শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:২০ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
বিশ্বে ৮ শিশু ও তরুণীর মধ্যে একজন ধর্ষণ-যৌনহয়রানির শিকার এটিএম থেকে বিকাশে রেমিটেন্স ক্যাশ আউট ৭ টাকায় বগুড়ায় বিলের পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৪০০ পরিবারকে অর্থ সহায়তা দিলো জামায়াত মমতাজসহ ৯০ জনের নামে হত্যা মামলা একসঙ্গে ৫ নারী বিচারপতি নিয়োগ দিয়ে সুপ্রিম কোর্টে নতুন ইতিহাস সাহিত্যে নোবেল পেলেন দক্ষিণ কোরিয়ার হান ক্যাং নির্বাচনমুখী সংস্কারগুলো আগে বাস্তবায়ন করতে হবে: সালাহউদ্দিন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র কারাগারে লিবিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন ১৫০ বাংলাদেশি রাশিয়ায় এবার বিমানঘাঁটিতে হামলা, এখনো জ্বলছে তেল টার্মিনালের আগুন ২৪ ঘণ্টায় সাবের হোসেন কীভাবে মুক্তি পেলেন: প্রশ্ন রিজভীর রাজনগরে ২৩১ বস্তা ভারতীয় চিনি উদ্ধার, আটক ১ হারুনের দেশত্যাগ নিয়ে যা বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের নামে মাহমুদুর রহমানের মামলা ডিম-পেঁয়াজ-আলুর দাম কিছুটা কমেছে: বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাক মাদরাসার ভেতরে, ১৪ শিক্ষার্থী আহত দুই কোটির ব্যবসায় ১৫১ কোটি টাকা ঋণ, এস আলমের মাসুদের ঘাড়ে দায় গোলান মালভূমিতে হিজবুল্লাহ সদস্যকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের ৩৬৫ দিন নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ওমিক্রন আতঙ্কে পশ্চিমাদের সঙ্গে এশিয়ার বিভক্তি স্পষ্ট

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক:
  • আপলোড সময় শুক্রবার, ৭ জানুয়ারী, ২০২২
  • ১৭ বার পড়া হয়েছে

করোনাভাইরাসের অতিসংক্রামক ধরন ওমিক্রন বিস্তারের সূত্র ধরে পৃথিবীর পূর্ব ও পশ্চিমের দেশগুলোর মধ্যে বিভক্তি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। করোনার সংক্রমণ নতুন করে বেড়ে যাওয়া ঠেকাতে পূর্বাঞ্চলের দেশগুলো যখন সতর্ক অবস্থান নিচ্ছে, তখন ভাইরাসটিকে ‘অনিবার্য’ ধরে নিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অব্যাহত রাখার চেষ্টা করছে পশ্চিমারা। খবর আল জাজিরার।

মনে করা হচ্ছে, সরকারগুলোর মধ্যে দ্বিধাবিভক্ত এই পরিস্থিতির পেছনে বড় ভূমিকা রাখছে ‘ওমিক্রন অতটা গুরুতর নয়’- এ ধারণাটি। করোনার নতুন এই ধরন আগেরগুলোর তুলনায় দ্রুত ছড়ালেও তুলনামূলক কম প্রাণঘাতী এবং এতে হাসপাতালে ভর্তির হার কম- এমন মতামতের পক্ষে সমর্থন বাড়ছে।
যদিও গত নভেম্বরে প্রথমবারের মতো ওমিক্রন শনাক্তের পরপরই বেশ কিছু দেশ সীমান্তে বিধিনিষেধ জোরদার করে। এক্ষেত্রে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে করোনাবিধিতে ছাড় দেওয়ার প্রবণতা অনেক কম।

জাপানের কোবে ইউনিভার্সিটির সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ কেনতারো ইওয়াতা আল জাজিরাকে বলেন, ওমিক্রন নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। এটি সহজে ছড়ালেও বেশিরভাগ লোকের জন্য বড় হুমকি নয়। এরপরও যদি সংক্রমণ অনেক বেশি হয়ে যায়, তাহলে বিধিনিষেধও বাড়তে পারে।

চীনের মূল ভূখণ্ডের মতো হংকংও ‘জিরো কোভিড’ নীতি মেনে দুদিন আগে আটটি দেশের সঙ্গে সব ধরনের ফ্লাইট চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যও রয়েছে। তাদের সীমান্তে কড়াকড়ি দ্বিগুণ করা হয়েছে, যার ফলে বিশ্বের অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্রটি এখন অন্যতম বিচ্ছিন্ন অঞ্চলে পরিণত হয়েছে।

মহামারির শুরু থেকেই চীনের মূল ভূখণ্ডের সীমান্ত একপ্রকারে বন্ধ। এরপর বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল হলেও সম্প্রতি জিয়ান শহরে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আবারও কঠোর লকডাউন দেওয়া হয়েছে। এতে সেখানে খাদ্য ঘাটতি সৃষ্টি, চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হওয়ার মতো অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।

দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড এবং সিঙ্গাপুর কার্যত সব বিদেশি ভ্রমণকারীর কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক করেছে। নন-রেসিডেন্ট বিদেশিদের প্রবেশ পুরোপুরি নিষিদ্ধ করেছে জাপান। দক্ষিণ কোরীয় কর্তৃপক্ষ অন্তত আগামী ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত রাত ৯টার পর রেস্টুরেন্ট খোলা রাখতে নিষেধ করেছে। জাপানের তিনটি অঞ্চল টোকিও সরকারের কাছে আধা-জরুরি অবস্থা জারির অনুরোধ জানিয়েছে।

