শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:২১ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুলসহ ৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র প্রকাশের দাবিতে লিফলেট বিতরণ এবার কারও পক্ষ নিয়ে কাজ করলে অসুবিধা হবে : কর্মকর্তাদের সিইসি অল্প কিছুদিনের মধ্যে দেশে ফিরবেন তারেক রহমান: মির্জা ফখরুল ইসলামী ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে টাকা চুরি শেখ হাসিনার দুর্নীতি খুঁজে বের করতে টাস্ক ফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত ডিএমপির ১২ ডিসিকে বদলি ‘বৃহত্তর ইসরাইলের’ মানচিত্র প্রকাশ, আরব দেশগুলোর কড়া প্রতিবাদ বিমানবন্দরে রক্তাক্ত সেই প্রবাসীকে জরিমানা, হতে পারে জেলও ৩০ জুনের আগেই মহার্ঘভাতা ঘোষণা মানিকগঞ্জে ডিসির রুমের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান দাবি মানার আল্টিমেটাম দিয়ে ‌‌শাহবাগ ছাড়লেন চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা শরীয়তপুরে থানা থেকে ওসির মরদেহ উদ্ধার নিক্সন ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবে ৩ হাজার ১৬২ কোটি টাকা লেনদেন শহীদ মিনারের পর শাহবাগ অবরোধ বিডিআর সদস্যের স্বজনদের জেনেভা ক্যাম্পের আলোচিত সন্ত্রাসী চুয়া সেলিম গ্রেপ্তার মা‌র্কি‌নিদের হয়ে ঢাকায় বিশেষ দা‌য়িত্ব সামলাবেন ট্র্যাসি জ্যাকবসন বিসিএসে বাদ পড়া ২২৭ জনের বেশিরভাগই চাকরিতে যোগ দিতে পারবেন রাশিয়ায় বিমানবাহিনীর তেলের ডিপোয় ইউক্রেনের হামলা হাইভোল্টেজ ম্যাচে টস জিতে বরিশালকে ব্যাটিংয়ে পাঠালো রংপুর

জাকির নায়েক কি জঙ্গিবাদের মদতদাতা?

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় শুক্রবার, ৮ জুলাই, ২০১৬
  • ১৯৮ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ, ডেস্ক: ড. জাকির নায়েক আবার বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে৷ গুলশান ট্র্যাজেডির পর তাঁর বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদকে মদত দেয়ার অভিযোগ উঠেছে৷ ভারতের মহারাষ্ট্রেও শুরু হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত৷ জাকির নায়েক কি সত্যিই জঙ্গিবাদের মদতদাতা?

গত কয়েকদিন ধরে আবার সারা বিশ্বেই আলোচনা-সমালোচনায় আছেন ভারতীয় ইসলামি চিন্তাবিদ ড. জাকির নায়েক৷ সর্বশেষ খবর, ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকার তাঁর বিষয়ে তদন্ত শুরুর নির্দেশ দিয়েছে পুলিশকে৷

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, মুম্বইয়ে জাকির নায়েকের ‘ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন’-এর অফিসের বাইরে ইতিমধ্যে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে৷ ভারতের এনডিটিভি এবং হিন্দুস্থান টাইমস জানিয়েছে, বাংলাদেশ সরকারের দাবি পূরণ করতেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে মহারাষ্ট্র সরকার৷

গত ১ জুলাই গুলশানের রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার পর জাকির নায়েকের নাম নতুন করে আলোচিত হতে থাকে বাংলাদেশে৷ নিহত জঙ্গিদের কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে নিয়মিত জাকির নায়েকের ‘উগ্র’ বক্তব্য শেয়ার করতেন – এ বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরই নতুন করে শুরু হয় জাকির নায়েককে নিয়ে বিতর্ক৷

ড. জাকির নায়েককে নিয়ে বিতর্ক নতুন কিছু নয়৷ ভারতের মহারাষ্ট্রেই জন্ম নেয়া এই ইসলাম বিষয়ক বক্তা আগে নিষিদ্ধও হয়েছেন৷

