বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:৪৭ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
অবশেষে কাজী নজরুলকে জাতীয় কবির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি একদিনে ইউক্রেনের ১২০০ সৈন্য-যুদ্ধবিমানসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির দাবি রাশিয়ার সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শাহাদাত হোসেন খান হিলু মারা গেছেন বিজয়ের ব্যাটে রাজশাহীর প্রথম জয়, দ্বিতীয় হার ঢাকার বাদ মহিউদ্দিন চৌধুরী, শহীদ ওয়াসিমের নামে হলো চট্টগ্রামের উড়ালসড়ক উত্তেজনার পারদ ছড়ানো ম্যাচে মুখোমুখি রংপুর-বরিশাল প্লাস্টিক দূষণ নিয়ন্ত্রণে ইপিআর নির্দেশিকা প্রণয়ন করা হবে শিক্ষকতাকে প্রথম শ্রেণির পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে : হাসনাত ১৪ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি তেল কিনবে সরকার বাংলা‌দেশি-ভারতীয় আটক জেলেদের হস্তান্তর ৫ জানুয়া‌রি হাসপাতালে পরিবারের সবাই, অভিনেত্রী অঞ্জনা সংকটাপন্ন এক সমন্বয়কের নেতৃত্বে প্রশাসন ভবনে তালা, অবরুদ্ধ শিক্ষক-কর্মচারী আহত রাতুলকে বিজিবির সহায়তা বিএফআইইউয়ের সাবেক প্রধান মাসুদ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে মামলা রাঙ্গামাটিতে সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি, ইউপিডিএফ সদস্য নিহত বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ও মুজিব কিল্লা নির্মাণে দুর্নীতির অনুসন্ধান দুদকের জালে ডাকের সাবেক ডিজি সুধাংশু শেখর ভদ্র মধুমতীর পানি বাড়ায় ভাঙনের কবলে ‘স্বপ্ন নগর’ আশ্রয়ণ প্রকল্প যশোরের মাহফিলে আসুন, দেখা হবে, কথা হবে গর্ভবতী স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

জিহাদিদের মুখে কেন এই প্রশান্তির হাসি?

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় রবিবার, ৩ জুলাই, ২০১৬
  • ১৬১ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ, ডেস্ক: তথাকথিত ইসলামিক স্টেট যে পাঁচজন জিহাদির ছবি প্রকাশ করেছে তাদের দেখে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বিস্মিত হয়েছেন।
এই জিহাদিরা ঢাকার গুলশানে শুক্রবার রাতে একটি রেস্তোরাঁয় অতিথিদের জিম্মি করে ২০ জনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে হত্যা করেছে।

বাংলাদেশে এধরনের একটি হত্যাকাণ্ডের ঠিক কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কোন একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে জিহাদিদের ছবি এরকম ঘোষণা দিয়ে প্রকাশের ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি।

ফলে এটা পরিষ্কার জিহাদিদের ছবি প্রকাশের মধ্য দিয়ে আইএস যে বার্তাটি দিতে চেয়েছে সেটি অত্যন্ত জোরালো এবং স্পষ্ট।
স্পষ্ট ঘোষণা

বিশ্লেষকরা বলছেন, জিহাদিদের কাছে এই অভিযানের উদ্দেশ্য ছিলো অত্যন্ত পরিষ্কার। কিভাবে সেটা করতে হবে সেবিষয়েও তাদের ধারণা ছিলো স্পষ্ট।

সেনাবাহিনীর সাবেক একজন কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক সাখাওয়াৎ হোসেন বলেছেন, “ছবিগুলোতে হামলাকারীদের অভিব্যক্তিতে এটা স্পষ্ট তারা পরিষ্কার করেই জানতো তারা কোথায় যাচ্ছে, কি করতে যাচ্ছে এবং তাদের পরিণতি কি হতে পারে। তারা জানতে যে এই অভিযান শেষে তারা সেখান থেকে পালিয়েও যাবে না।”

আইএসের পোশাক

আইএসের পোশাক

ছবিগুলোতে দেখা যায় সবাই কালো পাঞ্জাবি পরে আছে। দেখতে একই রকমের পাঞ্জাবি। এসব পোশাক হয় একই জায়গা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে অথবা একই দর্জির কাছে বানানো হয়েছে।
কালো এই জামাটি আইএসের পোশাক।

সাখাওয়াৎ হোসেন বলেছেন, “পশ্চিমা নাগরিকদের শিরোশ্ছেদ করে হত্যার যেসব ভিডিও আইএস ইন্টারনেটে ছেড়েছে সেগুলোতে জিহাদিদেরকে এরকম কালো রঙের পোশাক পরে থাকতে দেখা যায়। এটা আইএসের জল্লাদ বা একজিকিউশনারের ইউনিফর্ম।”

160702170433_bangladesh_is_attackers_640x360_site_nocredit

এই কালো রঙের আরেকটি অর্থ হচ্ছে আত্মত্যাগ। অর্থাৎ তারা যে তাদের জীবন উৎসর্গ করতে যাচ্ছে সেটা তাদের পোশাকের মধ্যেও ঘোষণা করা হচ্ছে।

“খোরাসান ব্রিগেডের সদস্যরাও প্রতীক হিসেবে এধরনের পোশাক পরিধান করতো,” বলেন মি. হোসেন।
পেছনে কালো পতাকা

