ক্ষণস্থায়ী পৃথিবীতে কিছুদিনের জন্য ক্ষমতা পেয়ে অনেকে দাম্ভিক হয়ে ওঠে, নিজেকে সর্বেসর্বা মনে করে এবং জুলুম-নির্যাতনে মেনে ওঠে। ভুলে যায় যে আল্লাহ অনুগ্রহ করে তাকে ক্ষমতা দান করেছেন। তিনি চাইলে তার ক্ষমতা ছিনিয়েও নিতে পারেন। আল্লাহর যখন ফয়সালা হয়, তখন দেখা যায় জালিমদের চক্রান্ত, ক্ষমতা কত দুর্বল!
কোরআনে আল্লাহ তাআলা অতীতের বিভিন্ন জালিম সম্প্রদায় ও ব্যক্তির কথা উল্লেখ করে বলেছেন, তাদের সবাইকেই আল্লাহর শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, আর কারুন, ফেরাউন ও হামানকে (আমি ধ্বংস করেছি) তাদের কাছে মুসা গিয়েছিল প্রমানাদিসহ। এরপরও তারা জমিনে অহংকার করেছিল; কিন্তু তারা (আমার আজাব) এড়াতে পারেনি। এদের প্রত্যেককেই তাদের অপরাধের কারণে আমি পাকড়াও করেছিলাম।
তাদের কারও প্রতি আমি প্রেরণ করেছি প্রস্তরসহ প্রচন্ড বাতাস, কাউকে পাকড়াও করেছে বিকট আওয়াজ, কাউকে আমি বিলীন করেছি ভূগর্ভে এবং কাউকে করেছি পানিতে নিমজ্জিত। আল্লাহ এমন নন যে, তাদের ওপর জুলুম করবেন বরং তারা নিজেরা নিজদের ওপর জুলুম করত। (সুরা আনকাবুত: ৩৯-৪০)
পরের আয়াতে আল্লাহ তাআলা অবিশ্বাসী জালিমদের পরিকল্পনা, স্বপ্ন ও দুনিয়াবি ক্ষমতাকে মাকড়সার জাল বোনার সাথে তুলনা করেছেন। মাকড়সা অত্যন্ত সুনিপুনভাবে জাল বোনে। অনেক পোকামাকড় তার জালে ধরা পড়ে জীবন হারায়, তার খাদ্য হয়। সে হয়তো ভাবে খুব শক্তিশালী জাল সে বুনেছে। জালিমদের অবস্থাও তাই।
আল্লাহ তাআলা বলেন, যারা আল্লাহ ছাড়া অন্যদের অভিভাবক হিসেবে গ্রহণ করে, তাদের দৃষ্টান্ত মাকড়সার মতো, যে নিজের জন্য ঘর বানায় আর নিশ্চয় সবচেয়ে দুর্বল ঘর হলো মাকড়সার ঘর, যদি তারা জানত। (সুরা আনকাবুত: ৪১)
আসমানসমূহ ও পৃথিবীসহ সমগ্র বিশ্ব জগতের সর্বময় ক্ষমতার প্রকৃত মালিক আল্লাহ তাআলা। প্রকৃত রাজত্ব, বাদশাহি ও সম্মান তারই। তিনি যাকে চান সম্মান ও ক্ষমতা দান করেন, যাকে চান ক্ষমতাচ্যুত করেন, অসম্মানিত করেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, বল, ‘হে আল্লাহ, রাজত্বের মালিক, আপনি যাকে চান রাজত্ব দান করেন, আর যার থেকে চান রাজত্ব কেড়ে নেন এবং আপনি যাকে চান সম্মান দান করেন। আর যাকে চান অপমানিত করেন, আপনার হাতেই কল্যাণ। নিশ্চয় আপনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান’। (সুরা আলে ইমরান: ২৬)
আরেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, আসমানসমূহ ও জমিন এবং তাদের মধ্যে যা কিছু আছে তার রাজত্ব আল্লাহরই এবং তিনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান। (সুরা মায়েদা: ১২০)
বাংলা৭১নিউজ/এসএম