রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:১৪ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
শেয়ারবাজারে সপ্তাহজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ইসলামী ব্যাংক ঢাকার খাল দিয়ে ব্লু নেটওয়ার্ক তৈরির পরিকল্পনা করছে সরকার জাতিসংঘে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য রাষ্ট্রকে অনন্য উচ্চতা দিয়েছে: আ স ম রব স্বৈরাচারের সহযোগী দলগুলোকে ১০ বছর রাজনীতি নিষিদ্ধ করা উচিৎ জনগণের আস্থা ফেরানোর চেষ্টা করছি: ডিএমপি কমিশনার ইউক্রেনে মেডিকেল সেন্টারে রাশিয়ার হামলা, নিহত ৬ পাবনায় পানিতে ডুবে ভাই-বোনের মৃত্যু হিজবুল্লাহ প্রধান নাসরাল্লাহকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের রিমান্ড শেষে কারাগারে সাবেক রেলমন্ত্রী সুজন দ্বিতীয় দিন একটি বলও মাঠে গড়ালো না প্রশাসনে আ. লীগের দোসরদের রেখে রাষ্ট্র সংস্কার সম্ভব নয় : রিজভী ঢাকায় একদিনে ট্রাফিক আইনে ৬৩৩ মামলা, জরিমানা ২৩ লাখ বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়া দুই ভারতীয় আটক পুলিশে ৩৬০০ কনস্টেবল নিয়োগ, আবেদন শুরু ১ অক্টোবর বিদেশি বিনিয়োগ টানতে উন্নত ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরির পরামর্শ আত্মসমর্পণ করবেন মাহমুদুর রহমান, যেতে হতে পারে কারাগারে ‘অজনা কারণে’ পেশাগত সনদ পাননি ৩ হাজারেরও বেশি নার্স চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলো ভারত দেশের উত্তরাঞ্চলে ভারী বৃষ্টি হতে পারে আজও আমার কথা বলে চাঁদা-সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করলে পুলিশে দিন

এমপি আনোয়ারুলের মরদেহ ঘিরে ‘মদের’ আসর বসায় হত্যাকারীরা

বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা:
  • আপলোড সময় শনিবার, ২৫ মে, ২০২৪
  • ১৯ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম (আনার) হত্যার ঘটনার পর সময় যত বাড়ছে প্রকাশ্যে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করেছে মামলার জট। গ্রেফতাররা প্রতিদিন স্বীকার করছেন নতুন নতুন চাঞ্চল্যকর তথ্য। এমপি আজীমকে ‘হানি ট্র্যাপে’ ফেলে ‘সঞ্জীবা গার্ডেন’ নামে আবাসিকের একটি ফ্ল্যাটে নেওয়ার পর ক্লোরোফর্ম ব্যবহার করে অচেতন করা হয়।

পরে বালিশচাপা দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে মদ ও হেরোইনের আসর বসায় খুনিরা। মরদেহের পাশে বসেই মদ ও হেরোইন সেবন করে তারা। পরে মরদেহ থেকে মাংস ও হাড় আলাদা করা হয়।- এ ঘটনায় গ্রেফতার সৈয়দ আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়ার দেওয়া তথ্যমতে এমনটাই জানিয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তেও অনেকদূর এগিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। প্রতিদিনই নতুন নতুন চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে আসছে। গোয়েন্দা তথ্যমতে, পুরো কিলিং মিশনে সবার সামনে ছিলেন সৈয়দ আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া। হত্যার পর তার হাত-পাসহ শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ টুকরো টুকরো করে আলাদা করে হত্যাকারীরা।

আমানুল্লাহ আমানকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ওই ফ্ল্যাটে আনারকে হত্যার পর উল্লাসে মেতে উঠেছিল খুনিরা। মূলত এমপিকে ‘হানি ট্র্যাপে’ ফেলে সঞ্জীবা গার্ডেনের আবাসিকের একটি ফ্ল্যাটে নেওয়ার পর ক্লোরোফর্ম ব্যবহার করে অচেতন করা হয়। পরে বালিশচাপা দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে মদ ও হেরোইনের আসর বসায় তারা।

জিজ্ঞাসাবাদে আমানুল্লাহ আমান জানিয়েছেন, মরদেহের পাশে বসেই মদ ও হেরোইন সেবন করে উন্মত্ততায় মেতে ওঠে তারা। এরপর এমপির মরদেহের মাংস ও হাড় আলাদা করা হয়। মাংস ‘কিমা’ বানিয়ে ফ্ল্যাশ করা হয় টয়লেটের কমোডে। আর হাড় ও মাথার খুলি নেওয়া হয় বাইরে। সেগুলো ফেলা হয়েছে নিউটাউন এলাকা থেকে ১০ কিলোমিটার দূরত্বের হাতিশালার বর্জ্য খালে।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট ডিবির একজন কর্মকর্তা জানান, এমপি আনোয়ারুলকে হত্যার বিস্তারিত বর্ণনা শুনে তারা নিজেরাই আঁতকে উঠেন। তার পুলিশি ক্যারিয়ারে অনেক খুনের ঘটনার বর্ণনা শুনেছেন, কিন্তু এত নৃশংস বর্ণনা কখনই শোনেননি।

