বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: গুমকে ‘ঘৃণ্যতম মানবতাবিরোধী অপরাধ’ আখ্যা দিয়ে দেশে এর সঙ্গে জড়িতদের ভবিষ্যতে বিচারের মুখোমুখি করার কথা বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে ‘আন্তর্জাতিক গুম দিবস’ উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের স্বজনদের সহমর্মিতা জানাতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশে যারা গুমের মতো ঘৃণ্যতম অপরাধ করছেন, তারা যদি মনে করে থাকেন রেহাই পেয়ে যাবেন, ভুল ভাবছেন। একদিন না একদিন জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে, সেদিন অবশ্যই এই অপরাধের জন্য দায়ীদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।’
পুরো দেশ কারাগারে পরিণত হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সরকার নতুন নতুন ইস্যু তৈরি করে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের আবার গ্রেপ্তার শুরু করেছে। এখন দেশের মানুষের যেমন ভোটাধিকার নেই, তেমনি মানবাধিকারও নেই।
সরকার দেশের গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করছে দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, গণমাধ্যম অসহায় হয়ে পড়েছে। তারা সরকার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। সরকারের কথার বাইরে যেতে পারে না।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলতে চাইছে- অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একদিকে বলপ্রয়োগ করে হত্যা করা, নির্যাতন করা, গুম করে দেওয়া হচ্ছে, অন্যদিকে জিয়াউর রহমানের নাম ইতিহাস থেকে মুছে দিতে চাইছে।
‘এ জন্য তার স্বাধীনতা পদক কেড়ে নিতে চাইছে। কিন্তু জিয়াউর রহমান ও স্বাধীনতা অবিচ্ছ্যেদ অংশ। যারা জিয়াকে অস্বীকার করতে চায়, তারা স্বাধীনতাকে অস্বীকার করতে চায়।’
এ সময় বিএনপি চেয়াপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নতুন করে এক মামলায় সমন জারি হওয়ার সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, একদিকে ভয়াবহ জঙ্গিবাদ, অন্যদিকে ফ্যাসিবাদী আগ্রাসনে দেশ জঙ্গল হয়ে গেছে। জঙ্গলে বাস করছি। মনে হয় চারিদিকে পশু।
নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় জনগণকে ঐক্যবদ্ধ এবং ত্যাগ স্বীকার করার আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদিন, নিতাই রায় চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি প্রমুখ।
গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের স্বজনদের মধ্যে ছাত্রদল কর্মী আদনানের বাবা রুহুল আমিন চৌধুরী, লাকসামের হুমায়ুন কবির পারভেজের স্ত্রী মিসেস শাহনাজ আক্তার, ঢাকার সুত্রাপুরের ছাত্রদল নেতা খালিদ হাসান সোহেলের ছেলে আরিয়ান, ছাত্রদল নেতা চঞ্চলের ছেলে আহাদ, সেলিম শাহেদের ছেলে আফতাব রহমান, সুত্রাপুর ছাত্রদল নেতা সেলিম রেজা পিন্টুর বোন মুন্নী আকতার, নাজমুল ইসলামের স্ত্রী সাবেরা নাজমুল, রাজধানীর বিমানবন্দর থানার ছাত্রদল নেতা নিজামুদ্দিনের বাবা শামসুদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
বাংলা৭১নিউজ/আরএস