হজরত মুহাম্মদ সা.-কে নবুয়ত দেওয়ার আগে জিনেরা আকাশে গিয়ে চুপিসারে এক জায়গায় বসে ফেরেশতাদের কথাবার্তা শুনতো এবং সেখান থেকে ফিরে এসে গণকদের কাছে তথ্য সরবরাহ করতো। গণকেরা সেই তথ্যের সঙ্গে আরও অনেক মিথ্যা, বানোয়াট কথা মিলিয়ে চটকদারভাবে তা মানুষের সামনে উপস্থাপন করতো।
কিন্তু রাসূল সা.-কে নবুয়ত দান এবং কোরআন অবতীর্ণ হওয়া শুরুর পর কোরআনের সংরক্ষণের জন্য আকাশে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়। এর ফলে জিনদের তথ্য সংগ্রহের যাবতীয় সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
মহানবী সা. নবুয়ত লাভের পর এক রাতে জিনেরা ফেরেশতাদের কথা শোনার জন্য আসমানে গেলে তাদের ওপর উল্কাপিণ্ড নিক্ষেপ করে ফেরেশতারা। এরপর থেকে তাদের জন্য আর আসমানের তথ্য সংগ্রহ সম্ভব হয়নি।
জিনেরা ফেরেশতাদের উল্কাপিণ্ডের আঘাতে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে ইবলিশের কাছে এই ঘটনা খুলে বললো। সব শুনে ইবলিশ বললো, পৃথিবীর প্রতিটি জায়গা থেকে তোমরা আমাকে এক মুষ্টি মাটি এনে দাও, আমি তা পরীক্ষা করে দেখবো।
জিনেরা মাটি এনে দিলে ইবলিশ পরীক্ষা করে বললো, মক্কার কোনো নতুন পরিবর্তনের কারণে এমনটা হচ্ছে। তখন জিনদের সাত সদস্যের একটি দলকে মক্কায় পাঠালো সে। তারা এসে দেখলো, মুহাম্মদ সা. মসজিদুল হারামে দাঁড়িয়ে নামাজের মধ্যে কোরআন তিলাওয়াত করছেন। তারা সেই তিলাওয়াত শুনে সবাই মুসলমান হয়ে গেল।
এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে,
وَّ اَنَّا لَمَسۡنَا السَّمَآءَ فَوَجَدۡنٰهَا مُلِئَتۡ حَرَسًا شَدِیۡدًا وَّ شُهُبًا ۙ﴿۸﴾وَّ اَنَّا كُنَّا نَقۡعُدُ مِنۡهَا مَقَاعِدَ لِلسَّمۡعِ ؕ فَمَنۡ یَّسۡتَمِعِ الۡاٰنَ یَجِدۡ لَهٗ شِهَابًا رَّصَدًا ۙ﴿۹﴾ وَّ اَنَّا لَا نَدۡرِیۡۤ اَشَرٌّ اُرِیۡدَ بِمَنۡ فِی الۡاَرۡضِ اَمۡ اَرَادَ بِهِمۡ رَبُّهُمۡ رَشَدًا ﴿ۙ۱۰﴾
আর আমরা আকাশের খবর নিতে চেয়েছিলাম কিন্তু আমরা সেটাকে পেলাম কঠোর প্রহরী বেষ্টিত ও জ্বলন্ত উল্কাপিন্ডে পরিপূর্ণ।
আমরা (আগে) সংবাদ শুনার জন্য আকাশের বিভিন্ন ঘাঁটিতে বসতাম, কিন্তু এখন কেউ সংবাদ শুনতে চাইলে তার উপর নিক্ষেপের জন্য সে জ্বলন্ত অগ্নিকুন্ডকে লুকিয়ে থাকতে দেখে।
আমরা জানি না (এই পরিবর্তিত অবস্থার মাধ্যমে) পৃথিবীবাসীর অকল্যাণই চাওয়া হচ্ছে, না তাদের প্রতিপালক তাদেরকে সরল সঠিক পথ দেখাতে চান। (সূরা জিন, আয়াত : ৮-১০)
বাংলা৭১নিউজ/এসএম