পাঁচ দিনের ম্যাচ শেষ হয়ে গিয়েছিল মাত্র তিন দিনেই। তাতে কী! গত নভেম্বরে অ্যাডিলেডে হয়ে যাওয়া ঐতিহাসিক দিবারাত্রির টেস্ট কিন্তু যথেষ্ট সাড়া জাগিয়েছিল ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে। মাঠের দর্শক, টেলিভিশন দর্শক থেকে শুরু করে ওই টেস্টটি খেলা দুই দল অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডও ছিল দারুণ উচ্ছ্বসিত। ওই টেস্টের সাফল্য গোলাপি বলে দিবারাত্রির টেস্ট খেলাটাকে নিয়মিত করে তুলতে উৎসাহিত করছিল বৈকি। কিন্তু সেটি যেন চ্যালেঞ্জের সামনে পড়ল। এরই মধ্যে আগামী গ্রীষ্মে অস্ট্রেলিয়ায় দিবারাত্রির টেস্ট খেলতে বেঁকে বসেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
অস্ট্রেলিয়ার ৩ উইকেটে জেতা ঐতিহাসিক সেই টেস্টে মোট দর্শক হয়েছিল ১ লাখ ২৩ হাজার ৭৩৬ জন, তাও মাত্র তিন দিনে। এর মধ্যে প্রথম দিনই গ্যালারিতে ছিলেন ৪৭ হাজার ৪৪১ দর্শক। দিবারাত্রির টেস্ট দিয়েই তাই টেস্ট ক্রিকেটের পুনর্জাগরণ ঘটবে বলে মনে করছিলেন অনেকে। সে জন্য আগামী গ্রীষ্মে দক্ষিণ আফ্রিকা ও পাকিস্তানের বিপক্ষে দুটি দিবারাত্রির টেস্ট খেলার পরিকল্পনা ছিল অস্ট্রেলিয়ার।
অস্ট্রেলিয়ান গ্রীষ্ম সাধারণত শুরু হয় গ্যাবা টেস্ট দিয়ে। কিন্তু এ বছর সেটা শুরু হওয়ার কথা দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পার্থ টেস্ট দিয়ে, তারপর হোবার্ট ও অ্যাডিলেডে হবে বাকি দুটি টেস্ট। অস্ট্রেলিয়ার পরের সিরিজটা পাকিস্তানের বিপক্ষে, যেখানে তারা ৩টি টেস্ট খেলবে ব্রিসবেন, মেলবোর্ন ও সিডনিতে। অস্ট্রেলিয়ার পরিকল্পনা ছিল, অ্যাডিলেডে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের শেষ টেস্ট ও ব্রিসবেনে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্টটি হবে দিবারাত্রির। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা হঠাৎই বেঁকে বসায় সেই পরিকল্পনাটা ধাক্কা খেতে পারে। দ্য অস্ট্রেলিয়ানকে দক্ষিণ আফ্রিকার প্লেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান নির্বাহী টনি আইরিশ বলেছেন, ‘আমাদের খেলোয়াড়েরা দিবারাত্রির টেস্ট খেলার পক্ষে নয়। বড় কারণ, আমরা ওই রকম কন্ডিশনে ওদের চেয়ে পিছিয়ে থাকব বলে মনে করছি। আমাদের দলে যারা আছে, তাদের কেউই গোলাপি বলে কোনো ধরনের ক্রিকেট খেলেনি।’
তবে টনি আইরিশের কথায় এই ইঙ্গিতও আছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া জোরাজুরি করলে দক্ষিণ আফ্রিকা খেলতেও পারে, ‘অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজকে আমরা সব সময় গুরুত্ব দিয়ে থাকি।’
এই ইঙ্গিত আবার অন্য কিছুর ইঙ্গিতও কিন্তু দেয়। দিবারাত্রির টেস্ট খেলতে রাজি হয়ে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার কাছ থেকে হয়তো কিছু বাড়তি অর্থপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে চায়। গত বছর অ্যাডিলেডে দিবারাত্রির টেস্ট খেলতে শুরুতে অনিচ্ছুক ছিল নিউজিল্যান্ড। শেষ পর্যন্ত ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার কাছ থেকে এক লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার প্রণোদনা পেয়ে তারা রাজি হয়। দক্ষিণ আফ্রিকার অনাগ্রহ নিয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। আজই তাদের গ্রীষ্মকালীন সূচি ঘোষণা করার কথা। এএফপি।