সরকারি হিসাবে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রথমবারের মতো ছয় কোটি ছাড়াল। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সর্বশেষ প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ কোটি ১২ লাখ ৮৮ হাজার। তবে এ সময়ে কমেছে মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা।
গত ফেব্রুয়ারিতে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ৫ কোটি ৮৩ লাখ ১৭ হাজার। অর্থাৎ এক মাসে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বেড়েছে প্রায় ৩০ লাখ। তবে ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চে দেশে মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা আরও দুই লাখ কমে ১৩ কোটি ৮ লাখ হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে এ সংখ্যা ছিল ১৩ কোটি ১০ লাখ। এ সময়ে গ্রামীণফোনের গ্রাহকসংখ্যা এক লাখ বাড়লেও বাকি সব অপারেটরের গ্রাহক কমায় সার্বিকভাবে ব্যবহারকারীর সংখ্যা কমেছে।
সক্রিয় ইন্টারনেট ব্যবহারকারী নির্ধারণে বিটিআরসির নিয়ম হলো—৯০ দিন বা তিন মাসের মধ্যে একজন ব্যক্তি একবার ব্যবহার করলেই তিনি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হিসেবে চিহ্নিত হবেন। তবে গত জানুয়ারিতে প্রকাশিত ‘ডিজিটাল ডিভিডেন্ডস’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারী নিয়ে সরকারি এ হিসাবের সঙ্গে দ্বিমত করে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে প্রকৃত ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১ কোটি ২০ লাখ, যা বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার মাত্র সাড়ে ৭ শতাংশ। যদিও বিশ্বব্যাংকের এ প্রতিবেদনকে প্রত্যাখ্যান করেছে সরকার।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সাবেক সভাপতি ফাহিম মাশরুর প্রথম আলোকে বলেন, ‘দেশে নিয়মিত ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা এখনো দেড় কোটির বেশি হয়নি। ঢাকার বাইরে যে ইন্টারনেট, সেটি পুরোপুরি মোবাইল ফোন অপারেটরনির্ভর এবং এই ইন্টারনেট প্যাকেজের দাম এত বেশি, যা নিম্নমধ্যবিত্ত লোকের ক্রয়সীমার বাইরে।’
বিটিআরসির হিসাব অনুযায়ী, ২০১৫ সালের মার্চে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ৪ কোটি ৪৪ লাখ ৬২ হাজার। সে হিসেবে এক বছরে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে ১ কোটি ৬৮ লাখ। মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ৯৬ শতাংশ বা ৫ কোটি ৮০ লাখ মানুষ বর্তমানে মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন।