বাংলা৭১নিউজ, ডেস্ক : গোলান মালভূমি নিয়ে সিরিয়া-ইসরাইল উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। দখলকৃত গোলান মালভূমি ইসরাইল সিরিয়াকে ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানানোর ফলে এ উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। অপরদিকে সিরিয়া গোলান উদ্ধারে কৃতসংকল্প মনোভাব ব্যক্ত করেছে। প্রসঙ্গত, ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরাইল যুদ্ধে সিরিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের গোলান মালভূমি ইসরাইল দখল করে নেয়।
বর্তমানে সেটা ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ইসরাইল। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, গোলান হাইটস বা গোলান মালভূমি কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ এবং তা আর ফেরত দেয়া হবে না। এদিকে সিরিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল মিকদাদ বলেছেন, অধিকৃত গোলান মালভূমি ফেরত পাওয়ার জন্য আমাদের সামনে যেকোনো ব্যবস্থা নেয়ার পথ খোলা রয়েছে। এ জন্য প্রয়োজনে ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে সামরিক হামলা চালানো হতে পারে। এছাড়া বিকল্প কিছু নেই।
খবরে বলা হয়, গোলান মালভূমি চিরদিন তেল আবিবের হাতে থাকবে বলে ইসরাইলের যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মন্তব্য করার পর সিরিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ ঘোষণা দিয়েছেন। গত রোববার মন্ত্রিসভার বৈঠকে নেতানিয়াহু দাবি করেন, সিরিয়ার গোলান মালভূমিকে ইসরাইলের অংশ বলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বীকৃতি দেয়া উচিত।
অধিকৃত গোলান এলাকায় ইসরাইলের মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ফয়সাল মিকদাদ জোর দিয়ে বলেন, আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে অধিকৃত গোলান মালভূমি সিরিয়ার অংশ এবং ইসরাইলের কাছ থেকে তা ফেরত নেয়া হবে। এ বিষয়ে সিরিয়ার সামনে সব ধরনের পথ খোলা রয়েছে। এজন্য আমরা প্রস্তুতও রয়েছি। লেবাননের টেলিভিশন চ্যানেল আল-মায়েদিনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন মিকদাদ।
১৯৬৭ সালে ছয় দিনের আরব-ইসরাইল যুদ্ধের সময় ইহুদিবাদীরা গোলান মালভূমি দখল করে নেয়, তবে আজ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সমাজের স্বীকৃতি পায়নি। বর্তমানে সিরিয়ায় শান্তি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে আন্তর্জাতিক মহল। এই সুযোগে সিরীয় সরকার ওই এলাকা ফিরে পাওয়ার দাবি জানাতে পারে বলে জানিয়েছে ইসরাইলি সংবাদ মাধ্যম। সে কারণে প্রথমবারের মতো গোলান হাইটস প্রশ্নে বৈঠক করেছে ইসরাইলি মন্ত্রীরা।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু স্পষ্ট করে বলেছেন যে, তার দেশ এই এলাকা কখনোই ছাড়বে না। ১৯৬৭ সালে আরবদের সাথে ৬ দিনের যুদ্ধ করেছিল ইসরাইল। তখন সিরিয়ার গোলান মালভূমি দখল করে নেয় ইসরাইল। পরে ১৯৮১ সালে এলাকাটি নিজেদের ঘোষণা দেয়। কিন্তু ইসরাইলের এই দাবিতে আন্তর্জাতিক মহল স্বীকৃতি দেয়নি।
সিরিয়াও সেই ১৯৬৭ সাল থেকেই সামরিক কৌশলের দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই এলাকাটি ফিরিয়ে দেয়ার দাবি করে আসছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী হঠাৎ কেন একথা বললেন? বিশ্লেষকরা মনে করেন, সিরিয়া শান্তি আলোচনায় যাতে গোলানের কথা ওঠার সুযোগ না পায় সেজন্য আগেভাগেই আন্তর্জাতিক মহলকে সেটা জানান দিচ্ছে ইসরাইল।
১৯৬৭ সালে দখলের পর থেকেই গোলান মালভূমিতে ইসরাইল শক্তিশালী সামরিক বাহিনী মোতায়েন রেখেছে। তাছাড়া সেখানে ৩০টি ইহুদি বসতি স্থাপন করা হয়েছে। প্রায় ২০ হাজার মানুষ বসবাস করছে সেখানে। এসবই করা হয়েছে দখলের কৌশল হিসেবে।
বাংলা৭১নিউজ/তথ্যসূত্র: বিবিসি, এপি