বন্ধুর পথ পেরিয়ে গহিন অরণ্যে দেখা মেলে হামহাম ঝরনার। প্রায় ১৬০ ফুট উঁচু পাহাড়ের ওপর থেকে অবিরাম পাথরের গায়ে পড়ছে হামহামের স্বচ্ছ পানির ধারা। নয়নাভিরাম এই দৃশ্য সহজেই দৃষ্টি কাড়ে পর্যটকদের। জলকন্যা হামহামের অবস্থান মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের কুরমা সীমান্তের গহিন অরণ্যে।
রাজকান্দি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গভীরে কুরমা বন বিট এলাকার এই ঝরনাকে চিতা ঝরনাও বলা হয়। কমলগঞ্জের একেবারে শেষ গ্রামের নাম কলাবনপাড়া, যেটি তৈলংবাড়ী নামেও পরিচিত। বলতে গেলে এরপর তেমন কোনো জনবসতি নেই। এখান থেকেই শুরু হয় হামহাম যাওয়ার মূল অভিযান। যাওয়ার জন্য বনের ভেতর দুটি পথ আছে।
বনের শুরুতেই হাতের ডান ও বাঁ দিকে পাশাপাশি পথ দুটির অবস্থান। একটি যাওয়ার এবং অন্যটি ফিরে আসার। ডানের পথ দিয়ে ঢুকে বাঁ দিক দিয়ে বের হওয়াই ভালো। কারণ ডানের পথটা দীর্ঘ এবং অনেক উঁচু টিলা পার হতে হয়।
হামহাম যেতে গাইড নেওয়াই ভালো। কারণ প্রথমবার গেলে রাস্তা ভুল করার আশঙ্কা থাকে। ছড়া ও টিলা মিলিয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টার ট্রেইল পাড়ি দিয়ে দেখা মেলে হামহামের। এর আগে দুই চোখের সামনে ভেসে উঠবে পাহাড় থেকে ধোঁয়ার মতো ঘন কুয়াশার অপূর্ব দৃশ্য। মনে হবে, নয়নাভিরাম পাহাড় হাতছানি দিয়ে ডাকছে। হাঁটতে হাঁটতে একসময় ঝরনাধারার শব্দ পাওয়া যায়। কাছে যাওয়ামাত্র প্রাণচাঞ্চল্য বেড়ে যায়। প্রশান্তিতে মন ভরে যায়।
ঢালু ও পিচ্ছিল পাহাড়ি পথ বেয়ে ওপরে ওঠা কষ্টকর হলেও তুলনামূলক সহজ। কারণ নিচে নেমে আসা বিপজ্জনক। খুব সতর্কতার সঙ্গে নামতে হয়। প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা পর ফেরা যাবে কলাবনপাড়ায়। ভ্রমণপিপাসু মানুষ কমলগঞ্জ অথবা শ্রীমঙ্গল শহর থেকে যানবাহন ভাড়া করে ভোর ৬টার মধ্যেই হামহামের উদ্দেশে রওনা শুরু করে।
স্থানীয়রা বলেন, এই ঝরনায় পর্যটকদের যাতায়াতে সরকার সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করলে মৌলভীবাজার জেলা তথা বৃহত্তর সিলেট বিভাগের অন্যতম পর্যটন এলাকায় রূপান্তরিত হবে হামহাম।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