একদিন পিছিয়ে আগামী শুক্রবার (২৮ জুলাই) রাজধানীর নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ কর্মসূচির যে সিদ্ধান্ত বিএনপি নিয়েছে, তাতে সরকার বা সরকারের কোনো প্রতিষ্ঠান বাধা সৃষ্টি করবে না বলে আশা প্রকাশ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, আমরা আশা করি, দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে চলমান গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের অংশ হিসেবে আয়োজিত এ মহাসমাবেশ অনুষ্ঠানে সরকার বা সরকারের কোনো প্রতিষ্ঠান বাধা দেবে না। আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে যে কোনো গণতান্ত্রিক কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত করার যে কোনো অপচেষ্টা দেশবাসী প্রকৃতপক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে বাধা সৃষ্টি হিসেবেই দেখবে। এ ধরনের যে কোনো অপচেষ্টায় নিয়োজিতদের গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা সৃষ্টিকারী হিসেবেই গণ্য করবে।
বুধবার (২৬ জুলাই) রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলন থেকে ঢাকায় ২৭ জুলাইয়ের মহাসমাবেশের তারিখ একদিন পিছিয়ে ২৮ জুলাই করার সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। একই সঙ্গে জানানো হয়, আগামী শুক্রবার (২৮ জুলাই) বাদ জুমা নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশ করবে বিএনপি।
নয়াপল্টনে মহাসমাবেশের ব্যাপারে পুলিশের অনুমতি নেওয়া হয়েছে কি না- জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা অনুমতির কথা বলিনি। এসময় পাশে বসা দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আমরা অবহিত করেছি।
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলসহ দেশের সব গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দল আগামীকাল ২৭ জুলাই রাজধানী ঢাকায় শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশসহ নানা কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে। আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে ২৭ জুলাই নয়াপল্টন বা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে গত ২৪ জুলাই ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কর্তৃপক্ষকে চিঠির মাধ্যমে অবহিত করি। কিন্তু পুলিশ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশের ক্ষেত্রে উচ্চ আদালতের আপত্তি এবং কর্মদিবসে নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠানে জনদুর্ভোগের অজুহাত দেখায়।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এর আগে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এবং কর্মদিবসে নয়াপল্টনে অসংখ্যবার সমাবেশ-মহাসমাবেশ অনুষ্ঠানের দৃষ্টান্ত রয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপি বরাবরই শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাসী। এ কারণে সরকার ও সরকারদলীয় বিভিন্ন বাহিনীর নানা উসকানি এমনকি গত প্রায় এক বছরে ২০ জন নেতাকর্মীর হত্যা ও অসংখ্য নেতাকর্মী নির্যাতিত হওয়ার পরও সীমাহীন ধৈর্য্য ও সহিষ্ণুতার পরিচয় দিয়েছে। এমনকি এই মহাসমাবেশ ঘিরেও ঢাকাসহ সারাদেশে আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে ও হচ্ছে। ঢাকার বিভিন্ন হোটেল এবং সারাদেশে নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে পুলিশি তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার চলমান আন্দোলনকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে ২৭ জুলাই বৃহস্পতিবারের পরিবর্তে আগামী ২৮ জুলাই শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে দুপুর ২টায় নয়াপল্টনে পূর্বঘোষিত মহাসমাবেশ অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিচ্ছে।
এসময় তিনি শান্তিপূর্ণভাবে আগামী ২৮ জুলাইয়ের মহাসমাবেশ সফল করতে দলীয় নেতাকর্মী ও সর্বস্তরের জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও মির্জা আব্বাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলা৭১নিউজ/এসএকে