শেষ পর্যন্ত ছেলের শঙ্কাই সত্যি হলো। আড়াই দিন ‘জমে’ মানুষের টানাটানিতে শেষমেশ হার মানতে বাধ্য হলো ১২ বছরের কিশোর মাহফুজকে। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় সোমবার রাতে গ্যাস লিকেজ থেকে লাগা আগুনের ঘটনায় ৮০ শতাংশ পুড়ে যায় এই বালকের ছোট শরীর। সেদিন রাত থেকেই তাকে রাখা হয় শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে যে দু-একবার সে তার মার সঙ্গে কথা বলতে পেরেছে প্রতিবারই সে মাকে বলেছে- ‘আমি হয়তো আর বাঁচব না মা’।
বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) দুপুরে বার্ন ইনস্টিটিউটের করিডোরে নাম শোকের ছায়া। মাহফুজের মা ঢুকতে কেঁদে কেঁদে বলছিলেন ‘বাবা তোর কথাই সত্যি হলো, তোকে আমরা বাঁচাতে পারলাম না।’ এ সময় সেখানে উপস্থিত সবাই বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
আর্থিক সংকটের কারণে মাহফুজের বাবা-মা তাদের একমাত্র সন্তানকে বোনের বাসায় পড়াশোনার পাশাপাশি গার্মেন্টস এ কাজ করতে পাঠিয়েছিলেন। সোমবার রাতে সেই বাসায় ঘুমানোর আগে কয়েল ধরাতে গেলে চুলার সিলিন্ডারের গ্যাসের লিকেজের কারণে জমে থাকা গ্যাসে আগুন লেগে মুহূর্তেই ঘটে বিস্ফোরণ।
গৃহকর্তা মিশাল তার স্ত্রী মিতা এবং দেড় বছরের শিশু মিনহাজসহ মোট ৭ জন দগ্ধ হয়। একই ঘটনায় দগ্ধ হয় ওই বাসায় থাকা মাহফুজ (১২), সাব্বিরও (১৪)।
বুধবার বাসার গৃহকর্তা মিশাল মারা যান। এ নিয়ে ওই ঘটনায় মারা গেলেন ২ জন। বাকি ৪ জনেরও অবস্থাও আশঙ্কাজনক। তারা সবাই ভর্তি আছেন শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে।
বার্ণ ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন পার্থ শংকর পালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, দগ্ধদের বাঁচানোর জন্য সব রকমের চেষ্টাই করছেন তারা। কিন্তু বেশির ভাগেরই শ্বাসনালি পুড়ে যাওয়ায় কেউই শঙ্কামুক্ত নন একই পরিবারের এই সদস্যরা।
বাংলা৭১নিউজ/এবি