গত বছর উসকানিমূলক কথাবার্তা বলার অভিযোগে ভারতের কর্নাটকা রাজ্যে তাকে নিষিদ্ধ করা হয়৷ শুধু তাকেই নয়, ভারতের মৌলবাদী হিন্দুদের দল আরএসএস-এর নেতা প্রবীন টোগারিয়াকেও তখন নিষিদ্ধ করেছিল কর্ণাটকা সরকার৷

২০১০ সালে ব্রিটেনও জাকির নায়েককে নিষিদ্ধ করে৷ এর তিন বছর পর বিবিসি-তে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়৷ সেখানে বলা হয়, জাকির নায়েকের বক্তব্যে অনেক ‘অগ্রহণযোগ্য’ উপাদান থাকায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাঁকে নিষিদ্ধ করেছে, কিন্তু তারপরও ব্রিটেনের লাইব্রেরিতে তাঁর বই রয়েছে৷

প্রতিবেদনে আরো দাবি করা হয়, লন্ডনের পাবলিক লাইব্রেরিতে জাকির নায়েকের অন্তত এমন তিনটি বই রয়েছে, যেগুলোতে তিনি জঙ্গিবাদ, নারী এবং ইহুদিদের বিষয়ে চরম আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন৷ প্রতিবেদক এড ডেভি জানান, উর্দুতে লেখা একটি বইয়ে জাকির নায়েক বলেছেন, তিনি ‘মৌলবাদী হতে পেরে গর্বিত’৷ প্রতিবেদকের আরো দাবি ছিল, জাকির নায়েক বলেছেন, ‘‘প্রত্যেক মুসলমানেরই জঙ্গি হওয়া উচিত৷”

ব্রিটেন ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র এবং মালয়েশিয়াতেও ড. জাকির নায়েককে নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷

তবে ড. জাকির নায়েক সবসময়ই উসকানিমূলক বক্তব্য দেয়া এবং তথাকথিত ইসলামিক স্টেট বা আইএস অথবা অন্য কোনো জঙ্গি সংগঠনকে সমর্থন দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন৷

কিন্তু গুলশান ট্র্যাজেডির পর আবার উঠেছে সেই প্রশ্ন৷ ড. জাকির নায়েক কি সত্যিই আইএস-কে সমর্থন করেন? আইএস সম্পর্কে তাঁর কী বক্তব্য?

proxy

এ নিয়ে সংশয় বা সন্দেহের অবকাশ জাকির নায়েকই রাখেননি৷ এক অনুষ্ঠানে আইএস সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে আইএস-এর অন্য নাম আইসিস-এর পূর্ণাঙ্গ রূপ ‘ইসলামিক স্টেট অফ ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া’কে বিকৃত করে ড. জাকির নায়েক বলেন, ‘‘আমি মনে করি, তারা আসলে অ্যান্টিইসলামিক স্টেট অফ ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া৷” সঙ্গে সঙ্গেই উপস্থিত শ্রোতাদের কেউ কেউ হাততালি শুরু করেন৷

তখাকথিত ইসলামিক স্টেটকে ‘অ্যান্টিইসলামিক’, অর্থাৎ ইসলামবিরোধী বলার পক্ষে যুক্তি দেখাতে গিয়ে জাকির নায়েক বলেন, ‘‘আমি এমন মনে করি, কারণ, ইসলামপন্থি কোনো ব্যক্তি কখনোই কোনো নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করতে পারেনা৷”

পবিত্র কোরআনের আয়াত উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘‘কোরআনে বলা আছে, যদি কেউ কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে হত্যা করে, তাহলে নিহত ব্যক্তি মুসলিম-অমুসলিম যা-ই হোন না কেন, সেই হত্যা পুরো মানবতাকেই হত্যার শামিল৷ একইভাবে কেউ যদি একজন মানুষকে রক্ষা করে, তাহলে সেটাও পুরো মানবতাকেই রক্ষা করার মতো৷এখন এ সব লোক, যারা নিজেদের ‘আইএস’ বলে দাবি করে, তারা নিরপরাধ মানুষকেই তো হত্যা করছে৷

