বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: ফেনীর সোনাগাজীতে মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে এখন খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ। ২৭ দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত এবং আদালতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির দুই সপ্তাহ পার হলেও গত রবিবার পর্যন্ত মোয়াজ্জেমকে নজরদারিতে নেওয়ার উদ্যোগ নেয়নি পুলিশ। এ সুযোগে ওসি মোয়াজ্জেম অবস্থান বদল করেছেন।
পুলিশের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, মোয়াজ্জেমকে গ্রেপ্তারে গত সোমবার থেকে অভিযান চলছে। যেকোনো সময় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হবে। তবে সূত্র জানিয়েছে, গোপন সংবাদে ঢাকায় মোয়াজ্জেমের অবস্থান জেনে সেখানে অভিযান চালিয়েও তাঁকে পায়নি ফেনী পুলিশের একটি দল। এখন ঢাকাসহ কয়েকটি এলাকায় তাঁর সন্ধান চলছে। যশোরের গ্রামের বাড়ি, কুষ্টিয়াসহ কয়েকটি এলাকায় তাঁর অবস্থান যাচাই করা হচ্ছে।
ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল আদালতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পরও দুই সপ্তাহ ধরে পালিয়ে আছেন মোয়াজ্জেম হোসেন। গত ৩ জুন ফেনীতে এবং পরবর্তী সময়ে রংপুরে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পৌঁছায়। এ নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে গত রবিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘ওসি মোয়াজ্জেম এখন পালিয়ে থাকলে খুঁজে পেতে হয়তো একটু সময় লাগবে। তবে তাঁকে বিচারের মুখোমুখি হতেই হবে।’
পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) সোহেল রানা বলেন, ‘ওসি মোয়াজ্জেমকে গ্রেপ্তার করা হলে জানানো হবে।’
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী ফেনীর সোনাগাজী থানা পুলিশের একটি দল গতকাল ঢাকায় এসে অভিযান শুরু করেছে। তারা গত সোমবার রাজধানীর কল্যাণপুরের একটি বাসায় অভিযান চালালেও সেখানে মোয়াজ্জেমকে পাওয়া যায়নি। এখানে এক আত্মীয়ের বাড়িতে মোয়াজ্জেম অবস্থান করছেন-এমন গোপন সংবাদ ছিল পুলিশের কাছে। কিন্তু অভিযানের আগেই সেখান থেকে সটকে পড়েন মোয়াজ্জেম। এরপর সম্ভাব্য অন্য স্থানেও অভিযান চালানো হয়।
নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুুড়িয়ে হত্যার কয়েক দিন আগে আপত্তিকর প্রশ্ন করে এবং তা ভিডিও ধারণ করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত ওসি মোয়াজ্জেম। এ অভিযোগে সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়েদুল হক। আদালতের নির্দেশে তাঁর বিরুদ্ধে ২৭ মে প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ওই দিনই মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। কিন্তু এক সপ্তাহ পরও মোয়াজ্জেমের বর্তমান ও আগের কর্মস্থল এবং যশোরের গ্রামের বাড়ির সংশ্লিষ্ট থানায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পৌঁছায়নি। ফেনীর ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান গত ৩ জুন পরোয়ানা পাওয়ার কথা স্বীকার করেন। রবিবার রংপুরের ডিআইজিও পরোয়ানা পেয়েছেন বলে জানান।
বাংলা৭১নিউজ/এস আর