বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার আউশভিৎস নাৎসি বন্দীশিবিরের রক্ষী ৯৪ বছর বয়সী রাইনহোল্ড হ্যানিংকে যুদ্ধাপরাধে কারাদণ্ড দিয়েছে জার্মানির একটি আদালত।
বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ওই ক্যাম্পে অন্তত এক লাখ ৭০ হাজার মানুষকে হত্যায় সহযোগিতার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে বলে বিবিসি জানিয়েছে। গত বছরও ওই শিবিরের এক কর্মীর কারাদণ্ড হয়।
নাৎসি অধিকৃত পোল্যান্ডের আউশভিৎস-বারকেনাউ ক্যাম্পে ১৯৪০ থেকে ১৯৪৫ সালের মধ্যে ১০ লাখের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়, যাদের অধিকাংশই ইউরোপীয় ইহুদি। এছাড়া রোমা (জিপসি) প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, সমকামী, ভিন্ন মতাবলম্বী, অন্যান্য পোলিশ ও সোভিয়েত বন্দিদের হত্যা করা হয় সেখানে।
১৯৪২ থেকে ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত এই বন্দিশিবিরে রক্ষীর দায়িত্বে ছিলেন হ্যানিং। সেখানে কী ঘটছিল তা জানতেন বলে স্বীকার করেছেন তিনি।
জার্মানির উত্তরাঞ্চলীয় ডেটমোল্ড শহরে গত ফেব্রুয়ারিতে হ্যানিংয়ের বিচার শুরু হয়, যার রায় এলো শুক্রবার।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের ভাষ্য অনুযায়ী, রাইনহোল্ড হ্যানিং ১৯৪০ সালে ১৮ বছর বয়সে স্বেচ্ছায় নাৎসিদের এসএস বাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরুর দিকে তিনি পূর্ব ইউরোপে লড়াইয়ে অংশ নেন।
১৯৪২ সালের জানুয়ারিতে তাকে আউশভিৎস বন্দিশিবিরে বদলি করা হয়। সেখানে ১৯৪৪ সালের জুন পর্যন্ত রক্ষী হিসেবে কাজ করেন তিনি।
দখলকৃত পোল্যান্ড থেকে বন্দিদের নিয়ে আসার পর হ্যানিং তাদের গ্রহণ করতেন এবং অনেক বন্দিকে তিনি গ্যাস চেম্বারে পথ দেখিয়ে নিয়ে যান বলে আদালতের শুনানিতে উঠে আসে।
তবে হ্যানিংয়ের আইনজীবীরা আদালতে বলেন, তাদের মক্কেল ব্যক্তিগতভাবে কখনও কাউকে হত্যা বা নির্যাতন করেননি।
এই যুদ্ধাপরাধের বিচারে কারও বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণের জন্য আগে জার্মান প্রসিকিউরটরদের আসামির সরাসরি হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার তথ্য-প্রমাণ আদালতে হাজির করতে হত।
তবে ২০১১ সালে জন ডেমিয়ানুকের বিরুদ্ধে রায়ে বিচারক বলেন, নাৎসি অধিকৃত পোলান্ডে বন্দিশিবিরের কর্মী হিসেবে তার তৎপরতাই গণহত্যায় সম্পৃক্ততার প্রমাণ দেয়।
গত বছর জার্মানির একটি আদালত আউশভিৎসে অন্তত তিন লাখ মানুষকে হত্যায় সহযোগিতার দায়ে ৯৪ বছর বয়সী অস্কার গ্রোয়েনিংকে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল।
‘আউশভিৎসের বুক-কিপার’ নামে পরিচিত জার্মানির নাগরিক গ্রোয়েনিং ওই বন্দিশিবিরে হিসাবরক্ষকের কাজ করতেন। তার কাজ ছিল বন্দি শিবিরটিতে নিয়ে আসা বন্দিদের কাছ থেকে জব্দ করা টাকা-পয়সার হিসাব রাখা।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইস