গাজীপুরে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে মাওলানা সাদ ও জুবায়েরপন্থিদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের দুই মুসল্লি নিহত ও আরও কিছু মুসল্লি আহত হয়েছেন। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) ভোরে ইজতেমা ময়দানের বিদেশি নিবাসের ছাউনিতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
তিনি সব ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের শান্ত ও ধৈর্য ধারণ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা না করে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বানও জানান তিনি।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে তিনি এই আহ্বান জানান।
ফেসবুক পোস্টে হাসনাত লেখেন, ‘সাদপন্থি সমর্থিত সচেতন ছাত্র সমাজের দেওয়া প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি এবং সকাল ১০টার মধ্যে মাওলানা সাদ সাহেবের ভিসার জন্য বাসভবন ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণার কারণে আমরা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে সাদপন্থিদের সঙ্গে আলোচনার জন্য টঙ্গী যাই।
সেখানে আলোচনা শেষে তারা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন এবং মাওলানা সাদ সাহেবের ভিসা জটিলতা নিরসনে পুনরায় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তবে তারা টঙ্গী ময়দানে জোড় ইজতেমার শর্ত দেন এবং ২৫ তারিখ মাঠ ছাড়ার প্রতিশ্রুতি দেন। টঙ্গীতে এই তিনটি বিষয়ে আলোচনা হয়।’
তিনি লেখেন, ‘আলোচনায় আমরা এটাও স্পষ্ট করি এগুলো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নয়। এ বিষয়ে কাকরাইলে মাওলানা জুবায়ের সাহেব এবং ওলামায়ে কেরামের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সে পর্যন্ত ধৈর্য ধরতে হবে। এই উদ্দেশ্যে রাত ২টায় কাকরাইলে আলোচনার জন্য যাই।
সেখানে মাওলানা মাহফুজুল হক ও মাওলানা মামুনুল হকসহ অন্যান্য আলেমরা উপস্থিত ছিল। সেখানে পৌঁছানোর পর সাদপন্থিদের একজন মুফতি সাহেবের একটি পোস্ট আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়, যেখানে খণ্ডিত ভিডিও প্রচার করে বলা হয়েছে আমরা নাকি তাদের জোড় ইজতেমা করার অনুমতি দিয়েছি। এটি আমাদের সিদ্ধান্তের সম্পূর্ণ বিপরীত।’
হাসনাত জানান, ‘কাকরাইলে আলোচনাকালীন সেখানে আলেমদের উপস্থিতিতে আমরা তাদেরকে স্পষ্টভাবে জানিয়েছি যে, আমরা কোনো কর্তৃপক্ষ নই। আমরা আলোচনা করে কাকরাইল থেকে টঙ্গী গিয়ে কথা বলবো এবং এরপর পারস্পরিক মতামতের ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
আলোচনার মাঝেও সাদপন্থি ঐ মুফতি সাহেবকে ফোন দিয়ে বলেছি, আপনারা যদি সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ার আগে ইজতেমার ময়দানে প্রবেশ করেন, তাহলে আমাদের সঙ্গে আপনাদের সম্পর্ক থাকবে না। আমরা কাকরাইলে আলেমদের উপস্থিতিতে সাদপন্থিদের আরও বলেছি, কোনোভাবেই আপনারা ময়দানে প্রবেশ করবেন না এবং আমাদের নিয়ে যে ভিডিও প্রচার করেছেন, তা মুছে ফেলবেন।’
হাসনাত পোস্টে আরও লেখেন, ‘কিন্তু এর আগেই এই নির্মম ঘটনা ঘটেছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। সব ধর্মপ্রাণ মুসলমানদেরকে শান্ত ও ধৈর্য ধারণ করার জন্য অনুরোধ করছি।
কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা না করে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য আহ্বান করছি। তাবলিগ একটি দ্বিনি ও ধর্মীয় ইস্যু। ফলে আমরা মনে করি, তাবলিগসহ ধর্মীয় বিষয়াদি উলামায়ে কেরামের মাধ্যমেই সুরাহা ও মীমাংসিত হবে।’
হাসনাত আব্দুল্লাহ লেখেন, ‘তবে সমগ্র বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা রক্ষার দায়ভার আমাদের প্রত্যেকটি নাগরিকের। দেশের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে শান্তিপূর্ণ সমাধান ও অবস্থানের জন্য আমরা সবাই আন্তরিকভাবে কাজ করে যাবো।’
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