সিঙ্গাপুরের আইএসইএএস-ইউসুফ ইশাক ইনস্টিটিউটের অনাবাসিক সিনিয়র ফেলো জয়ন্ত মেননের মতে, মহামারির এই পর্যায়ে ভাইরাস নিয়ে ‘ওভাররিঅ্যাক্ট’ (অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া জানানো) আর যুক্তিসঙ্গত হতে পারে না। তবুও আমরা সরকারগুলোর কাছ থেকে যে প্রতিক্রিয়া দেখতে পাচ্ছি সেগুলো খরচাপাতি বিবেচনায় মোটেও ন্যায়সঙ্গত নয়। এটি বিশাল বড় ভুলের দিকে ধাবিত করছে।

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ক্রমাগত বিধিনিষেধের মূল্য দিতে হচ্ছে জীবিকা ও আয়ের ক্ষতির মাধ্যমে। এটি তুলনামূলক কম ক্ষতিকর ধরন (ওমিক্রন) সংক্রমণের সরাসরি প্রভাবকে সহজেই ছাড়িয়ে যায়। সেক্ষেত্রে, অব্যাহত বিধিনিষেধের একমাত্র কার্যকর ব্যাখ্যা হতে পারে, একটি সীমিত স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা রক্ষার চেষ্টা করা, যা জরুরি প্রয়োজনের সময় ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু এই পদ্ধতি অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং নৈতিকভাবে নিঃস্ব।

ওমিক্রন সংক্রমণের মধ্যে এশিয়ার তুলনায় অনেকটা বিপরীত অবস্থানে পশ্চিমা দেশগুলো। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়ায় রেকর্ডভাঙা সংক্রমণ দেখা গেলেও তারা ধরেই নিয়েছে, করোনার এই ধরনটি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না এবং এটি অর্থনৈতিক-সামাজিক ক্ষতি স্বীকারের যোগ্য নয়।

মহামারির শুরুর থেকে বিশ্বের অন্যতম কঠোর লকাডাউন মেনে চলেছে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু গত সোমবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন, লকডাউনের সময় আর নেই। সেখানকার স্বাস্থ্য কর্তকর্তারা সম্প্রতি বলেছেন, সবাই ওমিক্রনে আক্রান্ত হবে এটি যেন জনগণ মেনে নেয়। অবশ্য নিউ সাউথ ওয়েলসের মতো কিছু এলাকায় সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কিছুটা কড়াকাড়ি আরোপ করা হয়েছে।

যুক্তরাজ্যে বরিস জনসন গত বুধবার বলেছেন, দেশটি আর কোনো বিধিনিষেধ ছাড়াই ওমিক্রন সংক্রমণের এই ঢেউ পার হয়ে যাবে বলে আশা করছেন তিনি।

ডেল্টার চেয়ে দুই-তিনগুণ বেশি সংক্রামক ধরন ওমিক্রন উভয় দেশে হাসপাতালগুলোর ওপর চাপ তৈরি করলেও সেই তুলনায় আইসিইউতে রোগী ভর্তি ও মৃত্যুর হার অনেক কম। যুক্তরাজ্যে প্রথম ওমিক্রন রোগী শনাক্তের পর ছয় সপ্তাহ পার হলেও এখন যতজন ভেন্টিলেশনে রয়েছেন, তা ২০২১ সালের জানুয়ারির পিক সময়ের তুলনায় এক-চতুর্থাংশ মাত্র। ওমিক্রন ‘প্রথম’ শনাক্ত হওয়া দেশ দক্ষিণ আফ্রিকাতেও ধরনটির সর্বোচ্চ সংক্রমণের সময় মৃত্যুর হার গত বছরের জানুয়ারিতে বেটা ধরনের ঢেউয়ের মুখে থাকা অবস্থার তুলনায় পাঁচভাগের একভাগ মাত্র।

সিঙ্গাপুরের ডিউক-এনইউএস মেডিক্যাল স্কুলের উদীয়মান সংক্রামক রোগের অধ্যাপক ওওই ইং ইয়ং বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন, টিকাদানের উচ্চ হার থাকা দেশগুলো আগের বিধিনিষেধ শিথিল করা শুরু করতে পারে। তিনি বলেন, আমি মনে করি, প্রতিটি দেশকে যেকোনো মাত্রায় বিধিনিষেধ শিথিল করার বিষয়ে জনগণকে জানাতে এবং প্রস্তুত করতে হবে। সেটি না হলে ভুল ধারণা ছড়িয়ে পড়ে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের প্রতি অবিশ্বাস তৈরি করতে পারে, যা করোনা প্রতিরোধের কর্মসূচিগুলো ব্যর্থ করে দেবে। সেক্ষেত্রে সাবধানতার সঙ্গে ধারাবাহিক ব্যবস্থায় সবার উপকার হতে পারে।

ব্যাংককের চুলালংকর্ন ইউনিভার্সিটির মহামারি বিশেষজ্ঞ থিরা ওয়ারাতনারাত বলেছেন, এশীয় দেশগুলো, বিশেষ করে দরিদ্র অংশটি অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে বলে মনে করেন না তিনি। কারণ, তাদের স্বাস্থ্যসেবার সক্ষমতা এবং টিকাপ্রাপ্তির সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এ বিশেষজ্ঞের কথায়, মহামারিকে দুর্বলভাবে নিয়ন্ত্রণ করলে যদি হঠাৎ খুব উচ্চহারে সংক্রমণ ঘটে, তখন তারা বড় বিপর্যয়ের মুখোমুখি হবে।

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com