বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: মানুষের ভিড় ঠেকাতে ঢাকায় প্রবেশ পথে বাইরে থেকে আসা মানুষের কাছ থেকে উচ্চ হারে ফি নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় শিল্পকলা একাডেমি মাঠে তিন দিনব্যাপী উন্নয়ন মেলার শেষ দিনে ‘বঙ্গবন্ধুর উন্নয়ন দর্শন ও আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এই প্রস্তাব দেন তিনি। অনুষ্ঠানে মূখ্য আলোচক ছিলেন ফরাসউদ্দিন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর বলেন, ‘ঢাকা মহানগরীর যে বিশাল সমস্যা এটার সমাধান করা প্রয়োজন। এজন্য আমি চার-পাঁচটি সুপারিশ করব। এগুলো আমি প্রধানন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টার দৃষ্টিতে আনতে চাই।’
স্কুলের ভর্তিটা কেনো আঞ্চলিক ভিত্তিতে হবে না- প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘সব দেশে হয়, যে জায়গায় বাস করে সেই জায়গার স্কুলে ভর্তি হবে। কেনো স্কুলে যাতায়াত করা ছেলেমেয়েরা বাসে যাবে না? এই দুটো জিনিস করা হলে ট্রাফিক সমস্যার সমাধান হবে। আর যেটা হবে আমাদের কচিপ্রাণ ছেলেমেয়েরা যারা একই স্কুলে পড়বে তাদের মধ্যে ভাবের আদান-প্রদান হবে। এই যে আমরা জঙ্গির বিরুদ্ধে ফাইট করছি এতে এটা শক্তিশালী উপাদান হবে।’
ফরাসউদ্দিন বলেন, ‘স্কুল টাইম, অফিস টাইম ফ্ল্যাক্সিব্যাল আওয়ারে করা দরকার, যেটা উন্নত বিশ্বে আছে। কেউ কেউ অফিস শুরু করবেন ৯টায় কেউ কেউ শুরু করবেন ১১টায়। সময়টা ভাগ করা হয়ে যাবে।’
‘আর কী করবেন- ঢাকা মহানগরীতে প্রবেশ করার জন্য ছয়টি রাস্তা আছে। সব জয়গায় মেশিন-টোল বসান। টোল বসিয়ে বেশ উচ্চ হারে প্রবেশ ফি নেয়া যেতে পারে। তাহলে অনেক ভিড় কমে যাবে’ বলেন অর্থনীতিবিদ ফরাসউদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘মানুষের হাতে টাকা-পয়সা আছে কোটিপতি হবে। কিন্তু ট্যাক্সেসন সিস্টেম, ট্যাক্সের অফিসারদের প্রশিক্ষণ, কর্মপরিবেশ, কেনো তারা কর দেবে- সেটা ভালোভাবে বুঝিয়ে ঐক্যমত সৃষ্টি করে রাজস্ব আদায় করা দরকার। যাতে আমরা ২০২৫ সালে ট্যাক্স জিডিপি রেশিও ২০ করতে পারি। ইনভেস্টমেন্ট জিডিপি ৩৫ ভাগ করতে পারি যাতে আমাদের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ১০ ভাগে উন্নীত হয়।’
এইচটি ইমাম তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা স্কুল জোনিং করতে পারিনি। আমরা ব্যর্থ হয়েছি। ফরিদাবাদের শিক্ষার্থীরা কেনো উত্তরায় যাবে। আরেকটি আমার খুব প্রিয় বিষয় যে, পৃথিবীর সর্বত্র স্কুল বাস আছে। আমাদের দেশে কেনো স্কুল বাস করতে পারবে না। এটা করতে পারলে যানজট কমবে।’
স্কুল বাস প্রচলন ও স্কুল জোনিং করা উচিত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, ‘পরিবারের প্রতিটি সদস্যের জন্য গাড়ি কিনে অর্থ প্রদর্শন কমাতে হবে। এদের উপর বেশি বেশি হারে ট্যাক্স ধার্য করা উচিত।’
ভূমিদস্যুদের অত্যাচারে আমরা নির্যাতিত-মন্তব্য করে এইচ টি ইমাম বলেন, ‘দখল হওয়া জলাশয় আমাদের উদ্ধার করতে হবে। শুধু জলাশয় নয় সরকারি ভূমি, সরকারি জায়গাগুলো উদ্ধার করতে হবে। শুধু ভূমি দস্যু নয় অন্যান্য দস্যুরও তো অভাব নেই দেশে। এটিও বড় করণীয়।’
ঢাকার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক সামসুজ্জামান খান।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস