বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:৪৩ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
অস্ত্র মামলায় দণ্ড থেকে খালাস পেলেন মাওলানা নিজামী পুলিশের চাকরি হারিয়ে ছিনতাইয়ে নামেন হাকিম সিআইএ’র চোখে ধুলো দিয়ে চে গেভারার ডায়েরি যেভাবে কিউবা পৌঁছেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা আয়োজনে চলছে সাকরাইন উৎসব দুদকের মামলায় সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর কারাগারে সীমান্তে এখন কোন উত্তেজনা নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সুদানে গোলাবর্ষণে নিহত অন্তত ১২০ ৩১ জানুয়ারির পর অবৈধ বিদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ‘দিল্লি থেকে গণভবনে কে বসবে সেই সিদ্ধান্ত আর আসবে না’ নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে কথা বলতে চায় না জাতিসংঘ ঘুষসহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার পাসপোর্ট কর্মকর্তা পাকিস্তানে বিশাল স্বর্ণের খনির সন্ধান, বদলে যেতে পারে অর্থনীতি কুয়েতকে বাংলাদেশ থেকে আরও দক্ষ জনবল নিয়োগের আহ্বান রাষ্ট্রপতির স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য আর্থিক নিরাপত্তা দরকার : কামাল আহমেদ রিমান্ডে অসুস্থ কামরুল, নিয়ে আসা হয়েছে ঢামেকে বিনিয়োগ সংস্থাগুলোকে এক ছাতার নিচে আনার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার কোরিয়ার অর্থায়নে আধুনিক ডেটা ওয়্যারহাউজ স্থাপন করবে বিবিএস বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর গ্রেপ্তার চার মাসে সাড়ে ১৮ হাজার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে ছাত্রজোট, পুলিশি বাধায় পথে সমাবেশ

চাকরি করছে ৩০ হাজার রোহিঙ্গা!

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় শুক্রবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৯
  • ৭৩ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ,(কক্সবাজার)প্রতিনিধি: কতিপয় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, দেশি-বিদেশি এনজিও এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার লোকজনের আশকারায় কক্সবাজারে আশ্রিত রোহিঙ্গারা ক্রমেই বেপরোয়া হয়ে উঠছে। রোহিঙ্গাদের আর্থিক সুবিধার বিষয়টি বর্তমানে স্থানীয় পর্যায়ে আলোচিত বিষয়। জানা গেছে, প্রায় ৩০ হাজার রোহিঙ্গা বর্তমানে বিভিন্ন এনজিওতে চাকরি করছে।

এদিকে গত ২২ আগস্ট প্রত্যাবাসন শুরুর দ্বিতীয় দফা উদ্যোগও ভেস্তে যায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রোহিঙ্গাদের অনেকে আশ্রয় শিবিরগুলোতে জীবিকার সুযোগ পাচ্ছে। অথচ এদের যোগ্যতা অনুযায়ী রাখাইনেও চাকরি বা কাজ পাওয়া অসম্ভব।

গত কদিন উখিয়া ও টেকনাফে রোহিঙ্গা শিবিরগুলো ঘুরে জানা গেছে, এনজিওগুলো আশ্রয়শিবিরের ভেতরে বিভিন্ন কাজ রোহিঙ্গাদের দিচ্ছে। আর এর ফলে তারা মিয়ানমারে ফিরতে নিরুৎসাহ হচ্ছে। কয়েকটি এনজিও মানবিক সহায়তার নামে রোহিঙ্গাদের রাখাইন পরিস্থিতি সম্পর্কে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। বিভিন্ন ছবি দেখিয়ে রোহিঙ্গাদের বলছে, মিয়ানমারে ফিরে গেলে তাদের আবারও অবরুদ্ধ জীবনযাপন করতে হবে।

একাধিক রোহিঙ্গা নিশ্চিত করেছে, এনজিওগুলো তাদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক কোনো খবর দেয়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এনজিওগুলোর উদ্যোগেই রোহিঙ্গারা দিন দিন তাদের দাবিদাওয়া নিয়ে মুখর হয়ে উঠছে। অনেকের আচরণও পাল্টে উচ্ছৃঙ্খল হয়ে উঠছে। এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে তারা আর মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার চিন্তা করবে না।

অনুসন্ধানে জানা যায়, এনজিওগুলোতে চাকরি করছে এমন রোহিঙ্গাদের মাসিক বেতন ১৮ থেকে ৫০ হাজার টাকা। বিভিন্ন সময় রোহিঙ্গাদের চাকরি দেওয়ার অভিযোগ উঠলে এনজিও ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো তা স্বীকার করেনি।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থায় (আইওএম) বেশ কজন রোহিঙ্গা উচ্চ বেতনে চাকরি করছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে যোগাযোগ করা হলে সংস্থাটি তা নাকচ করে দেয়। আইওএমের তথ্য কর্মকর্তা জর্জ ম্যাকলিউড বলেন, ‘আমাদের সংস্থায় নিয়মিত মাসিক বেতনধারী কোনো রোহিঙ্গা চাকরিরত নেই। তবে অনিয়মিতভাবে রোহিঙ্গাদের দিয়ে বিভিন্ন কাজ করানো হচ্ছে।’

