বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:১৩ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
যাত্রাবাড়ীতে বিপন্ন প্রজাতির হনুমান পাচারের সময় গ্রেপ্তার ২ ব্যারিস্টার আরমানের স্ত্রীকে হেনস্তা করিয়েছিলেন টিউলিপ: রিপোর্ট কামরুল-পলকসহ ৫ জন নতুন মামলায় গ্রেফতার বেনজীরের স্ত্রী ও মেয়ের আয়কর নথি জব্দের আদেশ ভৈরব থানার লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার অবশেষে মায়ের বুকে ছেলে পোষ্য কোটা বাতিলসহ ৯ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের অনশন বাঘাবাড়ী নৌবন্দর নাব্য সংকট, ভিড়তে পারছে না জাহাজ নিয়োগ দুর্নীতি : ওয়াসার তাকসিমসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা নির্বাচন সংস্কারে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদের ১১ প্রস্তাব লন্ডনে পৌঁছেছেন খালেদা জিয়া ট্রাম্পের মানচিত্রে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন অঙ্গরাজ্য কানাডা ২০২৪ সালে সড়কে নিহত ৭ হাজারের বেশি : রোড সেফটি ফাউন্ডেশন সিরিয়ার কুর্দি যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অভিযানের হুমকি তুরস্কের টিসিবির নতুন চেয়ারম্যান ব্রি. জেনারেল ফয়সাল আজাদ একনেকে ৪ হাজার কোটি টাকার ১০ প্রকল্প অনুমোদন ঢাকায় ছিনতাই বেড়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করলেন ডিএমপি কমিশনার বিডিআরের নিরপরাধ সদস্যদের মুক্তির দাবিতে পদযাত্রায় পুলিশের বাধা রায়েরবাজারে পরিত্যক্ত অবস্থায় ২৯ রাউন্ড গুলি উদ্ধার ফেলানীর পরিবারের দায়িত্ব নিলেন আসিফ মাহমুদ

গোয়াল ঘরে মশারি

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় মঙ্গলবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৮
  • ৭১১ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ, শামছুর রহমান শিশির, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: শাহজাদপুর উপজেলাসহ বাঘাবাড়ি মিল্কসেড এরিয়ায় (সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নাটোর) এ বছর মশা-মাছির উপদ্রবে বাঘাবাড়ী মিল্কশেড এরিয়া অসংখ্য উন্নতজাতের গবাদীপশুর মধ্যে খুরা রোগ, ম্যাস্টাইটিস, ওলান ফোলা, জ্বরা, চর্মরোগ, এলার্জি, বাটে পচন, ক্ষুধামন্দা, স্বাস্থ্যহানীসহ নানা রোগ ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। মশা-মাছিবাহিত এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ১ মাসে এ অঞ্চলে বেশ কয়েকটি গবাদীপশু মারা যাওয়ায় এ অঞ্চলের গো-খামারীদের ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। তারপরেও খামারীরা তাদের গবাদীপশুকে রক্ষায় গোয়াল ঘরে ধুপ ও কয়েল জালিয়ে, ফিনিশ ও ফাইটার স্প্রে করে এবং ফ্যান ও মশারি টানিয়ে তাদের গবাদীপশুকে রক্ষার চেষ্টা করছেন। মশা-মাছির অত্যাচারে গরু খেতে, বসতে ও ঘুমাতে না পারায় দুধের উৎপাদন হ্রাস ও ফ্যাট কমে গেছে বলে খামারীরা দাবি করেছে।

স্থানীয় গো-খামারীরা জানান, গোয়াল ঘরে সাজাল, ধুপ-কয়েল জ¦ালিয়ে, ফিনিশ ও ফাইটার স্প্রে করে এবং ফ্যান দিয়ে মশা-মাছির উপদ্রব থেকে গবাদীপশুকে রক্ষায় গোয়াল ঘরে মশারি দিয়ে ঢেকে দিতে বাধ্য হয়েছি। তার পরেও মশা-মাছি থেকে গরু রক্ষা করতে পারছিনা। তারা আরো বলেন, গত ৫০ বছরের মধ্যে তারা এ রকম মশা-মাছির উপদ্রব দেখে নাই। মিল্কভিটার বৃ-আঙ্গারু প্রাথমিক দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতির ম্যানেজার ও গো-খামারী আব্দুর রউফ বলেন,মশা-মাছি বাহিত খুরা রোগ সহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে তাদের গ্রামে গত ১ মাসে বেশ কয়েকটি গরু মারা গেছে।

গোয়াল ঘরে ধুপ, কয়েল, ফিনিশ, সাজাল, ফাইটার, ফ্যান ও মশারি দিয়েও মশা-মাছি দূর করতে পারছি না। মশা-মাছির অত্যাচারে তাদের খামারের গরু সারা দিন সারা রাত খেতে ও ঘুমাতে পারে না। না খেয়ে গুগ্ন হয়ে পড়েছে। দুধের ফ্যাট কমে গেছে ও দুধ উৎপাদনও কমে গেছে। তিনি আরো বলেন, পাবনা-সিরাজগঞ্জ মিল্কসেড এরিয়ায় কমপক্ষে সাড়ে ৬ লাখ উন্নত জাতের দুধ উৎপাদনকারী গাভী রয়েছে। মশা-মাছির কামড়ে ক্ষত সৃষ্টি হয়ে ৬ লাখ গাভীই ওলান জড়া ও ম্যাস্টাইটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। ফলে এ সব গাভী ক্রমশ দুগ্ধ উৎপাদন ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

