মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:২৮ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
২ লাখ ৩৮ হাজার বেকারের কর্মসংস্থান করবে বেজা খালেদা জিয়াকে বার্তা পাঠিয়ে যা বললেন জিএম কাদের ইসলামী ব্যাংকের ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম উদ্বোধন এলএনজি ও চাল আমদানি, ব্যয় ১০২৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা নাঈমুল ইসলাম খান ও তার পরিবারের দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদক বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে বিমসটেক সেক্রেটারি জেনারেলের সাক্ষাৎ প্রথমবারের মতো দেশব্যাপী হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতা কবে নাগাদ সব শিক্ষার্থী পাঠ্যবই পাবে জানি না: শিক্ষা উপদেষ্টা ট্রাইব্যুনালের মূল ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধান বিচারপতি পুলিশে চাকরি পাচ্ছেন জুলাই বিপ্লবে আহত ১০০ জন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় শুনানি মুলতবি সচিবালয়ের গেটে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ পাঁচ মাসে আর্থিক স্থিতিশীলতায় খুব বেশি খুশি নয় বাংলাদেশ ব্যাংক জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণে ৮ পরিচালক নির্বাচিত রংপুরের বিপক্ষে এবার ঢাকা অলআউট ১১১ রানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে তিব্বতে নিহত বেড়ে ৯৫ স্ত্রী-ছেলেসহ নাফিজ সরাফতের বাড়ি, জমি ও ১৮ ফ্ল্যাট ক্রোকের আদেশ ফরিদপুরে ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসের ৫ যাত্রী নিহত জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ১০০ জনের কর্মসংস্থানের প্রস্তাব

তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার ৫৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা:
  • আপলোড সময় বৃহস্পতিবার, ১ জুন, ২০২৩
  • ৩২ বার পড়া হয়েছে

বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশের আন্দোলনের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক ও দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার ৫৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৬৯ সালের ১ জুন মাত্র ৫৮ বছর বয়সে পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ক্ষণজন্মা এই সাংবাদিক।

সাংবাদিকতার জগতে মানিক মিয়া এক প্রবাদপ্রতিম পুরুষ। তিনি মানুষের মুক্তির পক্ষেই নিজেকে, সাংবাদিকতাকে নিয়োজিত করেছিলেন। দৈনিক ইত্তেফাক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সাংবাদিকতাকে অবলম্বন করে জীবনব্যাপী তিনি এ দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণ ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সৃষ্টির লক্ষ্যে তিনি আমৃত্যু নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। সেজন্য তিনি বাংলার মানুষের কাছে ‘নির্ভীক সাংবাদিক’ হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন।

ইত্তেফাক পূর্ব পাকিস্তানে যে ভূমিকা পালন করেছিল, তা ছিল সময়ের দাবি। আওয়ামী লীগের সেই সময়ের রাজনীতিকে ইত্তেফাক জনগণের দাবি বলেই মনে করেছিল। তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার অবস্থান, ইত্তেফাকের সাংবাদিকতা এবং আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবস্থান ছিল এক ও অভিন্ন। 

তিন বছর পত্রিকা প্রকাশ বন্ধ রেখেছিলেন। সামরিক জান্তা ও স্বৈরাচারী শাসকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে নির্ভীক সাংবাদিকতার যে উদাহরণ তিনি সৃষ্টি করে গেছেন, তা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল দৃষ্টান্ত।

একজন রাজনীতিমনস্ক সাংবাদিক হয়েও তার রাজনৈতিক কোনো উচ্চাভিলাষ ছিল না, ছিল না ব্যক্তিগত কোনো লোভ। এ কারণেই সৎ ও নির্মোহ অবস্থান থেকে সত্য কথা বলার সাহস দেখাতে পারতেন। জেল-জুলুম, অত্যাচার, নিপীড়ন এবং সরকারের অসহযোগিতাকে মোকাবিলা করে, নীতির প্রশ্নে অবিচল থেকে তাকে মানুষের অধিকারের কথা বলতে হয়েছে।

