ‘বৃহত্তর ইসরাইলের’ মানচিত্র প্রকাশ, আরব দেশগুলোর কড়া প্রতিবাদ বিমানবন্দরে রক্তাক্ত সেই প্রবাসীকে জরিমানা, হতে পারে জেলও ৩০ জুনের আগেই মহার্ঘভাতা ঘোষণা মানিকগঞ্জে ডিসির রুমের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান দাবি মানার আল্টিমেটাম দিয়ে ‌‌শাহবাগ ছাড়লেন চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা শরীয়তপুরে থানা থেকে ওসির মরদেহ উদ্ধার নিক্সন ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবে ৩ হাজার ১৬২ কোটি টাকা লেনদেন শহীদ মিনারের পর শাহবাগ অবরোধ বিডিআর সদস্যের স্বজনদের জেনেভা ক্যাম্পের আলোচিত সন্ত্রাসী চুয়া সেলিম গ্রেপ্তার মা‌র্কি‌নিদের হয়ে ঢাকায় বিশেষ দা‌য়িত্ব সামলাবেন ট্র্যাসি জ্যাকবসন বিসিএসে বাদ পড়া ২২৭ জনের বেশিরভাগই চাকরিতে যোগ দিতে পারবেন রাশিয়ায় বিমানবাহিনীর তেলের ডিপোয় ইউক্রেনের হামলা হাইভোল্টেজ ম্যাচে টস জিতে বরিশালকে ব্যাটিংয়ে পাঠালো রংপুর

তিস্তা ব্যারাজ কমান্ড এলাকায় বোরোর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় সোমবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২০
  • ৭৫ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ,(রংপুর)প্রতিনিধি: করোনাক্রান্তির মধ্যেও সুখবর-দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পের আওতায় চলতি মৌসুমে সেচনির্ভর বোরো আবাদে সেচ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। উত্তরের তিন জেলা নীলফামারী, রংপুর ও দিনাজপুরে এ বছর ৩৫ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সেচ প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও তা অতিক্রম করে ৫০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সেচ প্রদান করা হচ্ছে।
এতে তিস্তা ব্যারাজ কমান্ড এলাকায় এই মৌসুমে দুই লাখ ৫০ হাজার মেট্রিকটন ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। যার মূল্য প্রায় ৬০০ কোটি টাকা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের মাধ্যমে সেচ কার্যক্রম শুরু হয় গত ২৭ জানুয়ারি। রংপুর, দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলার ৩৫ হাজার ৫০০ হেক্টর জমি সেচের আওতায় নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় পাঁচ হাজার হেক্টর, জলঢাকা উপজেলায় আট হাজার হেক্টর ও নীলফামারী সদর উপজেলার সাত হাজার হেক্টর, কিশোরগঞ্জ উপজেলায় পাঁচ হাজার হেক্টর, সৈয়দপুর উপজেলায় দুই হাজার হেক্টর, রংপুর সদর উপজেলায় দুই হাজার হেক্টর, গঙ্গাচড়া উপজেলায় পাঁচ হাজার হেক্টর, তারাগঞ্জ উপজেলায় তিন হাজার হেক্টর ও দিনাজপুরের খানসামা ও চিরিরবন্দর উপজেলায় এক হাজার ৫০০ হেক্টর জমি রয়েছে। তিস্তার সেচ কমান্ড এলাকার প্রায় প্রায় দুই লাখ কৃষক এই সেচের সুবিধা পাচ্ছেন। শুরুতে তিস্তায় পানিপ্রবাহ কম থাকায় দিনাজপুর ও রংপুরের কমান্ড এলাকার প্রায় অর্ধলাখ হেক্টর জমি সেচ কার্যক্রম থেকে বাদ দিয়ে শুধু নীলফামারী জেলার ডিমলা, জলঢাকা, নীলফামারী সদর, কিশোরগঞ্জ, সৈয়দপুর, রংপুরের তারাগঞ্জ ও গঙ্গাচড়া এবং দিনাজপুরের খানসামা ও চিরিরবন্দর উপজেলাকে সেচের আওতায় রাখা হয়েছে। যদিও রংপুর, দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলার ১২ উপজেলায় সেচ দেওয়া কথা ছিল। তবে এবারে উজানের পানিপ্রবাহ ঠিক থাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে সেচ প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৯৯৩-৯৪ শস্যবছর থেকে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ১২টি উপজেলায় ব্যাপকভাবে আউশ ও আমন উৎপাদনের মাধ্যমে আর্থসামাজিক উন্নয়নের লক্ষে তিস্তার পানি