নিরপরাধ অমুসলিমদের হত্যা করার কথাও কোরআনে বলা নেই৷ তাই আমার মতে, তারা (আইসিস বা আইএসআইএস বা আইএস) মুসলমানই হতে পারেনা৷ সে-ই মুসলমান, যে কিনা সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে নিজেকে সমর্পণ করে৷ কোনো মুসলমান কখনোই কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে হত্যা করবেনা৷ তাই আমার মতে, তারা (আইএস) অ্যান্টিইসলামিক স্টেট অফ ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া৷”

সুতরাং, আইএস-এর বিষয়ে ড. জাকির নায়েকের বক্তব্য মোটামুটি স্পষ্ট৷ তিনি মনে করেন, আইএস নিরীহ মানুষকে হত্যা করছে বলে তারা মুসলমানই নয়, তারা বরং ইসলামবিরোধী৷
কিন্তু এই বক্তব্যই কি তাঁর জঙ্গিবাদবিরোধী অবস্থান স্পষ্ট করে?

ড. জাকির নায়েক জঙ্গিবাদবিরোধী কিনা সে সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে অন্তত আরেকটি ভিডিও সবারই দেখা দরকার৷ এই ভিডিওটি ২০০৬ সালের৷ তখন আরেক অনুষ্ঠানে আল-কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেন সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিলেন এক তরুণ৷ জবাবে জাকির নায়েক কিন্তু লাদেনকে সমর্থনই করেছেন৷

নিচের ইউটিউব ভিডিওতেই রয়েছে লাদেন সম্পর্কে তাঁর সম্পূর্ণ বক্তব্য৷ সেখানে তিনি বলেছেন, ‘‘একজন মুসলমান প্রশ্ন করেছেন, ওসামা বিন লাদেন যা করছেন, ঠিক করছেন কিনা৷ আপনি কি নিজে যাচাই করে দেখেছেন? নাইজেরিয়ায় বোমা বিস্ফোরণ৷ কে করেছে? ওসামা বিন লাদেন৷ হেডলাইন৷ তিনি করেছেন কিনা আমরা তা জানি না৷ তবে আমার মতামত জানতে চাইলে বলবো, যদি তিনি সত্যের পক্ষে থেকে থাকেন, তিনি যদি ইসলামের শত্রুর সঙ্গে লড়াই করেন, আমি তাঁর পক্ষে৷”

সেই অনুষ্ঠানে ড. জাকির নায়েক একটা কথাই বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে লাদেন আদৌ খারাপ কোনো কাজ করছেন কিনা তা তিনি জানেন না৷ এমন অবস্থান থেকেই তিনি বলেন, ‘‘আমি জানিনা তিনি (লাদেন) কী করছেন৷ আমি তাঁর সংস্পর্শে নেই৷ ব্যক্তিগতভাবে আমি তাঁকে চিনি না৷ আমি শুধু খবরের কাগজ পড়ি৷ তিনি যদি সন্ত্রাসীদের সন্ত্রস্ত করেন, তিনি যদি সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী অ্যামেরিকাকে সন্ত্রস্ত করে থাকেন, আমি তার পক্ষে আছি৷

প্রত্যেক মুসলমানেরই সন্ত্রাসী হওয়া উচিত৷ ব্যাপারটা হলো, তিনি (লাদেন) যদি সন্ত্রাসীদের মনে ত্রাস ছড়িয়ে থাকেন, তিনি তাহলে ইসলামই অনুসরণ করছেন৷ আসলে তিনি তা করছেন কিনা, তা আমি জানি না৷”

ইসলামি চিন্তাবিদ হলেও নিজের বক্তব্যে ড. জাকির নায়েক কিন্তু বলেছেন, ওসামা বিন লাদেন কী করেছেন তা তিনি জানেন না৷ তিনি আরো বলেছেন, লাদেন যদি সন্ত্রাসীদের মনে ত্রাস ছড়িয়ে থাকেন তাহলে তিনি তার পক্ষে আছেন৷

প্রশ্ন হলো, নিরীহ মানুষ হত্যা করে বলে আইএস-কে ‘ইসলামবিরোধী’ বললেও, লাদেন সম্পর্কে জাকির নায়েকের এমন বক্তব্য জঙ্গিবাদকে উসকে দেয়ার মতো কিনা৷
আপনার কী মনে হয়?

বাংলা৭১নিউজ/সূত্র:ডয়েচে ভেলে

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৫ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com