প্রকৃতি ও সংস্কৃতির ঐতিহাসিক উপাদানের স্বীকৃতি, সুরক্ষা ও সংরক্ষণের জন্য জাতিসংঘ ঘোষণা করেছে বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকা। ১৯৭২ সালে পাশ করা কনভেনশন অনুযায়ী জাতিসংঘের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞানবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো এ পর্যন্ত সম্মানজনক এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে বিশ্ব ঐতিহ্যের ১০৭৩ টি নিদর্শন।
১৯০৮ সালে ইতালির আইভেরা শহরে প্রতিষ্ঠিত হয় বিজ্ঞানের যুগান্তকারী আবিষ্কার অলিভেত্তি টাইপরাইটারের কারখানা।
শহরটিতে একই সাথে প্রতিষ্ঠিত হয় কারখানার কর্মীদের নগরজীবন। তৎকালীন সময়ে কর্মচারিদের বসতি, স্কুল, আর রেস্তোরার সাথে সাথে তৈরী হয় আধুনিক ধারার জীবনযাত্রা। এবছর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ মনোনয়ন পেয়েছে ঐতিহাসিক প্রতিষ্ঠানটি।
অলিভেত্তি হিসটোরিকাল আর্কায়িভ এস্যোসিয়েশনের প্রধান আর্কায়িভ সংরক্ষক এনরিকো বানদেরিয়া বলেন, অলিভেত্তির সাফল্য কেবল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর অর্থনৈতিক উন্নতিতেই শক্তি যোগায়নি, বরং পুরো এলাকার জীবনযাত্রায় এনে দিয়েছিলো আধুনিকতার ছোঁয়া। আইভেরার সামাজিক, অর্থনৈতিক, মানব শক্তি রূপান্তরে বড় ধরনের অবদান রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির।
মনোনয়নের তালিকায় আরো রয়েছে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর উত্তর ইউরোপে নির্মিত অসংখ্য স্থাপনা ও ভাস্কর্য। যুদ্ধের গল্পগুলো নিয়ে ফ্রান্সের মনুমেন্ট টু দ্য মিসিং থেকে শুরু করে বেলজিয়ামের টাইন কট সমাধিক্ষেত্র পর্যন্ত এসব স্থাপনার দেখা মেলে। সব হারানো পরিবারগুলোর কাছে স্মৃতিচিহ্ন হয়ে ওঠা সমাধি ও স্থাপনাগুলো যুগ যুগ ধরে সান্তনা যোগাচ্ছে শোক স্তব্ধ মানুষের মনে।
বেলজিয়াম ফ্লেমিশ মিনিস্টার-প্রেসিডেন্ট গ্রিট বোর্জিয়স বলেন, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সমাধিক্ষেত্র ও ভাস্কর্যগুলো আমাদেরকে বিদ্ধংসী যুদ্ধ বর্জন করে শান্তি বরন করে নিতে শেখায়।
এই হল মধ্যযুগের ভার্সাই হিসেবে খ্যাত দশম শতকের খিলাফত শহর মেদিনা আজাহ-রা। স্পেনের আইবেরিয়ান উপদ্বীপ থেকে মরোক্কোর উত্তর সীমান্তে অবস্থিত এ খিলাফত শহরো স্থান পেয়েছে বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকার মনোনয়নে। খনন করে প্রায় আট শতাব্দী ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকা শহরটির মাত্র ১০ ভাগ আবিষ্কার হয়েছে। এখনো ভূগর্ভে লুকিয়ে আছে ইসলামের স্বর্ণযুগ ও মুসলিম সংস্কৃতির গৌরবের ইতিহাসে সমৃদ্ধ প্রাচীন শহরটির সব অজানা রহস্য।
ঐতিহাসিক স্থান মেদিনা আজাহারা পরিচালক আলবার্তো মন্তেজো বলেন, বাগদাদ ও মরোক্কোর মত খিলাফত শহরগুলোর জনারণ্য থেকে প্রাচীন মুসলিম সভ্যতার ইতিহাস পুনরুদ্ধার করা প্রায় অসম্ভব কাজ। তবে মেদিনা আজাহ-রা আট শতাব্দী ধরে অপরিবর্তীতভাবে স্বর্ণযুগের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে।
২৪ জুন থেকে ৪ জুলাই পর্যন্ত ইউনেস্কোর ৪২ তম আসরে চূড়ান্ত করা হবে তালিকায় এবছরের অন্তর্ভুক্তি। এবার প্রাথমিক মনোনয়নে রয়েছে ২৮ টি নিদর্শন।