বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
সবাই একসঙ্গে শান্তিতে থাকতে চাই : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্মাণাধীন ভবনের ছাদে থেকে পড়ে বিদ্যুতায়িত, দুই শ্রমিকের মৃত্যু ‘আমাদের একমাত্র লক্ষ্য শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা’ বাংলাদেশ সীমান্তে অতিরিক্ত বিএসএফ মোতায়েন সৌদিতে সড়কে প্রাণ গেল ময়মনসিংহের দুই যুবকের, পরিবারে শোকের মাতম বিএনপিকর্মী মকবুল হত্যা: সাবেক মুখ্য সচিব নজিবুর কারাগারে প্রশাসন নিরপেক্ষ করতে ‘স্বৈরাচারের দোসরদের’ অপসারণ করুন সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিউল্লাহ শফিকে পুলিশে দিল ছাত্র-জনতা বইমেলায় স্টলের জন্য আবেদন করা যাবে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদকের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার নতুন সূচি প্রকাশ ভারত থেকে ২৫ হাজার টন চাল আসছে বৃহস্পতিবার আইএসও/আইইসি ২৭০০১:২০২২ সনদ অর্জন করলো পূবালী ব্যাংক কলকাতার কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন পি কে হালদার নিজ দেশে ফিরে যেতে রোহিঙ্গা মুফতি-ওলামাদের সমাবেশ ভিডিও: কাজাখস্তানে উড়োজাহাজ বিধ্বস্তে নিহত অন্তত ৪০ উপকূলীয় মানুষের নিরাপত্তা ও জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে কোস্টগার্ড দেখে নিন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সূচি, বাংলাদেশের ম্যাচ কবে কোথায়? ইসলামী ব্যাংকে নিয়োগ, স্নাতক পাসেও আবেদনের সুযোগ

চিকিৎসকদের কর্মবিরতি: খুলনায় ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্যসেবা

খুলনা প্রতিনিধি:
  • আপলোড সময় শুক্রবার, ৩ মার্চ, ২০২৩
  • ১১৪ বার পড়া হয়েছে

শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. শেখ নিশাত আব্দুল্লাহ’র উপর হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আজ শুক্রবারও কর্মবিরতি পালন করছেন চিকিৎসকরা। ফলে শুক্রবার নগরীর বিভিন্ন ক্লিনিক ও ব্যক্তিগত চেম্বারে চিকিৎসকদের অ্যাপয়েনমেন্ট বাতিল করা হয়েছে।

এদিকে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের বিষয়ে আলোচনা করতে খুলনা এসেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল। আজ দুপুর ২টায় বিএমএ ভবনে চিকিৎসক নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন তারা। সেখানে বিএমএ, ক্লিনিক মালিকসহ চিকিৎসক সংশ্লিষ্ট সকল সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।

ডা. নিশাত আবদুল্লাহ’র ওপর হামলার প্রতিবাদে বুধবার সকাল ৬টা থেকে কর্মবিরতি শুরু করেন চিকিৎসকরা। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় বাংলাদেশ মেডিকেল এ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) জরুরি সভা শেষে কর্মবিরতি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন সংগঠনের জেলা সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে সাধারণ মানুষ, রোগী ও তাদের স্বজনরা। বিষয়টি সরকারের উচ্চমহলেও উদ্বেগ তৈরি করে। তারই প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দলকে খুলনায় পাঠানো হয়েছে। দুপুর ২টায় তারা আমাদের সঙ্গে বসবে। এরপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, চিকিৎসকদের টানা কর্মবিরতিতে সরকারি হাসপাতাল ও বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। প্রতিদিনই দূর দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা চিকিৎসা নিতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন। হাসপাতালে ভর্তি রোগীরাও সেবা পাচ্ছেন না।

জানা গেছে, শুক্রবার ঢাকার বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক খুলনার বিভিন্ন ক্লিনিকে রোগী দেখেন। বৃহস্পতিবার রাতে ধর্মঘটে একাত্মতা প্রকাশ করে তাদের পূর্বনির্ধারিত অ্যাপয়েনমেন্ট বাতিল করেছেন তারা। এছাড়া বৃহস্পতিবার কর্মবিরতি প্রত্যাহার হবে-এমন ধারণা থেকে অনেকে চিকিৎসক শুক্রবার ব্যক্তিগত চেম্বারের রোগীদের সিরিয়াল নিয়েছেন, সেগুলোও বাতিল করা হয়েছে।

দেখা গেছে, প্রতি শুক্রবার নগরীর ডক্টরস পয়েন্ট হাসপাতালে রোগী দেখেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞ আবদুল্লাহ মামুন। বড়দের পাশাপাশি শিশুদের নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞ হিসেবে খ্যাতি রয়েছেন তার। কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই রোগীরা তার অ্যাপয়েনমেন্ট নেন। বৃহস্পতিবার রাতে তিনি সকল অ্যাপয়েনমেন্ট বাতিল করেছেন। এতে বিপাকে পড়েছেন রোগীরা।

