কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য হত্যা মামলায় আদালত তিনজনকে ফাঁসি ও একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ রায় দেন। একই সঙ্গে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে ১ লাখ টাকা আর্থিক জরিমানার আদেশ দিয়েছেন বিচারক।
রায় ঘোষণার আগে একজন অভিযুক্ত মৃত্যুবরণ করায় মামলা থেকে তাকে আগেই অব্যাহতি দেয় আদালত। রায় ঘোষণার সময় অন্য আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-কটিয়াদী উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের মধ্য ভাট্টা গ্রামের মৃত সিন্দু ভূঁইয়ার ছেলে মো. ফোরকান ভূঁইয়া (৪৮), জমশেদ ভূঁইয়ার ছেলে মো. শাহেদ ভূঁইয়া (৩৪) ও মৃত ধলু ভূঁইয়ার ছেলে মো. এ্যাংগু ভূঁইয়া (৫৮)। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন-একই এলাকার জমশেদ ভূঁইয়ার ছেলে মো. মোস্তফা ভূঁইয়া (৪৬)।
রায় ঘোষণার আগে অভিযুক্ত জমশেদ ভূঁইয়া মৃত্যুবরণ করায় মামলা থেকে আগেই তাকে অব্যাহতি দেয় আদালত।
অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (ভারপ্রাপ্ত) জগেশ্বর রায় বলেন, মামলার রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। এ রায়ের মাধ্যমে আবারও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ২০১৩ সালের ২৯ আগস্ট রাত ৯টার দিকে কটিয়াদী উপজেলার করগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য রফিকুল ইসলাম ওরফে রতন ভূঁইয়া ভাট্টা নতুন বাজার থেকে বাজার করে প্রতিবেশী লোকজনের সঙ্গে গল্প করে বাড়িতে ফিরছিলেন। বাড়ির উত্তর পাশে কাঁচা রাস্তায় পৌঁছামাত্রই ফোরকান ভূঁইয়ার লোকজন দা, লাঠি, ছুরি, চাপাতি ও লোহার রড ইত্যাদি নিয়ে রতনের পথরোধ করে। ফোরকান ভূঁইয়ার হুকুমে তারা রতনের উপর অতর্কিত হামলা করে।
এতে রতন মাটিতে পড়ে গেলেও তারা লোহার রড দিয়ে পিটাতে থাকে। এতে রতনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোলা জখম হয়। রতন ভূঁইয়াকে উদ্ধার করে প্রথমে ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থা অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হামলার ছয়দিন পর ৫ সেপ্টেম্বর তার মৃত্যু হয়।
নিহত রতন ভূঁইয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার সময় তার চাচতো ভাই আনার ভূঁইয়া ৩০ আগস্ট কটিয়াদী মডেল থানায় এ হামলার ঘটনায় একটি মামলা করেন। পরে রতন ভূঁইয়া মারা গেলে সেই মামলা হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়। তদন্ত শেষে কটিয়াদী থানার তৎকালীন এসআই রাখাল দেবনাথ ২০১৪ সালের ৮ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত মঙ্গলবার এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