দিয়ে সেচ কার্যক্রম শুরু হয়। পরে ২০০৬-০৭ শস্যবছর থেকে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে বোরো মৌসুমেও সেচ কার্যক্রম সম্প্রসারিত করা হয়। আমন মৌসুমে মোট সেচযোগ্য ৮৩ হাজার হেক্টর এলাকার প্রায় সম্পূর্ণটাই সেচের আওতায় আনা সম্ভব হলেও বোরোর ক্ষেত্রে পানির দুষ্প্রাপ্যতায় সেচ-সাফল্যের চিত্র একেবারেই হতাশাজনক। শুকনো মৌসুমে যে সামান্য পরিমাণ পানি তিস্তা নদীতে পাওয়া যায় তার সবটুকুই সেচ চাহিদা মেটানোর লক্ষে তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পের ৩৪টি সেচ খালের মাধ্যমে কৃষিজমিতে সরবরাহ করা হচ্ছে। পরিণতিতে ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা ব্যারাজের ভাটিতে রংপুরের কাউনিয়া পর্যন্ত ৬৫ কিলোমিটার বিস্তৃত এই নদীতে পানিও থাকছে না। এ কারণে তিস্তা অববাহিকার বাংলাদেশ অংশের এই বিশাল পরিমাণ নদীগর্ভ পরিণত হচ্ছে বালুচরে। অপরদিকে দীর্ঘদিন থেকে সেচ খালগুলো সংস্কার না করায় খালগুলোর তলদেশ ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ডিসেম্বর মাসের পর থেকে তিস্তায় পানিপ্রবাহ মারাত্মকভাবে কমে যায়। শুধু তাই নয়, বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানির কারণে ব্যারাজ ও পার্শ্ববর্তী এলাকার ফসল ও ঘরবাড়ি ঝুঁকির মুখে পড়ে। ভারত তখন সব গেট খুলে দেয়। এতে ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট ২৪ ঘণ্টা খুলে দিয়েও পানি সরানো সম্ভব হয় না।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বিগত শুষ্ক মৌসুমে তিস্তা নদীতে পানির প্রবাহ কম থাকলেও এবার সেই পরিস্থিতি নেই। বাংলাদেশে তিস্তার পানি ব্যবহার হচ্ছে পরিকল্পিত সেচ দেওয়ার কাজে। কমান্ড এলাকার কৃষক আবু আলম, নয়া মিয়া, অশোক কুমারসহ অনেকে বলেন, মাঠে সেচনির্ভর বোরো ও ভুট্টা আবাদ চলছে। করোনাভাইরাসের কারণে সরকারি ছুটি ও লকডাউন ঘোষণা করা হলে আমরা চিন্তায় পড়ে যাই। কারণ সেচ কার্যক্রম বন্ধ হলে ফসল ঘরে উঠবে না। কিন্তু করোনাক্রান্তিতেও কর্তৃপক্ষ সেচকার্যক্রম পরিচালনা করায় অন্যান্য বছরের চেয়ে এবারে ক্ষেতের চেহারা ভালো হয়েছে। ঠিকমতো সেচসুবিধা পাওয়ায় এ বছর তিস্তার সেচ কমান্ড এলাকায় বোরোর বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।
নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহ মাহফুজুল হক জানান, চলতি বোরো মৌসুমে তিস্তা সেচ প্রকল্পের আওতায় আট হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান লাগানো হয়েছে। অন্যান্য বছরের মতো তিস্তায় পানি সংকট না থাকায় এবারে বোরোর বাম্পার ফলন হবে।
তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পের সেচ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাফিউল বারী জানান, উজানে পানিপ্রবাহ ভালো থাকার ফলে তিস্তা ব্যারাজের কমান্ড এলাকায় সেচকার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে। বিগত সময়ের চেয়ে এবার শুষ্ক মৌসুমে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি জানান, শুরুতে দুই হাজার কিউসেক পানি পাওয়া গেলেও এখন সেই প্রবাহ তিন হাজার কিউসেকের ওপরে রয়েছে। তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে সরকারি ছুটি ও লকডাউন ঘোষণা করা হলেও কৃষকের মাঠের সেচনির্ভর বোরো ধান আবাদের কথা মাথায় রেখে মুজিববর্ষ সফল করতে তিস্তা সেচ প্রকল্পের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত তিস্তা ব্যারাজের কমান্ড এলাকায় বোরোর বাম্পার ফলনের আশা করছেন এই সেচ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা।

বাংলা৭১নিউজ/এমএ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com