একইভাবে খ্যাতনামা স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. রুহুল কুদ্দুসসহ আরও অনেকেই শুক্রবারের অ্যাপয়েনমেন্ট বাতিল করেছেন। প্রতি শুক্রবার তাদের পরামর্শ নিতে শতাধিক রোগী আবেদন করেন।

নগরীর শেখপাড়ার হক নার্সিং হোমে ডা. নিশাত আব্দুল্লাহ কর্তৃক পুলিশ পত্নী নুসরাতকে শ্লীলতাহানী চেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন বুধবার। এর আগে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে মঙ্গলবার রাতে মামলা করেন ডা. নিশাত আব্দুল্লাহ। আর এরই জের ধরে বিভাগীয় শহর খুলনার সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে হাজার হাজার রোগী চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুরও অভিযোগ করছেন রোগীর স্বজনরা। টানা দুদিন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসক না থাকায় দুর্ভোগে পড়েন রোগীরা। অন্যদিকে, চিকিৎসকের উপর হামলার অভিযোগে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের এএসআই নাইমুজ্জামানকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবারও খুলনার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিকে কর্মবিরতি পালন করেন চিকিৎসকরা। বিকেলে বিএমএ খুলনার কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক শেষে এ কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেয়া হয়। শনিবার সন্ধ্যায় সাধারণ সভার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবে বিএমএ খুলনা।

অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী পুলিশ পত্নী। তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, ডা. নিশাত আব্দুল্লাহ আমার স্বামীর বিরুদ্ধে ২৫শে ফেব্রুয়ারি রাতে যে এজাহার দায়ের করেন তাতে রাত ১০টায় এবং ডা. বাহার সাংবাদিক সম্মেলনে রাত ১টায় হামলা ও ভাংচুরের কথা উল্লেখ করেছেন। কিন্তু আমার কাছে রাত ১১টা ৫৪ মিনিটের ৪৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ রয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে নিশাত আব্দুল্লাহ সম্পূর্ণ সুস্থ এবং ওটি ভাঙচুরের কোনো আলামত নেই। আমার প্রশ্ন কখন মারধর ও ভাঙচুর হলো?

তিনি বলেন, মিথ্যা মামলা দিয়ে আমার স্বামীকে হয়রানি করা হচ্ছে। আমার মেয়েকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। ফলে আমার মেয়ের হাতের যে অবনতি হচ্ছে এর দায়ভার কে নেবে? শুধু আমার মেয়ে নয়, গুটি কয়েক চিকিৎসক কর্মবিরতি দিয়ে সাধারণ মানুষকে চিকিৎসা না দিয়ে তাদের জীবন নিয়ে যে ছেলেখেলা করছেন তার দায়ভারকে নেবে?

সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে নুসরাত আরা ময়না বলেন, মেয়ে যেন অতি দ্রুত সুচিকিৎসা পায়, সে ব্যবস্থা করা হোক। তিনি বলেন, বিএমএর কর্মকর্তারা শুধুমাত্র এক পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতেই যে কর্মবিরতি পালন করছে সেটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও রাষ্ট্রীয় আচার-আচরণের পরিপন্থী। আমার শ্লীলতাহানি ও স্বামীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির জন্য ডা. নিশাত আব্দুল্লাহর কঠোর বিচার দাবি করছি।

নুসরাত আরা ময়না বলেন, গত ২০ জানুয়ারি ডা. নিশাত আব্দুল্লাহ যখন জানতে পারলেন যে হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরটি আমার, তখন থেকে মেসেজ ও কল দেওয়া শুরু করেন। তিনি বলেন, ওই দিন (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে ভাংচুর অথবা চিকিৎসককে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। বরং আমার স্বামীকে মারধর করেছে।

এদিকে সাংবাদিক সম্মেলনে বিএমএ খুলনার সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম বলেন, ‘পুলিশকে আমরা প্রতিপক্ষ বানাতে চাই না। কিন্তু পুলিশ নাঈমের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে বিচার চাইতে চাইতে আর পারছি না। তার কাছে আর কোনও আবেদন করবো না, স্মারকলিপিও দেবো না। এবার স্মারকলিপি দেবো প্রধানমন্ত্রীর কাছে। আর পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অভিযুক্ত এএসআই নাঈমকে গ্রেফতার না হওয়া ও ডা. নিশাত আব্দুল্লাহর নামে মিথ্যা যৌন হয়রানির মামলা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মবিরতি চলবে।

সোনাডাঙ্গা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মমতাজুল হক জানান, দু’টি মামলার তদন্ত চলছে। এখনো কাউকে আটক-গ্রেফতার করা হয়নি।

বাংলা৭১নিউজ/এবি

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com