লোমহর্ষক বর্ণনা আমানুল্লাহর
সৈয়দ আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়ার ভাষ্য, সিলিস্তি রহমান নামের নারীর সঙ্গে এমপির নগ্ন ছবি তোলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু অতিমাত্রায় ক্লোরোফর্ম ব্যবহার করায় গভীরঘুমে অচেতন হয়ে পড়েন আনোয়ারুল। এতে সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। পরে বালিশচাপা দিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়।

এরপর প্রথমে আনোয়ারুলের মরদেহ গুমের জন্য হাড়-মাংস আলাদা করা হয়। হাড়-মাংস ট্রলি ব্যাগের মাধ্যমে বাইরে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে মাংসগুলো ‘কিমা’ করে টয়লেটের কমোডে ফেলে ফ্ল্যাশ করা হয়। হাড় ও মাথার খুলি ট্রলিব্যাগে নিয়ে প্রথমে একটি শপিংমলের সামনে যায় সিয়াম ওরফে কসাই জিহাদ। সেখান থেকে হাতিশালার বর্জ্য খালে মরদেহ ফেলে দেওয়া হয়।

হোটেলে প্রবেশের আগে-পরে যা দেখা গেলো সিসি ক্যামেরায় আনোয়ারুল আজীমকে নিয়ে দুটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ। একটি আনোয়ারুল সঞ্জিবা গার্ডেনসের ফ্ল্যাটে প্রবেশের ফুটেজ, আরেকটি ট্রলিতে করে তার খণ্ডিত মরদেহ নিয়ে যাওয়ার।

একটি ফুটেজে দেখা যায়, ১৩ মে ভারতীয় সময় দুপুর ২টা ৫৩ মিনিটের দিকে আনোয়ারুলের সঙ্গে ওই ফ্ল্যাটে প্রবেশ করছে আমানুল্লাহ আমান ও ফয়সাল আলী সাজী ওরফে তানভীর ভূঁইয়া। হত্যাকাণ্ডের পর ফয়সাল বাংলাদেশে এলেও এখনো পলাতক। তাকে গ্রেফতারে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করছে ডিবি।

৫৮ সেকেন্ডের আরেকটি ফুটেজে দেখা যায়, হত্যাকাণ্ডের পরদিন ১৪ মে ভারতীয় সময় বিকেল ৫টা ১১ মিনিটে সৈয়দ আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া ও সিয়াম ওরফে কসাই জিহাদ একটি পেস্ট কালারের ট্রলিব্যাগ এবং তিন থেকে চারটি পলিথিন ব্যাগে আনারের মরদেহ নিয়ে লিফটে উঠছে। ডিবির কাছে এ তথ্য স্বীকার করেছে গ্রেফতার আমানুল্লাহ। ভারতীয় পুলিশের হাতে গ্রেফতার কসাই জিহাদ।

দুইদিনেও খণ্ডিত মরদেহ পায়নি ভারতীয় পুলিশ
আমানের স্বীকারোক্তির পর আনারের মরদেহ উদ্ধারে ২৩ মে সন্ধ্যায় হাতিশালা বর্জ্য খালে তল্লাশি চালায় ভারতীয় পুলিশ। তবে অন্ধকার হওয়ায় সেদিন মরদেহ খুঁজে পায়নি পুলিশ। পরেরদিন ২৪ মে আবারও সন্ধান শুরু করে ভারতীয় পুলিশ। ডিবির দাবি, যেহেতু হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত বেশ কয়েকজন গ্রেফতার রয়েছে এবং তথ্য দিয়েছে মরদেহের সন্ধান মিলবে।

চিকিৎসার কথা বলে গেলেও সোনার অবৈধ ব্যবসার আলোচনা করতেই কলকাতায় যান আনোয়ারুলএমপি আনোয়ারুলকে হত্যার মূলপরিকল্পনায় তারই বাল্যবন্ধু এবং যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আক্তারুজ্জামান শাহীন।

শাহীনের সঙ্গে আজীমের অবৈধ সোনা ব্যবসা রয়েছে। দুবাই কেন্দ্রিক সোনার ব্যবসায় শাহীনের বিনিয়োগ রয়েছে। দুবাই থেকে আসা সোনা আজীম ভারতে বিভিন্নভাবে সরবরাহ করতেন। আনারের কলকাতার ব্যবসায়ী বন্ধু গৌতম বিশ্বাস সেই সোনার ক্রেতা ছিলেন।

সূত্রটি জানিয়েছে, কলকাতায় চিকিৎসার নাম করে আনার সেখানে গেলেও আসলে তিনি সেখানে সোনার অবৈধ ব্যবসার আলোচনা করতে যান। শাহীনের সঙ্গে তার সোনার ব্যবসা নিয়েই দ্বন্দ্ব হয়। এছাড়া আমানুল্লাহর সঙ্গেও রাজনৈতিক মতাদর্শগত পার্থক্য ছিল আনোয়ারুলের।

উভয়ই আনোয়ারুলকে কলকাতায় নিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন। হত্যার মূলপরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীন ঘটনার পর একাধিক দেশ হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে গেছেন। আনোয়ারুলের মরদেহের মতো তিনিও রয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।

বাংলা৭১নিউজ/এবি

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com