হোসেন মানিক মিয়ার জন্ম ১৯১১ সালে পিরোজপুর জেলার ভাণ্ডারিয়ায়। তার বাবা মুসলেম উদ্দিন মিয়া। শৈশবেই মানিক মিয়ার মা মারা যান। গ্রামের পূর্ব ভাণ্ডারিয়া মডেল প্রাইমারি স্কুলে মানিক মিয়ার শিক্ষাজীবনের শুরু। পিরোজপুর জেলা সরকারি হাই স্কুল থেকে তিনি কৃতিত্বের সঙ্গে মেট্রিক পাশ করেন। 

১৯৩৫ সালে মানিক মিয়া ডিস্টিংশনসহ বরিশাল বিএম কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রি লাভ করেন। পড়াশোনা শেষ করে তিনি পিরোজপুর জেলা সিভিল কোর্টে চাকরি শুরু করেন। পিরোজপুর জেলা সিভিল কোর্টে কর্মরত থাকাবস্হায় ১৯৩৭ সালে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানার অন্তর্গত গোয়ালদি গ্রামের অভিজাত পরিবারের খোন্দকার আবুল হাসান সাহেবের কন্যা মাজেদা বেগমের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি।

তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া ১৯৪৭ সালে সোহরাওয়ার্দী কর্তৃক কলকাতা থেকে প্রকাশিত দৈনিক ইত্তেহাদের পরিচালনা বোর্ডের সেক্রেটারি পদে যোগ দেন।

১৯৪৮ সালে পত্রিকাটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঢাকায় চলে আসেন এবং সাপ্তাহিক ইত্তেফাকের সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৫৩ সালে তার সম্পাদনায় সাপ্তাহিক ইত্তেফাক ‘দৈনিক ইত্তেফাক’-এ রূপান্তরিত হয়। মানিক মিয়ার সম্পাদনায় দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকা আইয়ুব খানের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। 

সামরিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ১৯৫৯ সালে তিনি এক বছর কারাভোগ করেন। ১৯৬৬ সালে তিনি আবার গ্রেফতার হন। এ সময় দৈনিক ইত্তেফাকের প্রকাশনা নিষিদ্ধ এবং নিউ নেশন প্রিন্টিং প্রেস বাজেয়াপ্ত করা হয়। এর ফলে তার প্রতিষ্ঠিত অন্য দুটি পত্রিকা ঢাকা টাইমস ও পূর্বাণী বন্ধ হয়ে যায়। গণআন্দোলনের মুখে সরকার ইত্তেফাকের ওপর বিধি-নিষেধ প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়। ফলে ১৯৬৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি পত্রিকাটি ফের প্রকাশিত হয়।

১৯৬৪ সালে কাশ্মীরে সৃষ্ট দাঙ্গা ঢাকায় ছড়িয়ে পড়লে তা প্রতিরোধে স্থাপিত দাঙ্গা প্রতিরোধ কমিটির প্রথম সভাপতি হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন।

‘রাজনৈতিক ধোঁকাবাজি’, ‘রাজনৈতিক মঞ্চ’ আর ‘রঙ্গমঞ্চ’ শিরোনামে কলাম লিখে বাংলাদেশের মানুষকে স্বাধীনতাকামী করে তোলেন মানিক মিয়া। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণ ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সৃষ্টির লক্ষ্যে তিনি আমৃত্যু নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন।

দীর্ঘ সংগ্রামের পর একটা সময়ে এসে মানিক মিয়া কিছুটা ক্লান্ত হয়ে পড়েন। তার শরীর ভেঙ্গে পড়ে। এ অবস্থায় ১৯৬৯ সালে ২৬ মে এই ভগ্ন স্বাস্থ্য নিয়েই তিনি প্রাতিষ্ঠানিক কাজে রাওয়ালপিন্ডি যান। সেখানেই ১৯৬৯ সালের ১ জুন রাতে তিনি মারা যান।

দিনটি উপলক্ষে পরিবারের পক্ষ থেকে কোরআনখানি ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

বাংলা৭১নিউজ/একেএম

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com