বাংলা৭১নিউজ,কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামে ধরলার নদীর পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ১০০ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রে পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৭৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সরকারী হিসাব মতে জেলার ৯ উপজেলায় ১লাখ ১০ হাজার ৪শ ৭৬ পরিবারের ৪ লাখ ২৯ হাজার ৪শ ৮৫ জন মানুষ পানিবন্দী হয়ে দুর্বিসহ জীবন যাপন করছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে থাকায় ৯ উপজেলার ৪শ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক ও ৫০ কিলোমিটার পাকা সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
এদিকে সদর উপজেলার কুমরপুর এলাকায় কুড়িগ্রাম-ভুরুঙ্গামারী মহাসড়কে পানি ওঠায় ফুলবাড়ী, নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলাসহ বঙ্গসোনাহাট স্থলবন্দরের সাথে সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। বাধ ধসে যাওয়ায় হুমকীর মুখে পড়েছে ঐতিহ্যবাহী যাত্রাপুর হাট।
২শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। নিমজ্জিত রয়েছে আমন বীজতলা, পাট ও সবজি ক্ষেতসহ বিভিন্ন ফসলের মাঠ। বানভাসীরা ঘর-বাড়ি ছেড়ে পাকা সড়ক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিচ্ছে। বন্যা দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানিসহ খাদ্য সংকটে রয়েছে বানভাসীরা। সংকট দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যেরও। সরকারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত ত্রান সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ বেশিরভাগ বন্যা কবলিত মানুষদের।
সদর উপজেলার মধ্যকুমরপুর দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. আমিরুল ইসলাম জানান, সোমবার হঠাৎ করে মাদ্রাসার মাঠে ৩ থেকে ৪ ফুট পানি উঠে যাওয়ায় জেলা শিক্ষা অফিসারের সঙ্গে কথা বলে মাদ্রাসা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। মাদ্রাসার ঘরের মেঝে ও বারান্দা জেগে থাকায় সেখানে বন্যার্তরা আশ্রয় নিচ্ছে। গরু-ছাগল ও পরিবারের লোকজন নিয়ে পাকা সড়কে আশ্রয় নেয়।
মমিনুল জানান, বাড়িতে পানি উঠার পরও খুব কষ্ট করে ৫দিন ধরে ছিলাম। পানি অতিরিক্ত মাত্রায় বাড়ার ফলে আর থাকা যাচ্ছে না। তাই পাকা রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছি। জেলা সিভিল সার্জন সূত্রে জানা গেছে ৯ উপজেলায় ৮৫টি মেডিকেল টিম বন্যার্তদের জন্য কাজ করছে।
জেলা প্রশাসন থেকে ৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ও ১শ ৯২ মেট্রিক টন চাউল ও ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। নতুন করে ৯ উপজেলায় ২শ ৮ মেট্রিক টন চাউল ও ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে যা বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ করা হবে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহফুজুর রহমান জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১০০ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে ৭৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে বৃদ্ধি পেয়েছে তিস্তা ও দুধকুমারের পানিও। এভাবে বাড়তে থাকলে মানুষের দুর্দশার শেষ থাকবেনা বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছে।
বাংলা৭১নিউজ্/এমসি