বাংলা৭১নিউজ, মমিনুল ইসলাম মুন, তানোর (রাজশাহী)প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরে চলতি মৌসুমে হঠাৎ করে আলুর দরপতন (বাজার মূল্য হ্রাস) হওয়ায় মুনাফা তো দুরের কথা আলুচাষে বিনিয়োগের অর্থ উত্তোলন করা নিয়ে আলুচাষি কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। প্রতি বিঘায় কৃষকের প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার টাকা করে লোকসান হচ্ছে। একদিকে আলুর দরপতন অন্যদিকে হিমাগারে উচ্চ ভাড়া ও শ্রমিকের মজুরি পরিশোধ করতে গিয়ে হিমাগারে সরক্ষণ করা আলু নিয়ে নিয়ে কৃষকরা চরম উদ্বেগ-উৎকন্ঠার মধ্যে রয়েছে। আলু উত্তোলনের সময় প্রতি বস্তা আলুর এক হাজার ৫০ টাকা থেকে এক হাজার ১০০ টাকা দামে বিক্রি হলেও এখন প্রতি বস্তা আলু এক হাজার ৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, তানোরে চলতি মৌসুমে প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। প্রতি বিঘা আলু চাষে জমি থেকে হিমাগার পর্যন্ত আসতে সর্বমোট ব্যয় হয় প্রায় ৪০ হাজার টাকা ও উৎপাদন হয় গড়ে ৪৫ বস্তা। হিমাগারে প্রতি বস্তা আলুর ভাড়া ৩৫০ টাকা, বস্তা ১০০ টাকা ও শ্রমিকের মজুরি ৫০ টাকা হিসেবে প্রতি বিঘা আলু সংরক্ষণ করতে মোট ২২ হাজার ৫০০ টাকা খরচ হচ্ছে। আর ৪৫ বস্তা আলু এক হাজার ৫০ টাকা করে বিক্রি করে দাম পাচ্ছেন প্রায় ৪৮ হাজার টাকা সেই হিসেবে প্রতি বিঘা আলুতে হিমাগার খরচের প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার টাকা করে কুষকের লোকসান হচ্ছে। তানোরের পাঁচন্দর ইউপির পাঁচন্দর গ্রামের প্রসিদ্ধ আলু চাষি লুৎফর রহমান বলেন, তিনি এ বছর ৫০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন এবং এসব আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করা আছে। তিনি বলেন, হঠাৎ করে আলুর বাজার পড়ে যাওয়ায় প্রতি বিঘায় তার প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার টাকা করে লোকসান হচ্ছে। কৃষ্ণপুর গ্রামের আলুচাষি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, তিনি এ বছর প্রায় ১০০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন এবং অধিক মুনাফার আশায় এসব আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করে হঠাৎ আলুর দরপতন হওয়ায় এখন তাকে প্রতি বিঘায় প্রায় ১৭ হাজার টাকা করে লোকশান গুনতে হচ্ছে। তিনি বলেন, আলু উত্তোলনের সময় জমিতে যারা বিক্রি করেছে তারা কিছুটা মুনাফা করতে পেরেছেন। এব্যাপারে তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, এবার আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে. কাজেই কৃষকের লোকসান হবার কথা নয়, তবে কোনো কারণে আলুর বাজার পড়ে গেলে সেক্ষেত্রে কৃষকের লোকসান হতে পারে। তিনি বলেন, এ বিষয়টি হিমাগার কর্তৃপক্ষের দেখা উচিৎ।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস