শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৪:৪১ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
মার্টিনেজের নৈপুণ্যে ইকুয়েডরকে হারিয়ে সেমিতে আর্জেন্টিনা প্রধানমন্ত্রীর আগমনে পদ্মা পাড়ে উৎসবের আমেজ সকালে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ৫ ইরানে দ্বিতীয় দফার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আজ যুক্তরাজ্যে নির্বাচনে টানা চতুর্থবার জিতলেন টিউলিপ সিদ্দিক এসসিও-র শীর্ষ সম্মেলনে নরেন্দ্র মোদী কেন গেলেন না? ব্রিটেনের নির্বাচন: লেবার পার্টির বিশাল জয়, সুনাকের পরাজয় প্রধানমন্ত্রীর সফরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় উত্তীর্ণ হবে ৬ ঘণ্টা পর শাহবাগ ছাড়লেন শিক্ষার্থীরা, নতুন কর্মসূচি ঘোষণা যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ৩৪ প্রার্থী শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক পর্ষদের ৩৮১তম সভা অনুষ্ঠিত রাজধানীতে ৯ কোটি টাকার খাসজমি উদ্ধার কাস্টমস কমিশনার এনামুলের ৯ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ ফেনীতে বেড়িবাঁধের ১০ স্থানে ভাঙন, ৪৬ গ্রাম প্লাবিত জুয়েলারি মেশিনারিজ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করলেন বসুন্ধরা চেয়ারম্যান বান্দরবানে বেনজীরের সম্পত্তি জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে খালেদার মুক্তি আন্দোলনে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে পারেনি বিএনপি ভাতিজির বিয়েতে যাচ্ছিলেন এসআই, রাস্তায় ফেলে কোপাল দুর্বৃত্তরা কোটা আন্দোলনের কারণে রাজধানীজুড়ে তীব্র যানজট বিএনপি-জামায়াত বৃক্ষ ধ্বংস করে আর আওয়ামী লীগ রক্ষা করে : নিখিল

ইসলামে বর্গাচাষের বিধান ও শর্তাবলি

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক:
  • আপলোড সময় বৃহস্পতিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২২
  • ২২ বার পড়া হয়েছে

মানুষের জীবিকানির্বাহে কৃষির গুরুত্ব অপরিসীম। জীবনে বেঁচে থাকার জন্য আমাদের এসব কসরত করতে হয়। আর যত পেশা আছে, এর মধ্যে চাষাবাদ অন্যতম। এর মধ্যে আছে মহান আল্লাহর নিদর্শন।

কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা যে বীজ বপন করো, সে সম্পর্কে ভেবে দেখেছ কি? তোমরা তাকে উৎপন্ন করো, না আমি উৎপন্নকারী? আমি ইচ্ছা করলে তা খড়কুটায় পরিণত করে দিতে পারি, ফলে তোমরা হতবুদ্ধি হয়ে পড়বে। ’ (সুরা : ওয়াকিয়া, আয়াত : ৬৩-৬৫)

একজনের জমিতে অন্যজনের শ্রম বিনিয়োগের মাধ্যমে উৎপাদিত ফসল দুজনের মধ্যে নির্ধারিত হারে যে বণ্টন করা হয়, তাকে বর্গাচাষ বলা হয়। ইসলামে বর্গাচাষের ব্যাপারে উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। এর মাধ্যমে উভয়ের প্রয়োজন পূরণ হয়। কেননা এমন বহু মানুষ রয়েছে, যাদের অনেক ফসলি জমি রয়েছে; কিন্তু সে চাষাবাদ করতে জানে না।

অথবা সে এ ব্যাপারে অক্ষম। আবার অনেক এমন মানুষ রয়েছে যাদের চাষাবাদের দক্ষতা রয়েছে; কিন্তু তাদের কোনো জমিজমা নেই। তাই এ ক্ষেত্রে একজনের জমি আরেকজনের শ্রমের মাধ্যমেই ফসল উৎপাদন সম্ভব, যার দ্বারা উভয়ে লাভবান হবে। সে জন্য ইসলাম বর্গা চাষের অনুমোদন দিয়েছে। বরং জমিকে এভাবেই খালি রেখে দিতে নিরুৎসাহিত করেছে।

জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যার কাছে জমি আছে, সেটি তার চাষাবাদ করা উচিত। যদি সে নিজে তা না করে তবে যেন তার কোনো ভাইকে চাষাবাদ করতে প্রদান করে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৩৮০৯)

রাসুল (সা.) স্বয়ং বর্গাচাষ চুক্তি করেছেন। ইবনে ওমার (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) খায়বারের অধিবাসীদের এ শর্তে চাষাবাদ করতে দিয়েছিলেন যে উৎপন্ন ফল অথবা ফসলের অর্ধেক তারা পাবে। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ৩৪০৮)

বর্গাচাষ বৈধ

বর্গাচাষ বৈধতার ব্যাপারে ইমামদের মাঝে দ্বিমত রয়েছে। তবে হানাফি মাজহাবের বিশুদ্ধ মত অনুযায়ী বর্গাচাষ বা ভাড়ায় চাষাবাদ করা বৈধ। আবু জাফর (রা.) হতে বর্ণনা করেন, মদিনায় মুহাজিরদের এমন কোনো পরিবার ছিল না, যারা এক-তৃতীয়াংশ কিংবা এক-চতুর্থাংশ ফসলের শর্তে ভাগে চাষ করতেন না। ওমর (রা.) লোকদের সঙ্গে এ শর্তে জমি বর্গা দিয়েছেন যে ওমর (রা.) বীজ দিলে তিনি ফসলের অর্ধেক পাবেন।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) খায়বারবাসীদের উৎপাদিত ফল বা ফসলের অর্ধেক ভাগের শর্তে জমি বর্গা দিয়েছিলেন। তিনি নিজের সহধর্মিণীদের এক ওসক (বিশেষ পরিমাণ) দিতেন। এর মধ্যে ৮০ ওসক খুরমা ও ২০ ওসক যব। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৩২৮)

যারা বর্গাচাষকে জায়েজ বলেন, তাদের মতে বর্গাচাষের বিশুদ্ধতার জন্য নিম্নোক্ত শর্ত রয়েছে—এক. জমি চাষাবাদোপযোগী হওয়া। যদি জমি অনুর্বর হয় কিংবা এত নোনা যে সেখানে ফসল ফলানো সম্ভব নয়, তাহলে সে ক্ষেত্রে বর্গা চুক্তি শুদ্ধ হবে না। কেননা এর দ্বারা উদ্দেশ্য হাসিল হবে না।

দুই. ভূমি মালিক এবং চাষি উভয়ই চুক্তি সম্পাদন করার যোগ্য হতে হবে। সুতরাং পাগল, জ্ঞানহীন ও অবুঝ শিশুর সঙ্গে চুক্তি শুদ্ধ হবে না। এ শর্তটি বর্গাচাষের সঙ্গে খাস নয়, যেকোনো চুক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কেননা চুক্তি বিষয়টি সম্পাদনকারী যোগ্য না হলে কোনো চুক্তিই সহিহ হবে না।

তিন. বর্গাচাষের সময়সীমা উল্লেখ থাকতে হবে। কেননা এটি ভূমির মুনাফা অথবা চাষির মুনাফার ওপর একটি চুক্তি। আর সময়সীমা হলো সেই মুনাফার মাপকাঠি, যার দ্বারা নির্ধারিত মুনাফা সম্পর্কে অবগত হওয়া যায়।

চার. বীজ কে দেবে তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে হবে। বীজ কী হবে। তা কোন জাতের হবে। তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। কারণ বীজের নানাবিধ প্রকার রয়েছে। নিম্নমানের বীজের ফসল একরম আর উন্নত বীজের ফসল ভিন্ন হবে তা অনুমেয়। সে জন্য পূর্ব থেকেই তা উভয়ের মধ্যে স্পষ্ট হতে হবে, যাতে পরবর্ততী সময়ে কোনোরূপ ঝগড়া না হয়।

পাঁচ. যার পক্ষ থেকে বীজ সরবরাহ করা হবে না, তার অংশ কী পরিমাণ হবে, তা স্পষ্টভাবে বর্ণনা করতে হবে। কেননা সে তো শর্তের কারণেই তার অংশের হকদার হয়ে থাকে। তাই তার অংশটি জানা থাকা আবশ্যক।

ছয়. চাষির জন্য ভূমি মালিক কর্তৃক ভূমি সম্পূর্ণরূপে অবমুক্ত করে দেওয়া। তার পক্ষ থেকে কোনোরূপ প্রতিবন্ধকতা না থাকা। সুুতরাং যদি ভূমিতে মালিকের কর্মের শর্ত আরোপ করা হয়, তাহলে ভূমি অবমুক্ত না হওয়ার কারণে চুক্তি ফাসিদ হয়ে যাবে।

সাত. ফসল উৎপাদনের পর উৎপাদিত ফসলে উভয়ের শরিকানা থাকতে হবে। কেননা বর্গাচাষ হচ্ছে একটি অংশীদারি চুক্তি। কাজেই যে শর্তের কারণে ওই অংশীদারত্ব শেষ হয়ে যায়, তা অবশ্যই চুক্তিকে বিনষ্ট করে দেবে। যদি ভূমির মালিক ও চাষি উভয়ে মিলে কোনো একজনের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণের শর্তে বর্গাচাষ চুক্তি করে, তবে তা শুদ্ধ হবে না। কারণ এভাবে করাতে দুজনের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত হয় না। কেননা হতে পারে সে বছর জমিতে ওই পরিমাণ ফসলই উৎপন্ন হয়েছে, যা একজনের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।   

সর্বোপরি উভয়পক্ষ সততার সঙ্গে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করবে। এ  ক্ষেত্রে কেউ এমন কোনো কাজ করবে না, যাতে তার পরিশ্রমের ফল ভোগ করতে না পারে।

(তথ্যকণিকা : হিদায়া, বাদায়েউস সানায়া, আল-ফিকহুল ইসলামী ওয়া আদিল্লাতুহু)

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com