বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: বইমেলার কথা মনে হলেই কল্পচিত্রে ভেসে উঠে স্টলে থরে থরে সাজানো বই। কিন্তু এবারের বইমেলায় একই সঙ্গে আরও একটি বিষয় নতুন করে পাঠক-দর্শক মনে ছাপ ফেলছে। সেটি হলো ই-বুক। বইমেলায় দেশের প্রথম ই-বুক সিস্টেম নতুন সম্ভাবনা হিসেবে জনপ্রিয় হচ্ছে পাঠকের কাছে।
বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে লেখক চত্বরের পাশে ই-বুক স্টলগুলো। সেখানে বইপ্রেমীদের ভিড়ও বেশ। ক্ষুদ্র পরিসরে জায়গা নিয়ে ডিজিটাল বইয়ের স্টল দিয়ে বসেছে বেঙ্গল ই-বই, সেইবই ডটকম, চড়ুই ডটকম এবং বাংলালিংক বই ঘর। সবকিছুই মিলছে মাউসের ক্লিকে।
‘বাংলালিংক বই ঘর’ স্টলের এক নারী বিক্রয়কর্মী জানান, এই ই-বুক অ্যাপটি পেতে গ্রাহরা গুগল প্লে স্টোর থেকে ‘বই ঘর আ্যপটি’ ডাউনলোড করতে পারবেন। সেবাটি পেতে গ্রাহককে দিনে মাত্র ২.৪৪ টাকা মাসুল দিতে হবে। এ ছাড়া বাংলালিংক বই ঘর আ্যপ পেতে ডাউনলোড ও ব্রাউজিংয়ের জন্য ভিন্ন ডাটা চার্জ প্রযোজ্য। অ্যাপসটি ডাউনলোড করলে পাঠকদের ১০টি বই বিনামূল্যে পড়ার সুযোগ দেয়া হচ্ছে। অন্য বইয়ের জন্য টাকা পরিশোধ করতে হবে।
এ বিষয়ে কথা হয় ‘বেঙ্গল ই-বই’-এর রওনক হাসানের সঙ্গে। তিনি বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশে ই-বুক খুব পরিচিত একটি বিষয়। আমাদের দেশের পাঠকদের মাঝে ই-বুক সম্পর্কে ধারণা দিতে আমরা বইমেলায় এসেছি।’
স্টলগুলোতে কথা বলে জানা যায়, ই-বই লেখক বা প্রকাশকদের অনুমোদন ছাড়া কোনো বই তারা প্রকাশ করছেন না। প্রতিটি বই বিক্রির ওপর একটি নির্দিষ্ট হারে লেখকরা কমিশন পাবেন।
‘বেঙ্গল ই-বই’ স্টোরে দুই বাংলার বিখ্যাত সব লেখকের প্রায় সাড়ে ৫০০ বই রয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন সোনালি যুগের রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, শরৎচন্দ্র, বিভূতিভূষণ, জীবনানন্দ ও সুকুমার রায়। এ ছাড়া রয়েছেন বর্তমান সময়ের মুহম্মদ জাফর ইকবাল, রাবেয়া খাতুন, ইমদাদুল হক মিলন, আলি ইমাম, ফরিদুর রেজা সাগর, রেজা উদ্দিন স্ট্যালিন প্রমুখ।
মেলায় কথা হয় ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষার্থী মুহাম্মদ আরাফাতের সঙ্গে। তিনি বলেন, ই-বুক নামে পরিচিত ডিজিটাল বইয়ের ধারণা বাংলাদেশে নতুন নয়। তবে ই-বুকের সুবিধা নিয়ে এবারই প্রথম অমর একুশে গ্রন্থমেলায় স্টল নেওয়া হয়েছে। এই ডিজিটাল যুগে কাগুজে বইয়ের পাশাপাশি ই-বই থাকা দরকার। এতে করে সময়-সুযোগ বুঝে ইচ্ছামতো বই ডাউনলোড করে পড়া যায়। খরচও কম।
বইমেলায় স্টল নেওয়া আরেকটি ই-বইয়ের প্রতিষ্ঠান ‘সেইবই ডটকম’-এর মার্কেটিং ম্যানেজার মুর্তজা আলী জানান, সাড়ে তিন ৩০০ বইয়ের স্টোর থেকে মেলা উপলক্ষে তারা প্রায় ৮০ শতাংশ বই বিনা মূল্যে ডাউনলোড করার সুযোগ দিচ্ছে। এ ছাড়া রয়েছে ফ্রি রেজিস্ট্রেশন ও গিফট।
এ বিষয়ে বেঙ্গল ই-বইয়ের স্টলে কথা হয় ব্রাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী আরিফুর রহমানের সঙ্গে।তিনি বললেন, ই-বই বিষয়টি খুব ভালো বলা যায় এ কারণে যে হাতের মুঠোয় আমি অসংখ্য বই একসঙ্গে পাচ্ছি। চাইলেই যেকোনো স্থানে বসে বই পড়া যায়। তা ছাড়া খরচও খুব কম। আরেকটি সুবিধা হলো- ই-বই থেকে পছন্দের একটি লাইন কপি করে নোট করে রাখতে পারি বা চাইলে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে শেয়ারও করতে পারি।
সব মিলিয়ে তরুণ প্রজন্মের পাঠক ই-বুক প্রকাশের এই উদ্যোগকে নতুন একটি সম্ভাবনা হিসেবে দেখছেন।
বাংলা৭১নিউজ/এম