শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:৫৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
আফগান সীমান্তে ‘৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র’ হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান, দাবি রিপোর্টে সাম্প্রদায়িক হামলার অভিযোগে ১১৫ মামলায় গ্রেফতার ১০০ চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তের ওপারে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি আহত ছাত্রাবাস থেকে রুয়েট শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ দুই পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সংঘর্ষ, আহত অর্ধশতাধিক বিএনপি নেতার মুক্তির দাবিতে গাজীপুরে সমাবেশ, মহাসড়কে তীব্র যানজট একদিন বিশ্বের মানুষ ভারতের ভিসার জন্য লাইনে দাঁড়াবে: মোদি নির্বাচন হলে সব সংকট কেটে যাবে: মির্জা ফখরুল মামলার তদন্তে পুলিশ নয়, আলাদা সংস্থার প্রস্তাব কমিশনের দ্রুত নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে সরকার কাজ করছে তামিমের অবসর : যা বলছেন মুশফিক-রিয়াদ-শান্তরা মেঘনায় দুই স্পিডবোটের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত বেড়ে ৩ এ কে আজাদ শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান হবিগঞ্জে বাস চাপায় তিন নারী শ্রমিক নিহত ‘গণমানুষের ক্যান্সার হাসপাতাল’ তৈরিতে তহবিল সংগ্রহ শুরু যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি চুক্তি বাস্তবায়নে ‘কাছাকাছি অবস্থানে’ হামাস-ইসরাইল বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পলাতক আ.লীগ নেতা আনোয়ারুজ্জামানের সাক্ষাৎ আ.লীগের নিবন্ধন থাকবে কিনা ‘সময় বলে দেবে’: সিইসি ক্যাম্প থেকে পালিয়ে আসা ৭ রোহিঙ্গা ফেনীতে আটক

চিংড়ি চাষের জন্যই বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে ইলিশ

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় রবিবার, ১৭ জুলাই, ২০১৬
  • ১৫৫ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা : চিংড়ি ও ইলিশ–বাঙালির খাবার পাতে এই দুটোই খুব প্রিয় মাছ। কিন্তু চিংড়ি চাষের দাপটেই না কি ইলিশ ক্রমশ নিশ্চিহ্ন হতে বসেছে।

ইলিশ কেন বিপন্ন, তা নিয়ে করা গবেষণাটিতে বলা হচ্ছে, মাছের ভেড়িতে একটামাত্র বাগদা চিংড়ি তৈরি করতে নষ্ট হচ্ছে প্রায় শ’চারেক ইলিশের ডিম। এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানীরা বলেছেন, ইলিশকে বাঁচাতে হলে মোহনার কাছে বা অগভীর সমুদ্রে বিশেষ ধরনের কিছু জাল নিষিদ্ধ করা ছাড়া কোনও উপায় নেই।

গবেষণাটি করেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ওশানোগ্রাফিক স্টাডিজ বা সমুদ্রবিদ্যা বিভাগ। ওই বিভাগের অধিকর্তা সুগত হাজরা বলছিলেন, ‘প্রথম পর্যায়ের গবেষণায় তারা দেখেছেন, সমুদ্র থেকে নদীতে ডিম পাড়তে আসা ইলিশদের জন্য প্রধান বিপদ হল শ্যালো ট্রল নেট এবং চিংড়ি চাষে ব্যবহৃত মশারি জাল ও বেহুন্দি জাল।’

‘জাতিসংঘের সংস্থা আইইউসিএনের অর্থায়নে ও বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে আমরা ইলিশের আবাসভূমি, মাইগ্রেশন ও সেখানে মানুষের তৈরি করা বাধা কী রয়েছে তা স্টাডি করেছি। তাতে দেখা গেছে ‘বটম ট্রলিং’য়ের জন্য যে ট্রল নেট ব্যবহার করা হয় সেটা ইলিশের জন্য একটা বিরাট হুমকি।’