রোহিঙ্গা শিবিরে এমএসএফ হল্যান্ড নামে একটি আন্তর্জাতিক এনজিওতে অন্তত ৩৫০ জন রোহিঙ্গা চাকরি করছে। অথচ সেখানে স্থানীয় বাংলাদেশি আছে মাত্র ৩৬ জন। রোহিঙ্গাদের মধ্যে রুহুল আমিন নামে একজন মাসে ৫০ হাজার টাকা বেতনে লিয়াজোঁ অফিসার হিসেবে কাজ করছেন। জাকের নামে আরেক রোহিঙ্গার মাসিক বেতন ৪৫ হাজার টাকা। তিনি চাকরি করছেন কালচারাল অফিসার পদে। ছানাউল্লাহ ও নুরুল আমিন নামে দুই রোহিঙ্গার বেতন ৪৫ হাজার টাকা করে।

এনজিওটিতে কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রোহিঙ্গারাই বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শক হিসেবে এনজিওগুলোতে কাজ করছে। সাপ্তাহিক ও দৈনিক অভ্যন্তরীণ সভায় রোহিঙ্গারা পরামর্শকমূলক বক্তব্য দিয়ে থাকে। এমনকি স্থানীয়দের ওপরও খবরদারি করে তারা।

জানা গেছে, ওয়ার্ল্ড ভিশন, ব্র্যাক, আদ্রা, ডিআরসি, অ্যাকটেড, এসনেপ, রিলিফ ইন্টারন্যাশনাল, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল, মুক্তি, কোডেকসহ আরো বেশ কিছু এনজিওতে রোহিঙ্গারা কাজ করছে। তবে তাদের চাকরির বিষয়টি গোপন রাখা হচ্ছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের অস্থায়ী ভিত্তিতে কাজ দেওয়া হচ্ছে বলে কিছু এনজিওর দাবি।

রোহিঙ্গা শিবিরে এনজিওসহ বিভিন্ন সংস্থায় কর্মরত রোহিঙ্গার সংখ্যা সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া না গেলেও অন্তত ৩০ হাজার হবে বলে বিভিন্ন সূত্র জানায়। এ বিষয়ে তথ্য ফাঁস হলে স্থানীয় কর্মীদের চাকরি হারানোর হুমকি রয়েছে। তবে আশ্রয়শিবিরে রোহিঙ্গাদের দিয়ে কাজ করানো নিয়ে ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা।

এনজিওগুলো রোহিঙ্গাদের দিয়ে কাজ করালেও শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের (আরআরআরসি) কার্যালয় থেকে কোনো বাধা দেওয়া হয়নি। উল্টো কৌশলে ‘জরুরি কাজে’ রোহিঙ্গাদের দিয়ে শিবিরে কাজ করানোর অনুমতি নিয়েছে এনজিওগুলো। কিছু দিন আগেও আরআরআরসির পক্ষে স্বীকার করা হয়, রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে পাহাড় কাটা, রাস্তাঘাট নির্মাণসহ অন্যান্য জরুরি কাজে লোকজনের প্রয়োজন দেখা দেয়। এ অবস্থায় দেশি-বিদেশি বিভিন্ন এনজিওর অব্যাহত চাপে জরুরি কাজের জন্য ঘণ্টা হিসেবে রোহিঙ্গাদের কাজ করতে অনুমতি দেয় আরআরআরসি।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগ, আরআরআরসির এই অনুমতির সুযোগ নিয়ে কয়েক হাজার রোহিঙ্গাকে কাজে লাগিয়েছে এনজিওগুলো।

উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তা ও এনজিও কর্মকর্তারা অর্থের লোভে পড়ে বেশি মাত্রায় রোহিঙ্গাবান্ধব হয়ে গেছেন। এ কারণে আমাদের কপালে আরো দুঃখ আছে।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, “শিবিরের দায়িত্বে থাকা সরকারি কর্মকর্তারা আশ্রয়শিবিরের ভেতর হাটবাজার বসিয়ে কয়েক হাজার দোকানপাট থেকে লাখ লাখ টাকা আদায় করছেন। এসবের কিছুই সরকারি তহবিলে জমা হয় না। কর্মকর্তাদের দুর্নীতির বিষয়টি এখন রোহিঙ্গা শিবিরে ‘ওপেন সিক্রেট’।”

এদিকে দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে জাহাঙ্গীর আলম নামে একজন সিআইসির (ক্যাম্প ইনচার্জ) বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে বলে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিকারুজ্জামান নিশ্চিত করেছেন।

বাংলা৭১নিউজ/এমএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৫ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com