এতে তারা চরম ভাবে আর্থিক লোকশানে পড়েছে। চরা চিথুলিয়া গ্রামের সোহেল মন্ডল বলেন,মশা-মাছির অত্যাচারে এ এরিয়ার ২৫টি বাথানে লাখ লাখ গরু রাখাই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। গরুর ওলান ও বাটে মশা-মাছি বসে এমন ভাবে রক্ত খায় যে,সেখানে রক্ত ঝড়ে এবং ঘাঁ হয়ে পচন ধরে। এ অবস্থায় গরু বাথানে থাকতে চায় না। দড়ি ছিড়ে অন্যত্র চলে যায়। এ ছাড়া নানা রোগাক্রান্ত হয়ে মারা যায়।

এ অবস্থা চলতে থাকায় তারা কোন ভাবেই তাদের খামারের গরু রক্ষা করতে পারছেনা। অপর দিকে মিল্কভিটার সাথিয়ার বোয়ালমারী দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতির সভাপতি ও গো-খামারী বেলায়েত হোসেন বলেন, তাদের এরিয়ায় মাছির চেয়ে মশার অত্যাচার বেশি হওয়ায় মাংস উৎপাদনশীল গরুকে মশারির মধ্যে লালন-পালন করতে বাধ্য হচ্ছেন। তিনি আরো জানান, গত ১ মাসে পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলার মিল্কসেড এরিয়ায় মশা-মাছির আক্রমণে খুরা রোগ ও অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়ে অন্তত শতাধিক গরু মারা গেছে। এ কারণে দুধের উৎপাদন কমে যাওয়ায় মিল্কভিটাসহ বে-সরকারী সব গুলো প্রতিষ্ঠানে কৃষকদের দুধ সরবরাহও কমে গেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে এ এলাকার গো-সম্পদ রক্ষা কঠিন কয়ে পড়বে। তাই এ এলাকার গো-সম্পদ রক্ষায় সরকারকে দ্রত পদক্ষেপ নিতে হবে।

এ বিষয়ে মিল্কভিটার পরিচালক আব্দুস সামাদ ফকির বলেন,‘ মশা-মাছির উপদ্রব বিগত কয়েক বছরের তুলনায় বহুলাংশে বেড়েছে। গরুর পায়ে খুরা রোগে আক্রান্ত স্থলে মশা-মাছি ডিম পারায় সেখানে পোকার উপদ্রব দেখা দেয়। গরুর লোম মোট হয়ে যায়। মশা-মাছির উপদ্রবের পাশাপাশি বাথান এলাকার বিস্তৃর্ণ ঘাস ক্ষেত বিগত বছরের কার্তিক মাসের দিকে ‘বর্ষা পোকা’ নামের এক ধরনের পোকায় আক্রান্ত হতে দেখা গেলেও এবার চৈত্র মাসেই ঘাস ক্ষেত ওই পোকায় আক্রান্ত হয়েছে। এতে গবাদী পশু পোকায় আক্রান্ত ঘাস খেয়ে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এবং দুধ উৎপাদন কমে যাচ্ছে। বিশ্বের দুগ্ধসমৃদ্ধ দেশগুলোতে এমন অবস্থা হতে গবাদী পশুর সুরক্ষায় হেলিকপ্টার দিয়ে আক্রান্ত স্থলে স্প্রে ছিটিয়ে দেয়া হয়। বাথানে পোকা ও মশা-মাছি আক্রান্ত স্থলে সে ধরনের স্প্রে করার বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের অবগত করা হবে এবং বাথান এলাকার গবাদীপশুর নানা রোগবালাই  থেকে সুরক্ষায় ভ্যাকসিন প্রদান করা  হবে।’

অন্যদিকে, মিল্কভিটার বাঘাবাড়ী কারখানার ব্যবস্থাপক ডাঃ ইদ্রিস আলী বলেন, ‘মশা-মাছির উপদ্রব থেকে গরু রক্ষা মিল্কমিটা থেকে কোন কিছু করার ব্যবস্থা নেই। তবে খামারীরা এ বিষয়ে মিল্কভিটার কাছে সহযোগীতা চাইলে বিষয়টি ভেবে দেখব।’

এ ব্যাপারে শাহজাদপুর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুস সামাদ বলেন,‘পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ না হলেও এ এরিয়ায় মশা-মাছির উপদ্রব আছে। আমরা খামারীদের স্প্রে করা সহ নানা পরামর্শ দিয়ে গো-সম্পদ রক্ষায় কাজ করছি। এর পরেও সরকারি ভাবে এ এরিয়ায় মশা-মাছি নির্মূলে কোন পদক্ষেপ নেয়া যায় কিনা তা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’অন্যদিকে, উদ্ভূত পরিস্থিতি হতে পরিত্রাণে গো-খামারীরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।

বাংলা৭১নিউজ/জেএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com