এমনিতে ট্রল নেট কিন্তু বড় বড় ফাঁকেরই জাল। কিন্তু যেটা হয়, টানার সময় এর তলার দিকের ফাঁকগুলো আস্তে আস্তে ছোট হয়ে যায় – ফলে এর নিচে সব সময়ই প্রচুর মাছ ও মাছের পোনা নষ্ট হয়। এ কারণেই আমরা বলেছি তিরিশ থেকে পঞ্চাশ মিটার পর্যন্ত অগভীর সমুদ্রে ট্রল নেট এবং সেই সঙ্গে চিংড়ির পোনা ধরার বেহুন্দি ও মশারি জাল নিষিদ্ধ করতে হবে।

ইলিশের চালান যে বিপজ্জনকভাবে কমছে–এবং তুলনায় বাড়ছে চিংড়ির জোগান সেটা বোঝা যায় পশ্চিমবঙ্গের শীর্ষস্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী রয়্যাল সি ফুডসের মমতাজ আহমেদের সঙ্গে কথা বললেই। তিনি বেশ কয়েক বছর হল ইলিশের কারবার ছেড়ে পুরোপুরি চিংড়ি সরবরাহ ও রপ্তানির ব্যবসায় ঝুঁকতে বাধ্য হয়েছেন।

‘বাজারে ইলিশ এখন ভীষণ কমে গেছে–গত বছর পাঁচেক ধরে আমি তো বলব আগের তুলনায় ইলিশ প্রায় পঁচিশ শতাংশে নেমে এসেছে। ফলে আমরা ইলিশ এখন বন্ধই করে দিয়েছি–দেশেবিদেশে শুধু চিংড়িটাই পাঠাচ্ছি।’

আসলে ভেড়িতে চিংড়ির পোনা জোগান দিতে গিয়ে বহু জেলে নিজের অজান্তেই ইলিশের মৃত্যু ডেকে আনছেন – বলছিলেন গবেষক দলটির প্রধান সুগত হাজরা।

‘ইলিশ যে কতটা বিপন্ন তা বোঝা যায় যখন দেখছি মোট ধরা পড়া ইলিশের আশি শতাংশেরই ওজন তিনশো গ্রাম বা তার কম। আশির দশকের আগে কিন্তু ইলিশ এতটা বিপদের মুখে ছিল না–কিন্তু সে সময় থেকে চিংড়ি চাষের রমরমা শুরু হয়, আর ইলিশের বিপদ ঘনিয়ে আসে।’

‘সাধারণ মানুষ মশারির জাল, বেহুন্দির জাল দিয়ে চিংড়ির পোনা ধরে তা অ্যাকোয়াকালচার ফার্ম বা চিংড়ির ভেড়িতে বিক্রি করেন। কিন্তু ওই জাল দিয়ে চিংড়ির পোনা ধরতে গিয়ে তারা অসংখ্য ইলিশের ডিম, ছোট ইলিশ ও আরও নানা মাছের চারা না-জেনেই নষ্ট করে ফেলেন।’

ড. হাজরা বলছিলেন, ‘এমনও দেখা গেছে সারা দিনের শেষে পাঁচশো টাকায় মাত্র একটা হরজাই মাছ বিক্রি করতে গিয়ে প্রতিটা বেহুন্দি জাল-পিছু হাজার হাজার ইলিশের চারা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যেভাবেই হোক এটা আমাদের বন্ধ করতেই হবে আর সেই কারণেই ভারত সরকারের কমিশন করা এই দ্বিতীয় পর্যায়ের গবেষণার শেষে তারা সুপারিশ করছেন।’

বাংলাদেশের মতো ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও ইলিশের জাটকা ধরা বন্ধ করতে হবে, দরকারে জেলেদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, ইলিশ যেখানে ডিম পাড়ে এমন পাঁচটি চিহ্নিত এলাকায় ব্রিডিং সিজনে মাছ ধরা বন্ধ রাখতে হবে – এবং অবশ্যই মোহনার কাছে নিষিদ্ধ হতে হবে মশারি বা বেহুন্দি জাল।

নইলে মাত্র তিরিশ থেকে চল্লিশ বছরের মধ্যে ইলিশের প্রজাতি সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়ে যাবে ও বাঙালির পাত থেকে চিরতরে হারিয়ে যাবে বলেই তারা আশঙ্কা করছেন!

সূত্র: বিবিসি

বাংলা৭১নিউজ/সিএইস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৫ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com