দেখা যাচ্ছে, অস্ত্র হাতে এই তরুণরা তাদের পেছনে আইএসের পতাকা রেখে দাঁড়িয়ে আছে। কালো পতাকায় শাদা রঙে লেখা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু।’

তাদের মাথায় আরবদের মতো করে ফেটি বা কেফেয়া বাঁধা।

মি. হোসেন বলেন, “আরব যোদ্ধারা এই কেফায়া পরে থাকে। রণক্ষেত্রে যারা যুদ্ধ করে তাদের কাছে এটি একটি প্রতীকের মতো।”
পেশাদারি কায়দায়

প্রত্যেকটি ছবিতে দেখা যায়, পাঁচজন জিহাদি প্রায় একই কায়দায় অস্ত্র ধরে হাস্যমুখে তাকিয়ে আছে ক্যামেরার দিকে।
দেখে মনে হয় তাদের সবার হাতে একটাই অস্ত্র। অত্যন্ত পেশাদারদের ভঙ্গিতে তারা সেই অস্ত্রটি ধরে রেখেছে।

160702170401_bangladesh_is_attackers_640x360_site_nocredit

নিরাপত্তা বিশ্লেষক সাখাওয়াৎ হোসেন বলেছেন, তাদের হাতে যে অস্ত্রটি দেখা যাচ্ছে সেটি একে মডেলের।
মধ্যপ্রাচ্যে জিহাদিদের লড়াই-এ এখন এই অস্ত্রটির প্রচুর ব্যবহার হচ্ছে।

তিনি বলেন, “বর্তমানে সন্ত্রাসীদের কাছে সবচে পছন্দের অস্ত্র হচ্ছে এই একে ফোরটি সেভেন। তাদের হাতে যে অস্ত্রটি দেখা যাচ্ছে সেটি একে ফোরটি সেভেন না হলেও, একে সিরিজের।”
দেখা যাচ্ছে, একজন বাদে বাকি প্রত্যেকেরই হাতের আঙ্গুল বন্দুকের ট্রিগার থেকে দূরে।

“এই পজিশনের অর্থ হচ্ছে তারা পুরোপুরি প্রস্তুত। হাত ট্রিগারের বাইরে। রাইফেলটা এমনভাবে রাখা যে এটিকে শুধু একটু উপরের দিকে তুলে গুলি করতে হবে ব্যাস এতোটুকুই,” বলেন মি. হোসেন।
প্রশিক্ষণ

বলা হচ্ছে, এই তরুণদের কেউ কেউ চার পাঁচ মাস ধরে নিখোঁজ ছিলো। ধারণা করা হচ্ছে, এই সময়ে তাদেরকে বড়ো ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
সাখাওয়াৎ হোসেন বলেন, “শুধু মগজ ধোলাই করা নয়, এরকম একটি অভিযানের জন্যে তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে পুরোপুরি প্রস্তুতও করা হয়েছে।”

160702170305_bangladesh_is_attackers_640x360_site_nocredit

“শুধু হত্যা করার ব্যাপারেই তাদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি। কিভাবে ইন্টারনেট পরিচালনা করতে হবে, ছবি পাঠাতে হবে, সেসব ছবি কিভাবে আপলোড করতে হবে, কিভাবে নিরীহ মানুষের মতো কথা বলতে হবে সেসব বিষয়েও তাদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এই অপারেশনের জন্যেই তাদেরকে পুরোপুরি প্রস্তুত করা হয়েছে,” বলেন মি. হোসেন।

কোথায় তাদেরকে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে সেটি একটি বড়ো প্রশ্ন। দেশের ভেতরে এমনকি মধ্যপ্রাচ্যে গিয়েও তারা প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকতে পারে।

সাখাওয়াৎ হোসেন বলেছেন, “আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ওয়াজিরিস্তান, ফ্রন্টিয়ার ও কাশ্মীরের মতো জায়গায় গিয়েও তাদের প্রশিক্ষণ হতে পারে। এসব জায়গায় যাওয়া আজকাল খুব কঠিন কিছু নয়। শুধু সীমান্ত পাড়ি দিতে হয়।”

“এছাড়াও আজকাল সশরীরে কোথাও গিয়ে প্রশিক্ষণ নিতে হয় না। জিহাদিদের কাছে ইন্টারনেটেও এই প্রশিক্ষণের মডিউল সরবরাহ করা হতে পারে। প্রশিক্ষণের ভিডিও মডিউলও পাওয়া যায়,” বলেন তিনি।
দেশের বাইরে প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকলে দেখতে হবে গত কয়েক বছরে এই ছেলেগুলো কোথায় ছিলো, কোথায় কোথায় গিয়েছিলো।

মুখে প্রশান্তির হাসি

মুখে প্রশান্তির হাসি

ছবিতে দেখা যায় যে তাদের সবার মুখে নির্মল হাসি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এর অর্থ হচ্ছে তারা পুরোপুরি মোটিভেটেড। তাদের ভেতরে কোনো সংশয় নেই, কোন রকমের দ্বিধাদ্বন্দ্ব নেই।

“তারা যে জোর করে হাসছে না সেটাও বোঝা যাচ্ছে। হাসি দেখে বোঝা যাচ্ছে, নিজের জীবন উৎসর্গ করতে সে প্রস্তুত। ইহজগতে নয়, পরকালে সে যা কিছু পাবে তার জন্যে সে প্রস্তুত হচ্ছে। তাদের সবার মুখে সেরকমই এক প্রশান্তির হাসি,” বলেন মি. হোসেন।

বাংলা৭১নিউজ/বিবিসি

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com