জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা জানিয়েছে, মিয়ানমারের ক্ষমতা দখলের পর থেকে দেশটির জান্তা বাহিনী ‘চিরস্থায়ী মানবাধিকার সংকট’ সৃষ্টি করেছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা আরও জানিয়েছে সাধারণ মানুষ হত্যার পাশাপাশি সেনাবাহিনীকে সম্পূর্ণ দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানায়, শুক্রবার(৩ মার্চ) মিয়ানমারের সেনা শাসনের ২ বছর নিয়ে করা এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার ভলকের তুর্ক মিয়ানমারের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে এক বিবৃতিতে জানান , ‘দায়মুক্তির সুযোগ নিয়ে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী কোন কিছুকেই পাত্তা দিচ্ছে না। এখনই কোন পদক্ষেপ নেয়া না হলে, ভবিষ্যতে ভয়ংকর বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে মিয়ানমার।’
২০২২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত মিয়ানমারের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে প্রস্তুত করা হয়েছে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা।
জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জান্তা সরকার নিজের দেশের জনগণকে প্রতিপক্ষ বানিয়ে তাদের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ করছে ।২০২২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত মিয়ানমারের উত্তরপশ্চিমাঞ্চল ও দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় বিভিন্ন প্রদেশে নির্বিচারে বিমান হামলা, গোলা বর্ষণ ও গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে দিয়েছে জান্তা সেনারা। জান্তা বাহিনীর হামলায় বিপুলসংখ্যক বেসামরিক মানুষ ইতোমধ্যে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং চরম মানবেতর অবস্থায় এখন দিন কাটাচ্ছেন তারা।
জাতিসংঘের এই প্রতিবেদন নিয়ে জান্তা বাহিনীর মুখপাত্রদের প্রতিক্রিয়া জানতে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে রয়টার্স। তবে রয়টার্সের সেই যোগাযোগ ব্যর্থ হয়েছে।
২০২০ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অং সান সু চিসহ তার দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতার করে সেনাবাহিনী। পরে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। সেই জরুরি অবস্থা এখনও শেষ হয়নি।
এদিকে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হলে সহিংস দমননীতি গ্রহণ করে তারা। সহিংসতায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন কয়েক হাজারের বেশি বিক্ষোভকারী। সহিংসতার জেরে কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী একত্রিত হয়ে গঠন করে পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ)। এরপর থেকেই জান্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত রয়েছে তারা।
বাংলা৭১নিউজ/আরএম