ভয়ঙ্কর মাদক আইস (ক্রিস্টাল মেথ) ও ইয়াবাসহ তিন মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৪০৭ গ্রাম আইস, দুই হাজার ৩৪০ পিস ইয়াবা ও একটি পিস্তল জব্দ করা হয়।
শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত রাজধানীর রামপুরা, ভাটারা, খিলগাঁও ও সবুজবাগ থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করা হয়। ডিএনসির ঢাকা মেট্রোর (দক্ষিণ) একটি দল এ অভিযান পরিচালনা করে।
গ্রেফতাররা হলেন- মাসওয়া আকবর খান সায়েম (৩৫), তরঙ্গ যোসেফ কস্তা (৩০) ও মো. শিপন (৩৫)।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) বলছে, মাসওয়া আকবর খান সায়েম মূলত একজন পেশাদার ইয়াবা কারবারি। তিনি কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে কৌশলে ইয়াবার চালান আনতেন। সম্প্রতি তিনি ইয়াবার পাশাপাশি আইসের কারবারে জড়িয়ে পড়েন। এ কাজে তিনি আলাদা একটি চক্র গড়ে তোলেন।
রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএনসি ঢাকা মেট্রো (দক্ষিণ) কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. মাসুদ হোসেন। রাজধানীর গেন্ডারিয়ায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
মো. মাসুদ হোসেন বলেন, সম্প্রতি তথ্য আসে ইয়াবার পাশাপাশি আইসকে ব্যবসা হিসেবে পরিচালনায় নতুন চক্র কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ওই তথ্যের ভিত্তিতে ডিএনসির ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক ফজলুর রহমানের সার্বিক নির্দেশনায় একটি অপারেশনাল টিম ডিএনসির ঢাকা মেট্রোর (দক্ষিণ) একটি দল কাজ শুরু করে। এর অংশ হিসেবে শনিবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত রাজধানীর রামপুরা, ভাটারা, খিলগাঁও ও সবুজবাগ থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ওই টিম।
তরঙ্গ যোসেফ কস্তা ও মো. শিপন
অভিযানে প্রথমে রামপুরা থানাধীন মৌলভীরটেক এলাকা থেকে ৩০ পিস ইয়াবাসহ মো. শিপনকে গ্রেফতার করা হয়। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভাটারা থানাধীন জোয়ার সাহারা এলাকা থেকে ১১০ পিস ইয়াবা এবং দুই গ্রাম আইসসহ (ক্রিস্টাল মেথ) তরঙ্গ যোসেফ কস্তাকে গ্রেফতার করা হয়।
তাকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে টেকনাফভিত্তিক একটি আইস (ক্রিস্টাল মেথ) সিন্ডিকেটের সন্ধান পাওয়া যায়। এই সিন্ডিকেটের মূলহোতাকে গ্রেফতারে ভাটারা, খিলগাঁও এবং সবুজবাগ থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়।
তথ্য-প্রযুক্তির সাহায্যে খিলগাঁও থানার গোড়ান এলাকার একটি ভবনের দ্বিতীয় তলা থেকে ৪০৫ গ্রাম আইস (ক্রিস্টাল মেথ), দুই হাজার ২০০ পিস ইয়াবা এবং একটি পিস্তলসহ (৭.৬২ বোর) মাসওয়া আকবর খান সায়েমকে গ্রেফতার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে সায়েম জানান, টেকনাফের ফয়েজ নামের এক মাদক কারবারির কাছ থেকে তিনি নিজেই ওই মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে এনেছেন।
ডিএনসি ঢাকা মেট্রো (দক্ষিণ) কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সুব্রত সরকার শুভ বলেন, সায়েম পেশাদার ইয়াবা কারবারি। তিনি কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে কৌশলে ইয়াবার চালান আনতেন। ইয়াবার চালান আনার সুবাদে আইস চক্রের সঙ্গে তার সখ্যতা গড়ে ওঠে। সম্প্রতি তিনি ইয়াবার পাশাপাশি আইস ব্যবসাকে টার্গেট করেন। এজন্য একটি আলাদা চক্র গড়ে তোলেন। সাবধানতা অবলম্বনের জন্য তিনি নিজেই আইসের চালান আনতে ছদ্মবেশে টেকনাফে যেতেন।
তার সঙ্গে আর কারা কারা জড়িত সেটি জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। পাশাপাশি টেকনাফ ও কক্সবাজার কেন্দ্রিক আইস ও ইয়াবা কারবারিদের বেশ কয়েকজনের নাম বলেছেন সায়েম। সেগুলো যাচাই-বাছাই করে শনাক্ত করে গ্রেফতারে অভিযান পরিচালনা করা হবে বলেও জানান ডিএনসির এই কর্মকর্তা।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